২৯ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার

ঢাকা জেলা দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান

সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে থাকার জন্য দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছেঃ অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.) অনুসৃত আদর্শের যথাযথ অনুসরণ করতে হবে। মূলত, মানবরচিত সকল তন্ত্রমন্ত্রের ওপর আল্লাহর বিধান বিজয়ী করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালানোর মু’মিন জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ও কর্তব্য। তিনি দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।

তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমীর মাওলানা মোহাম্মদ দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এবিএম কামাল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার। আরো বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমীর মাওলানা শাহিনুর ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মোঃ মাঈনুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রে এবং আমৃত্যু আল্লাহর গোলামী প্রত্যেক মু’মিনের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে প্রশান্ত আত্মা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। সুরা আল ফজরের শেষ আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে সে নির্দেশনাই দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, হে প্রশান্ত আত্মা! তোমরা তোমাদের প্রভূর দিকে প্রত্যাবর্তন করো সন্তষ্টচিত্তে এবং তার সন্তষ্টি অর্জনের মাধ্যমে। এতএব তোমরা তার অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত হও এবং জান্নাতে প্রবেশ করো। মূলত এটিই মু’মিন জীবনের প্রকৃত সাফল্য।

তিনি বলেন, মূলত, বিশ্বনবী (সা.)-এর মাধ্যমে আমরা দ্বীনে হক্ব পেয়েছি। আর আমাদের ওপর দ্বীনে হক্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানোকে অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া হয়েছে। তাই আমাদের ওপর অর্পিত এ দায়িত্ব কোন ভাবেই পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। মূলত, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে তার বিধানের যথাযথ অনুসরণ ও তা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠার মধ্যেই রয়েছে বিশ্বমানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ। তিনি ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে আত্মগঠন করে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত বলেন, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে থাকার জন্য দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা জামায়াতসহ দেশপ্রেমী শক্তির ওপর দলনপীড়ন চালাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ও বর্ষীয়ান আমীরে জামায়াতসহ শীর্ষনেতাদের কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে জেল গেইট থেকে আবারো গ্রেফতার করে সরকার প্রমাণ করেছে তারা মানবাধিকার ও সুশাসনে বিশ্বাসী নয়। তিনি সরকারকে নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ এবং আমীরে জামায়াত সহ শীর্ষনেতা অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।

মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, ইসলামী আন্দোলনের পথ কখনো মসৃণ ছিল না; এখনো নয়। যুগে-যুগে যারাই মানুষের কাছে দ্বীনে হক্বের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের ওপরই কুফরী ও কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। এমনকি নবী-রাসূলগণও তা থেকে রেহাই পাননি। রাসূল (সা.)-এর ওপরও চালানো হয়েছে ইতিহাসের নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন। তাই বাতিল শক্তির সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষ করেই ইসলামী আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, কোন বাধা-প্রতিবন্ধকতা ও জুলুম-নির্যাতনে হতোদ্দম হলে চলবে না বরং যেকোন প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে । মিথ্যাকে সত্য দিয়ে বিতাড়িত করতে হবে। গড়তে হবে মিথ্যা বিবর্জিত শান্তি, প্রগতি ও সত্যাশ্রয়ী বিশ্ব। তিনি সেই স্বপ্নের বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলে ঈদকে অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।