৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:০৩

রিজার্ভ চুরি

১২০ কোটি টাকার হদিস নেই

দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে মামলা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮০০ কোটি টাকার মধ্যে ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার সমমানের প্রায় ১২০ কোটি টাকার হদিস নেই। রিজার্ভ চুরির ঘটনার দুই বছর অতিবাহিত হলেও টাকাগুলো ফিলিপাইন থেকে কোথায় গেছে সেটাও শনাক্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা উদ্ধারের জন্য ২ বছর পর মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এ মামলা দায়ের করা হবে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহা: রাজী হাসান। রিজার্ভ চুরির দুই বছর পার হওয়ায় অর্থ উদ্ধারের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো: মিজানুর রহমান জোদ্দার, মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশনসের মহাব্যবস্থাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ, আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা মোহা: রাজী হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে মোট ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার খোয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২ কোটি ডলার। বাকি প্রায় দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা হয়েছে ফিলিপাইন থেকে। অবশিষ্ট ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৫ লাখ ডলারের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। বাকি ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের এখনো হদিস পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ফিলিপাইনের জুয়ার আসর থেকে অন্য কোনো দেশে চলে গেছে। তবে এ অর্থ শনাক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

গত দুই বছরে অর্থ উদ্ধারের জন্য কেন মামলা করা হয়নি, এর জবাবে রাজী হাসান বলেন, মামলা করার অবস্থা ছিল না। আমরা দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার ভিত্তিতে অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলাম। এর কিছু ফলও পাওয়া গেছে। তবে এখন মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তৃতীয় কোনো দেশে এ মামলা করা হবে। সার্বিক বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
রিজার্ভ চুরির পর গত দুই বছরে অনেকবার ফিলিপাইনে সফরে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদল। সব মিলে গত দুই বছরে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে রাজী হাসান বলেন, এ মামলার বাংলাদেশের পক্ষের আইনজীবী এখনো বিল জমা দেননি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা সরকারের নিয়ম অনুসারেই বিল নিয়েছেন।

মামলা করলে নিষ্পত্তি হতে কত সময় লাগবে, অর্থাৎ রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে আর কত সময় লাগবে, এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে রাজী হাসান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বনি¤œ সময় লেগেছিল সাড়ে তিন বছর।
তবে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার বা এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি হতে সাধারণত ৫ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত সময় লাগে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/292039