২৮ আগস্ট ২০২১, শনিবার

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা ও মহানগরী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন-২০২১ অনুষ্ঠিত

শ্রমজীবী মানুষরা ইনসাফপূর্ণ ন্যায্য পাওনা ও মানবিক আচরণ থেকে বঞ্চিত : ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, প্রতিটি মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। শ্রমজীবী মানুষরা যেসকল পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করে জীবন ও জীবিকা পরিচালনা করে নিঃসন্দেহে এই পেশাগুলো সমাজের অন্য পেশার তুলনায় কঠিন পেশা। এতদ্বসত্ত্বেও শ্রমিকরা শ্রমের বিনিময়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রক্ত ঝরা পয়সা নিয়ে যখন ঘরে ফিরে তখন তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। স্পষ্টত্ব আমাদের দেশে শ্রমিকরা দুইটি ক্ষেত্রে ইনসাফ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটি হচ্ছে শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য পাওনা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে কর্মক্ষেত্র ও সমাজে তাদের সাথে মানবিক আচরণ করা হয় না।

তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক ভার্চুয়ালি আয়োজিত “জেলা ও মহানগরী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন-২০২১” এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এই সময় মূল মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খাঁন, লস্কর মোঃ তসলিম, কবির আহমদ, মুজিবুর রহমান ভূইয়া ও দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলাম বলে মালিক-শ্রমিক পরস্পরের ভাই। একে অন্যের অঙ্গ। একটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হলে সারা দেহে তার খারাপ প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে মালিকপক্ষের দায়িত্ব হচ্ছে শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া। শ্রমিকের সাধ্যের উপযোগি কাজ প্রদান করা। অন্য দশজন নাগরিকের ন্যায় শ্রমিককে তার প্রাপ্য নাগরিক সুবিধাগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করা। মালিক শ্রমিককে বলবে এই কল-কারখানা আমার একার নয় এখানে তোমাদেরও হক রয়েছে। এসো আমরা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে কারখানার উন্নতির পথে নিয়ে যাই। কেননা কারখানার উন্নতির সাথে তোমার আমার জীবন-জীবিকা জড়িত। এই ঘোষণা যেসব মালিক ভাইয়েরা দিতে পারবেন তাদের কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ হবে না। দুষ্ট চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শ্রমিকরা নিজ কারখানায় আগুণ দিবে না। বরং কারখানার উন্নতির জন্য নিজেদের সর্বস্ব নিয়োগ করবে।

তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা জুলুম পছন্দ করেন না। সেজন্য তিনি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছেন। একই সাথে এক সৃষ্টির ওপর অন্য সৃষ্টির জুলুম হারাম করেছেন। আমাদের দেশে শ্রমিকদের ওপর সবচেয়ে বেশী জুলুম করা হয়। এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেননা আল্লাহর কাছে সকল মানুষের মর্যাদা সমান। তিনি সকলকে গোলাম হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। যারা আল্লাহর নৈকাট্য লাভের আশায় তার গোলামী করবে তাদের জন্য তিনি সুসংবাদ দিয়েছেন। আর যারা ইবলিশ শয়তানের মত আত্ম অহংকার করে আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধানকে অস্বীকার করবে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সুতরাং আমাদের সকলকে চির কল্যাণের পথে নিজেদের অগ্রসর করার পাশাপাশি দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষসহ সকল জাতি গোষ্ঠীকে নিয়ে আসার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষরা সহজ সরল প্রকৃতির। তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ইসলামী শ্রমনীতি প্রয়োগ সময়ের অনিবার্য দাবী। কেবল মাত্র ইসলামী শ্রমনীতি বহাল থাকলে মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষ উপকৃত হবে।