২ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৩:২৪

নতুন নিয়মে ট্রেনের টিকিটে ভোগান্তি

নতুন নিয়মে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়মে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধনের পর যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।

আর বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে দরকার হবে পাসপোর্টের। বুধবার দুপুরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পিওএস (পয়েন্ট অব সেলস) মেশিন হস্তান্তরের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট বিক্রির নতুন এ পদ্ধতি উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলপথমন্ত্রীর মতে, এতে যাত্রীদের সুবিধা হবে এবং টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হবে। এদিকে উদ্বোধনের দিনই নতুন নিয়মে টিকিট কাটতে অধিকাংশ যাত্রী অনলাইনে নিবন্ধন করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে এ দুর্ভোগ দূর হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

তিনি বলেন, নতুন এ উদ্যোগে সাধারণ যাত্রীদের সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত হবে। টিকিট যার, ভ্রমণ তার-এটা শতভাগ নিশ্চিত হবে। আমরা যাত্রীদের সেবা বাড়ানোর সঙ্গে টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নিয়েছি। টিকিট কালোবাজারি যাতে হতে না পারে, সেক্ষেত্রে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ভোগান্তির কথা শুনেছি, বিষয়টি আমরা দ্রুত সমাধান করব।

এর আগে সকালে অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থা পরিদর্শনে এসে রেলপথমন্ত্রী বলেন, আগে টিকিট হলেই একজন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারত, এখন আপনার টিকিটে আপনাকে ভ্রমণ করতে হবে। একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কেটে অন্য কেউ ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। এর আগে একাধিক টিকিট কেটে কালোবাজারি করে বিক্রি করা যেত। এখন সেটা কেউ পারবে না।
এদিকে মন্ত্রী স্টেশনে থাকার সময়ই অনেক যাত্রী অভিযোগ করেন, নতুন নিয়মে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। অনেকে বলেছেন, তারা পড়াশোনা জানেন না। সাধারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। কারও আবার মোবাইল ফোনই নেই। বছরের পর বছর তারা আন্তঃনগর ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন টিকিট কেটেই। নতুন এ উদ্যোগে একটি গোষ্ঠীর লাভ হবে। সাধারণ মানুষের সেবা কেড়ে নেওয়া হবে। এ সময় কাউন্টারে সাধারণ মানুষের জন্য নির্ধারিত টিকিট উন্মুক্ত রাখার দাবি জানান তারা।

একাধিক যাত্রী জানান, নতুন নিয়মে নিবন্ধনে যাচাইয়ের সময় জন্মনিবন্ধন নম্বর দিলেও ফিরতি বার্তা আসছিল না। কাউন্টারে থাকা বুকিং সহকারীরাও কোনো সহযোগিতা করতে পারেননি। অনেকে বলেছেন, নতুন নিয়মে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে গিয়ে নির্ধারিত ট্রেন ধরতে পারেননি। বিল্লাল হোসেন নামের এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রেলে একের পর এক নিয়ম হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। নতুন নিয়মে নতুন করে ভোগান্তি বাড়ছে।

একাধিক শিক্ষার্থী ও ১৮ বছরের কম বয়সি যাত্রীরা জানান, তাদের আইডি কার্ড নেই। মা-বাবার আইডি কার্ড সঙ্গে নেই, নম্বরও জানা নেই। কেউই নিবন্ধন করতে পারেননি। অনেকে টিকিট না পেয়ে স্টেশন থেকে ফেরত গেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, নতুন নিয়মের বিষয়ে অনেকেই জানেন না। আমরা অল্প কয়েকজনকে সাহায্য করেছি। অনেকের কাছে মোবাইল ফোনই নেই। আবার অনেক যাত্রী জানিয়েছেন, যাত্রীরা নিবন্ধনের জটিলতায় পড়লেও রেলের টিকিট সহজলভ্য হয়েছে। কারণ নতুন প্রক্রিয়ায় কালোবাজারিদের টিকিট কেনা বন্ধ হবে বলে আশা করছেন তারা।

 

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/650369