৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৫১

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। রায়কে ঘিরে রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। আর পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে দেয়। পরীক্ষার্থীরা জানান, গতকাল পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে যানবাহনের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গতকাল মিরপুরের কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে ঠিক সময়ে পৌঁছালেও সড়কে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে দ্বিগুণ খরচে তাদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে হয়েছে। কল্যাণপুর থেকে মিরপুর ১০ নম্বরের মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিন্নি। বাস না থাকায় কিছু পথ হেঁটে, তারপর সিএনজিতে করে তিনি এসেছেন কেন্দ্রে।
তিনি বলেন, কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না। খুব ভয় লাগছিল- পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে পারি কিনা। সকাল সাড়ে ৯টার পরে কেন্দ্রে ঢুকলে রোল নম্বর লিখে রাখে। রাস্তা ফাঁকা থাকায় আসতে বেশি সময় না লাগলেও তাদের ৩০০ টাকা গুনতে হয়েছে বলে তিন্নির মা হাফসা বেগম জানান।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী সামিহা বিনতে বশীর তার মায়ের সঙ্গে ৯টা ১০ মিনিটে কেন্দ্রে এসে পৌঁছে। হাটখোলা রোডের বাসা থেকে প্রতিদিন রিকশায় এলেও গতকাল অটোরিকশায় করে এসেছে। একই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আবু রায়হান শাফির বাবা ব্যবসায়ী মাহমুদ উল্লাহ বলেন, রিকশায় আসতে তাকে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি টাকা গুনতে হয়েছে। মগবাজার থেকে মতিঝিলে আসতে রিকশা ভাড়া চেয়েছে ১০০ টাকা। শেষে ৮০ টাকায় এসেছি। অন্যান্য দিন ৫০ টাকা নেয়। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিল অঘোষিত ছুটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল একেবারে কম। কোনো স্কুল সকাল থেকেই ছুটি দিয়ে দেয়। আবার অনেক স্কুল অঘোষিত বন্ধ ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরজমিন ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মিলে। তবে চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা লক্ষ্য করা যায়। অভিভাবকদের অন্যান্য দিনের মতো অভিভাবক ছাউনিতে বসে থাকতে দেখা যায়। পুরান ঢাকার কে এল জুবলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, সকালে স্কুল খুললেও ১১টার পর ছুটি ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ক্লাস না করিয়ে ছুটি দেয়া হয় বলে জানান অভিভাবকরা। তাদের সন্তানদের নিরাপদে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলের পক্ষ থেকে বলা হয়। এ স্কুলের অভিভাবক মো. মনির হোসেন তার সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথে জানান, রাস্তায় যানবাহন সংকট দেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় স্কুল ছুটি দেয়া হয়েছে। এ কারণে তিনি স্কুল শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পরে ছুটি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষকরা। তাই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন বলে জানান। অন্যদিকে, সরকারি বাংলাবাজার গালর্স হাই স্কুলে সকাল ১১টায় স্কুল ছুটি দেয়া হয়েছে। নুরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। এ কারণে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। এ স্কুলের শিক্ষক শাজাহান মিয়া বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রাস্তায় যানবাহন কম চলাফেরা করছে। এ কারণে অভিভাবকরা অনেক কষ্ট করে সন্তানকে নিয়ে স্কুলে এসেছেন। পাশাপাশি রাস্তায় সকল ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে স্কুলে উপস্থিতি কল করে ছুটি দেয়া হয়েছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=104162