১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:২৯

অস্বাভাবিক বাড়ছে নদীর তীর সংরক্ষণ ব্যয়

প্রতি কিলোমিটার ব্যয় প্রস্তাব ৮১.৪১ কোটি টাকা ; চলমান প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটার ব্যয় ৫৬.৪ কোটি টাকা

নদীর তীর সংরক্ষণকাজের ব্যয় নিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি চলছে। অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে পানিসম্পদ খাতে নদী তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং কাজের ব্যয়। এসব প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে খোদ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়েরই আপত্তি থাকে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সেই আপত্তি ধোপে টেকে না। এ ধরনের একটি প্রকল্পে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ ব্যয় কিলোমিটার প্রতি ২৫ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে যা অত্যধিক বলে পরিকল্পনা কমিশন থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মাঝিরচর থেকে নারিশাবাজার হয়ে মোকসেদপুর পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প প্রস্তাবে কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১০ কোটি ৫৪ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হবে ৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
পর্যালোচনায় বলা হয়, পদ্মা নদীর সাড়ে তিন কিলোমিটার বাম তীর সংরক্ষণে দোহার উপজেলার অন্য একটি অংশের প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পে ২০১৪ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী প্রতি মিটার কাজের ব্যয় পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বা কিলোমিটার প্রতি ৫৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পিইসি থেকে এই ব্যয় পুনঃপর্যালোচনা করে নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় ৩.৬ কিলোমিটার বা ৪১.৪৭ লাখ ঘনমিটার নদী ড্রেজিং করার কথা। সেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি তিন লাখ ৭৪ হাজার টাকা। একনেকের অনুশাসন অনুযায়ী, নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ৫০ শতাংশ ড্রেজিংয়ের সংস্থান রাখার কথা। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় মাত্র ৮ শতাংশ ড্রেজিংয়ের জন্য রাখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তাদের কারিগরি কমিটির সুপারিশের আলোকেই এই হার ধরা হয়েছে।

চলমান অন্য প্রকল্পে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জের একটি প্রকল্পে চার কিলোমিটার যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪১ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সেখানে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অথচ গাইবান্ধায় একই ধরনের অপর প্রকল্পে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রতি কিলোমিটার ৩৯ কোটি ৬৭ লাখ ১১ হাজার টাকা। আর ২৫ কিলোমিটার ড্রেজিং কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি টাকা যেখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হবে ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় যৌক্তিক করা এবং চলমান অন্যান্য প্রকল্পের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করার পরামর্শ দিয়েছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/293761