২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৭:৫৩

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে ছয়-সাত মাস ধরে

ভাঙাচোরা সড়কটি নিচু হওয়ায় বছরের বেশির ভাগ সময় পানিতে ডুবে থাকত। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। ফলে দীর্ঘদিন কাদা-জল মাড়িয়ে চলতে হতো বাসিন্দাদের। এ দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য কয়েক মাস আগে নর্দমা ও সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য পুরো সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলাচলে চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা।

গতকাল রবিবার রাজধানীর ভাটারা থানাধীন নূরেরচালা বাজার থেকে সাঈদ নগর নামাপাড়া পর্যন্ত ঘুরে সড়কটির এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটারের বেশি এই সড়কে ঘুরে দুই পাশের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা জানান, রাস্তার নিচ দিয়ে নর্দমা স্থাপনের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির কারণে যানবাহন চলাচল পুরো বন্ধ। উঁচু-নিচু পথ মাড়িয়ে যেতে হচ্ছে হেঁটে হেঁটে। প্রায় সময় বাতাসে ধুলাবালি ওড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তা খুঁড়ে রাখায় অনেকের ব্যবসায় ধস নেমেছে। কেউ কেউ দোকান ছেড়ে চলে গেছেন, আবার কেউ দোকানই খোলেন না। কারণ তাঁদের দোকানের সামনে ১০ ফুটের বেশি উঁচু উঁচু মাটির স্তূপ। ক্রেতা আসার সুযোগ নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সড়কের এক বাড়ির মালিক বলেন, ‘রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কারণে কিছু ভাড়াটিয়া চলে যাচ্ছে। এখন আমরাসহ যারা আছি তাদেরও সমস্যা হচ্ছে। জিনিসপত্র মাথায় কিংবা হাতে করে বহন করা লাগছে। এ ছাড়া অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হচ্ছে। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ভাড়াটিয়া পাচ্ছি না। তাই অনুরোধ থাকবে রাস্তার কাজটি যেন দ্রুত শেষ করে আমাদের এর সুফল ভোগ করতে দেওয়া হয়।’

সাঈদ নগর এলাকার বাসিন্দা আকবর আহমেদ বলেন, ‘ছয়-সাত মাস আগে এ রাস্তার কাজ শুরু হয়। চলাচল করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের স্কুল এবং অসুস্থদের হাসপাতালে নেওয়া ও আনায়। রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করে আমাদের মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসি ব্যবসায়ী বলেন, ‘মাঝেমধ্যে কাজে ঢিলেমি চলে। সড়কের নিচে নর্দমায় জমানো পানিতে মশা ডিম পাড়ছে। এতে মানুষ সড়ক খোঁড়ার পাশাপাশি মশার যন্ত্রণায়ও অতিষ্ঠ।’

এ বিষয়ে রাস্তায় দায়িত্বরত প্রকৌশলী বলেন, ‘এক হাজার ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২১ ফুট প্রস্থের রাস্তা থেকে তোলা মাটিগুলো নেওয়ার জন্য বাইপাস কোনো সড়ক না থাকায় একটু সময় লাগছে। কারণ পর্যায়ক্রমে স্ল্যাব ঢালাই শেষে মাটি পরিষ্কার করে অন্যান্য কাজ করতে হবে। তবে বর্ষার আগে শেষ হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নর্দমা নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গর্ত ভরাট করা ও কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করবে কাজ বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে মাস দুয়েকের মধ্যেই সড়কটি নির্মাণের কাজ হয়ে যাবে বলে মনে করছি। তখন দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা ও ভাঙাচোরা নিচু রাস্তায় চলাচলের দুর্ভোগও কেটে যাবে।’

এই সড়কটি নিয়ে গত বছরের ২১ এপ্রিল কালের কণ্ঠে ‘সড়ক নয়, যেন খাল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পর থেকেই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই সড়কের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘবে তৎপর হন এবং এর কাজ শুরু করেন।

 

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/02/27/1256101