৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:৫৭

রোহিঙ্গারা এখনো আসছে

মিয়ানমারের আরকান রাজ্যে সহিংসতার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। তীব্র খাদ্য সংকট, পুরুষদের
ধরে নিয়ে নির্যাতন ও বিনা মজুরিতে খাটানো, কাজের জন্য ঘর থেকে বের হতে না দেয়া, দিনের পর দিন বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে বর্মী সেনা ও মগরা। এমন নানা অভিযোগে প্রতিদিন সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। এসব রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে না আসতে সেনারা বাধা ও নিষেধ করছেন বলে আগত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন। সোমবার প্রায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু আরকান রাজ্য থেকে পালিয়ে ইঞ্জিন চালিত ফিশিং বোটে টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়া সৈকত পয়েন্ট দিয়ে বংালাদেশে ঢুকেছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বুছিডং থানার ছিন্দিপ্রাং, ছিংদং, উলাফে, আলিশাং, পুঁইমালি ও সামিলা পাড়ার বাসিন্দা।

পালিয়ে আসা বুছিডংয়ের ছিংদং গ্রামের মৃত আশরাফ মিয়ার পুত্র আবুল বাছের (৪৮) জানান, গত ২রা ফেব্রুয়ারি ভোরে প্রায় ২শ’ রোহিঙ্গা মুসলিম একসঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে ঘর থেকে রওয়ানা দেয়। প্রায় দুই ঘণ্টা হাঁটার পর পাহাড়ী ঢালার কাছাকাছি পৌঁছলে বর্মী সেনারা তাদের বাধা দিয়ে বসিয়ে রাখে। সেনারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে রোহিঙ্গারা জানায়, ‘ঘর থেকে বের হতে না দেয়ায় কাজ কর্ম করতে না পেরে খাদ্য সংকট, পুরুষদের ধরে নিয়ে নির্যাতন ও বিনা মজুরিতে খাটানো, বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে’। এর উত্তরে বর্মী সেনারা তাদের এদেশে (বাংলাদেশ) আসতে নিষেধ করে জানায়, ‘রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য আশ্রয় শিবির তৈরি করা হয়েছে, সবাইকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে’। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক বসিয়ে রাখার পর বিকাল ৪টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়। এভাবে বিভিন্ন স্থানে আরো তিনবার বর্মী সেনারা তাদের বাধা প্রদান করলে একই কথাগুলো তাদের জানিয়ে দেয়া হলে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখার পর ছেড়ে দেয়। প্রায় তিন দিন হাঁটার পর ধংখালী সীমান্তে পৌঁছে কাঁটা তারের ঘেরা অতিক্রম করে। সেখান থেকে ইঞ্চিন চালিত ফিশিং বোটে করে এদেশে চলে আসে।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা টেকনাফ পৌর স্টেশনের আবু ছিদ্দিক মার্কেটে এসে জড়ো হয়। সেখানে টেকনাফ মডেল থানার বিশেষ টহল দলের পুলিশ তাদের তালিকাভুক্ত করেছে। এএসআই আমিনুর জানান, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৫৩ জন রোহিঙ্গাকে রেজিস্ট্রার খাতায় লিপিবদ্ধ করে বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=103887