বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা'ছুম বলেছেন, সমাজের একটি শ্রেণীকে দরিদ্র রেখে দেশ, জাতি ও সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সারাজীবন গরীব থাকতে হবে তা ঠিক নয়। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হলে প্রয়োজন স্বনির্ভরতা। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করতে সামর্থবানদের এগিয়ে আসা উচিত। স্বনির্ভরতার সৃষ্টির লক্ষ্যে সিলেট মহানগর জামায়াতের রিকশা বিতরণ একটি মহৎ উদ্যোগ। এতে কিছু মানুষকে স্বাবলম্বি করে তুলতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা সব সময় মানবতার কল্যাণে কাজ করতে চাই। দরিদ্র মানুষের হক তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা সমাজের প্রতিটি স্তরে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ দূর করতে চাই। আমাদের এ মহৎ কাজগুলো একটা গোষ্ঠীর সহ্য হয়না। আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে তারা আমাদের উপর জুলুম-নিপীড়ন চালায়। আমাদের দায়িত্বশীলদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়েছে। তবুও আমরা ময়দানে আছি, মানবতার পাশে আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বলেন, আজ যে সকল ভাই জামায়াতের পক্ষ থেকে রিকশা পেয়েছেন, আগামীতে তারা কয়েকজন মিলে আরো একজন দরিদ্র ভাইকে একটি রিকশা কিনে দিতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ। এ বাহনকে ব্যবহার করে হালাল রোজী-রোজগার করার পাশাপাশি সঞ্চয় করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে ইহকালিন সাফল্য ও পরকালিন মুক্তির পথ প্রশস্ত হবে।
তিনি শুক্রবার সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শ্রমজীবি শ্রমিকদের মাঝে রিকশা বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত রিকশা বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক নেতা এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট আলিম উদ্দিন, জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল মুকিত, শামীম আহমদ, শ্রমিক নেতা ইয়াসীন খান ও মিয়া মোহাম্মদ রাসেল প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত শত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আর্ত মানবতার কল্যাণে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। বিগত প্রলয়ংকরী বন্যার শুরু থেকে জামায়াত দূর্গত মানুষের পাশে ছিল। বর্তমানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পূনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরপরও আমরা আমাদের ধারাবাহিক দারিদ্রতা বিমোচন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। বন্যাকালিন সহযোগিতা ছাড়াও আমাদের জনকল্যাণ তহবিল থেকে ইতোমধ্যে আমরা কয়েকজন শ্রমজীবী ভাইদেরকে ভ্যান গাড়ী, বোনদেরকে সেলাই মেশিন, অসুস্থ ও কন্যা দায়গ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা, দরিদ্র পরিবারগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক অনুদান, শীতের সময় শীতবস্ত্র বিতরণ, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহতদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিতরণ এবং দরিদ্র পরিবারের ছেলে শিশুদের খৎনা করা হয়েছে। জামায়াত দুর্নীতি ও দারিদ্রমূক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে চায়। জামায়াতের এই পথচলা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।