বাংলাদেশের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সকল শিল্প কল কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ঈদুল আজহার পুর্বেই দিয়ে দিন যাতে করে শ্রমিকরা ঈদ উৎসব তাদের পরিবার নিয়ে করতে পারে। প্রতিবছরই কিছু কিছু মালিক ঈদের আগে শ্রমিকদের বোনাস এবং বেতন ভাতা নিয়ে টালবাহানা ও ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। বেশিরভাগ গার্মেন্টস মালিকই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেয় না, দিলেও তা হয় ইচ্ছামাফিক। এতে কারখানার শ্রমিকদের অমানবিক অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। তারা ও তাদের পরিবার ঈদ উৎসব থেকে বঞ্চিত হয়। যেটা আমাদের কারো কাম্য নয়।
১১ আগস্ট শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি সন্মেলনে প্রধান অতিথিরর বক্তব্যে মালিকদের প্রতি তিনি এই আহবান জানান। উক্ত সম্মেলনে খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার সভাপতিগণ উপস্থিত ছিলেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ খানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাস্টার শফিকুল আলম, জামায়াতের পাবনা জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ,সহ সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমসহ সাধারণ সম্পাদক অাতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মনসুর অাহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অালমগীর হাসান রাজু, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আলমগীর হোসাইন, আশরাফুল আলম ইকবাল। উক্ত সম্মেলনে বিগত ৬ মাসের কাজের রিপোর্ট, ট্রেড ইউনিয়ন বৃদ্ধি ও বিভিন্ন পেশাভিত্তিক ট্রেডের কাজের পর্যালোচনা করা হয়
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আজ শ্রমিক অঙ্গনে কোন শৃংখলা নেই। বিশেষ করে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, অনিয়ম, আধিপত্য বিস্তারে প্রতিযোগিতা ও চেইন অব কমান্ডের অভাবে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
তিনি এই বিশৃংখলাপূর্ণ সেক্টরকে নিয়ম ও শৃংখলা ফিরাতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, সকল পেশায় বেতন স্কেল বৃদ্ধি হলেও শ্রমজীবী মানুষের বেতন বাড়েনি। তিনি উক্ত সম্মেলনে শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরী ১৬০০০/টাকা করার দাবী জানান।
মিয়া গোলাম পরওয়ার সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার ব্যাপক বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা প্রচার করলেও সারাদেশে লোডশেডিং এ জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। বিদ্যুতের অভাবে নগর ও শিল্প অঞ্চলে কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি মানুষের এসব সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, খুলনা অঞ্চলের ৯ টি পাটকলের শ্রমিক নিয়মিত বেতন না পেয়ে তাদের পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করছে। শ্রমিকরা তাদের প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন পাবে কিনা তা নিয়ে হতাশায় রয়েছেন।
শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশায় উদ্বেগ জানিয়ে তিনি সকল পাটকল শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।