১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:৩২

বেনামি ঋণের টাকায় ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়

বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কিনেছেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী। ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে তনুজ করপোরেশন, জাহান ট্রেডার্স এবং এস-টুআরএস করপোরেশন নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণের টাকায় চার পরিচালকের কাছ থেকে শেয়ার কেনেন তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এক তদন্তে দেখা গেছে, ওই তিন কোম্পানির ঋণের সুবিধাভোগী তারা দু'জন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা এসব কোম্পানির ঋণ হিসাব থেকে নগদে টাকা তুলে নিয়েছেন। আর শেয়ার কিনতে একাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করেন তারা।

ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক তদন্তে জালিয়াতির এ তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। তদন্তে আরও কিছু গুরুতর অনিয়ম পেয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। যেমন- বাবুল চিশতীর নামে প্রতিষ্ঠিত এক মসজিদের হিসাবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যাংকের ব্যবসা উন্নয়ন খাত থেকে চিশতীর ড্রাইভার ও এপিএসকে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩৪৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন করেছে গুলশান শাখা। ঋণের অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত না করে বিভিন্ন গ্রাহককে নগদে টাকা তোলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে আরও দেখা যায়, এডিএম ডাইং অ্যান্ড ওয়াশিং এবং সাবাবা অ্যাপারেলস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে দেওয়া ৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী আসলে বাবুল চিশতীর ভাই শামীম চিশতী। তিনি ওয়েলটেক্স গ্রুপের এমডি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের আলোকে এরই মধ্যে তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক জজ গোমেজকে প্রধান কার্যালয়ে শাস্তিমূলক বদলি করেছে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। নতুন শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাব্বির মোহাম্মদ সায়েমকে। আর পুরো পরিদর্শন প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেও তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক জজ গোমেজের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সার্বিক

বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু সমকালকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে তারা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।

ফারমার্স ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ওপর পরিচালিত অন্য এক তদন্তে তনুজ করপোরেশন থেকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতীর টাকা নেওয়ার তথ্য পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার 'ঋণের কমিশন নিয়েছেন মহীউদ্দীন আলমগীর' শিরোনামে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সোমবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ অনিয়মের তথ্য অস্বীকার করে সাবেক এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তার সময়ে কোনো অনুমোদনবহির্ভূত ঋণ দেওয়া হয়নি। কর্মচারী নিয়োগেও কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও বাবুল চিশতীর বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে তার ব্যক্তিগত সহকারী আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সমকালকে বলেন, 'স্যার দেশের বাইরে আছেন। সোমবার অস্ট্রেলিয়া গেছেন।'

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ সমকালকে বলেন, সংসদে দাঁড়িয়ে মহীউদ্দীন খান আলমগীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগগুলো দুর্নীতি সংশ্নিষ্ট, ফলে এ বিষয়ে সরাসরি দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। তারা তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা দেখে ব্যবস্থা নেবে।

তারল্য সংকট এবং বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে গত ২৭ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংক ছাড়তে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। একই দিন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীও পদত্যাগ করেন। এরপর ১৯ ডিসেম্বর একেএম শামীমকে এমডি থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিতে চলমান তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন করে মূলধন সংগ্রহের চেষ্টা করছে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

বেনামি ঋণের টাকায় চার উদ্যোক্তার শেয়ার ক্রয় :বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তনুজ করপোরেশন, জাহান ট্রেডার্স এবং এস-টু আরএস করপোরেশনের মালিকানা বিভিন্ন ব্যক্তির নামে দেখানো হলেও এসব ঋণের অধিকাংশ অর্থের প্রকৃত সুবিধাভোগী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ঋণ হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন করে এ দু'জন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক মো. আবু আলম, মো. শরিফ চৌধুরী, মোর্শেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও জাকের আহমেদের শেয়ার কেনার জন্য একাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংকটিতে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ২৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা মূল্যমানের ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার ছিল। তিনি নতুন করে আরও ১০ কোটি টাকার শেয়ার কেনেন। আর মাহবুবুল হক চিশতী কেনেন পাঁচ কোটি টাকার শেয়ার। এই শেয়ারের অনাপত্তির জন্য গত ২০ নভেম্বর তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেন। তবে ৪ ডিসেম্বর তা নাকচ করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এস-টুআরএস করপোরেশনের চারটি হিসাবের বিপরীতে ৪০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে গুলশান শাখা। এর মধ্যে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি মেয়াদি ঋণ ছাড়া অন্য ঋণের বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের কাছে কোনো তথ্য নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল যাওয়ার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে ঋণটি পরিশোধ দেখানো হলেও বাস্তবে পরিশোধ হয়নি। অপর প্রতিষ্ঠান তনুজ করপোরেশনের মেয়াদি হিসাব থেকে গত বছরের ১৯ জুলাই চলতি হিসাবে এক কোটি ২২ লাখ টাকা স্থানান্তরের পর নগদে ৪২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাকি ৮০ লাখ টাকার মধ্যে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামে ১৮ লাখ, মাহবুবুল হক চিশতীর নামে ১৫ লাখ ৫০ হাজার এবং চিশতীর পিএস জাকির হোসেনের নামে ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার পে-অর্ডার ইস্যু হয়। আর জাহান টেডার্সের মেয়াদি ঋণ হিসাব থেকে গত বছরের ১৯ মার্চ ওই প্রতিষ্ঠানের একটি চলতি হিসাবে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা স্থানান্তর হয়। তিনটি ঋণ প্রস্তাবের ওপরই মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশ রয়েছে।

শেয়ার বিক্রি করেছেন এরকম একজন উদ্যোক্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সমকালকে বলেন, পরিচালনা পর্ষদে আলোচনার ভিত্তিতে তিনি শেয়ার বিক্রি করেন। তাকে টাকা কোত্থেকে দেওয়া হয়েছে তা তিনি জানতেন না। এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদে মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও বাবুল চিশতীর এত বেশি কর্তৃত্ব ছিল যে, তাদের মতো আরও অনেকে শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

ব্যবসা উন্নয়নের টাকা পেয়েছেন ড্রাইভার-এপিএস :গুলশান শাখার 'ব্যবসা উন্নয়ন' খাত থেকে গত বছরের ১৪, ১৬ ও ২১ নভেম্বর বাবুল চিশতীর গাড়ির ড্রাইভার সাইদুল ও এপিএস জাকির হোসেনকে নগদে যথক্রমে ৫০, ৩০ ও ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরে তনুজ করপোরেশনের ঋণ হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন করে আবার তা সমন্বয় করা হয়। সংশ্নিষ্টদের ধারণা, বেনামি ঋণ, নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে এ দু'জন সবই জানতেন। যে কারণে তারা যেন কোনো কারণে এসব তথ্য ফাঁস না করেন এ জন্য তাদেরও টাকা দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।

খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন :বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিপুল পরিমাণের খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন করেছে গুলশান শাখা। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শাখার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৬৫ কোটি টাকার ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়। অথচ খেলাপি ঋণ দেখানো হয়েছে মাত্র ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। শাখার সব ঋণ মঞ্জুরি ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মসজিদের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১২ কোটি টাকার লেনদেন :বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গুলশান শাখায় 'মো. মাহবুবুল হক চিশতী (মসজিদ)' নামে একটি সঞ্চয়ি হিসাব রয়েছে। বাবুল চিশতীর নিজ এলাকা জামালপুরের পলাশতলা, দত্তের চর দক্ষিণের ঠিকানায় খোলা হিসাবটিতে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল থেকে গত ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা লেনদেন হয়। অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর উত্তোলন হয়েছে ৬ কোটি ৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা। কোনো এক সময় এ হিসাবে সর্বোচ্চ এক কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা স্থিতি ছিল। বর্তমানে আছে ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি মসজিদের হিসাবে বিপুল অঙ্কের এ লেনদেনকে অস্বাভাবিক মনে করছে তদন্ত দল।

নির্দেশ অমান্য করে ২৩৩ কোটি টাকার নতুন ঋণ :গত বছরের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংককে নতুন ঋণ বিতরণ স্থগিতের নির্দেশনা দেয়। এর পরও ২৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ঋণ দিয়েছে গুলশান শাখা। কিছু ঋণ প্রস্তাবে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মন্তব্যসহ স্বাক্ষর থাকলেও পরিচালনা পর্ষদের কোনো অনুমোদন নেই। এ শাখাকে এক হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে এক হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড়ের অল্প সময়ের মধ্যে ঋণসীমার পুরো অর্থ নগদে তুলে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রবণতা গ্রাহকের ঘোষিত উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নগদ উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে এ ক্ষেত্রে শাখা সহায়তা করেছে। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে ঋণ হিসাব খোলার আগেই নতুন ঋণ বিতরণ এবং ঋণ প্রস্তাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ করা ঋণ নগদে তুলে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত হয়নি :পরিশোধিত মূলধন চারশ' কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে চায় ফারমার্স ব্যাংক। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ১১শ' কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা হবে। কোন প্রক্রিয়ায় এসব শেয়ার কেনা হবে, সে বিষয়ে গতকাল সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি, রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককের চেয়ারম্যান ও এমডিকে নিয়ে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৩টার পর। তবে বৈঠকে কোন প্রক্রিয়ায় শেয়ার কেনা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য শিগগিরই আরেকটি বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।

http://samakal.com/economics/article/1802664