৩০ জুন ২০১৬, বৃহস্পতিবার, ৩:৩৪

ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র প্রকাশে গভীর উদ্বেগঃ বর্তমান সরকারের আমলে দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির সয়লাব বয়ে যাচ্ছে

টিআইবির রিপোর্টে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পাসপোর্ট ও বিচারিকসহ অন্ততঃ ১৬টি খাতের সেবা পেতে বছরে ৮ হাজার ৮২১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয় মর্মে যে ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র প্রকাশিত হয়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ৩০ জুন প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “টিআইবির রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির সয়লাব বয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সরকার দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছে। অফিসে আদালতে কোথাও ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। এমনকি টাকা ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না। গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে বলেছেন যে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খাতের কিছু ক্ষেত্রে যে লুটপাট হয়েছে তা শুধু পুকুর চুরি নয়, সাগর চুরি। দুর্নীতিই প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পরে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে যে, সাগর চুরি কারা করছে? নিশ্চয়ই সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা সাগর চুরি করে ফুলে ফেপে উঠছে। এ ব্যাপারে কী অর্থমন্ত্রীর কোন দায়-দায়িত্ব নেই? তিনি কী শুধু বক্তব্য দিয়েই দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারেন? অনেকে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। সরকার সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ করার কারণেই সারা দেশে ঘুষ ও দুর্নীতিতে সয়লাব বয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় সংসদ, উপজেলা, পৌর করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রহসন করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সরকার দলীয় লোকদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। প্রশাসনের কোথাও বর্তমানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নেই। সরকারী দলের নেতা-কর্মী এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ মিলেমিশে দুর্নীতি করছে।

ঋণ জালিয়াতি, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার বিরুদ্ধে ৭৯২ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির কানুনগোর বিরুদ্ধে ৩শ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ ঘটনা থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে, দেশে কী সাংঘাতিক অবস্থা বিরাজ করছে! এ অবস্থায় কোন দেশ চলতে পারে না।

গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হত্যা করে দেশে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করার কারণেই ঘুষ এবং দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। একদলীয় স্বৈরশাসন এবং ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে এ ব্যাপারে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলারও আহবান জানাচ্ছি।”