বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “সব ধরনের মৃত্যুর ফায়সালা করেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। তাই আল্লাহর ফায়সালা আমাদের মেনে নিতে হবে এবং যতটা সম্ভব স্বাভাবিক থাকতে হবে। শোকে শোকাহত হয়ে ভারসাম্য হারানো যাবে না। যে কোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেক পরিবারে দুঃখ-দুর্দশা নেমে আসে। মৃত্যুর কোনো স্থান-কাল ও বয়স নেই। যেকোনো সময় যে কোনো জায়গায় হতে পারে। আমাদেরকে ভালো মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ও নেক আমল করতে হবে। মা, বাবা, স্ত্রী ও মেয়ে হিসাবে নিহতদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।”
০১ এপ্রিল সোমবার গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের উদ্যোগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪টি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও নিহত পরিবারেরর সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাওলানা আবদুল হালিম এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “জামায়াতে ইসলামী এমন দল যারা ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েম করে মানুষের হক মানুষকে ফিরিয়ে দিতে চায়। অসৎ কর্ম ও দুর্নীতির কারণে সমাজে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ হয়। তাই সৎ পথে চলতে হবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ও সমাজবিরোধীদেরকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে জামায়াত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ইতোপূর্বে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরিবারেও জামায়াতের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আর্থিক সহায়তা কোনো কৃতিত্ব নয় বরং এটা আমাদের দায়িত্ব। এটা জনগণের অধিকার।
তিনি বলেন, আমীরে জামায়াতসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রায় সকলে জেলে গেছেন। জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন। অনেকেই শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা জীবন দিয়ে হলেও এদেশে কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করবো ইনশাআল্লাহ।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা আমীর ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আব্দুর রহিম সরকার, গাইবান্ধা জেলা আমীর ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জননেতা মো. আব্দুল করিম, জেলা নায়েবে আমীর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, জেলা রাজনৈতিক সেক্রেটারি ও পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জেলা সহকারি সেক্রেটারি জনাব সৈয়দ আব্দুস সালেক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফয়সাল কবির রানা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নায়েবে আমীর জনাব আবুল কালাম আজাদ, পলাশবাড়ী কর্মরিষদ সদস্য মাওলানা একরামুল হক ও জামায়াত নেতা গোলাম মোস্তফা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মশিউর রহমান প্রমুখ।
আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম নিহত ৪ জনের প্রত্যেক পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দুই লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। নিহতরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের কুমার গাড়ী গ্রামের মো. মজিবর রহমান এর পুত্র ইজি বাইক চালক মোঃ আশরাফুল ইসলাম (৩৫), পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথুুর ইউনিয়নের হরিনাবাড়ীর ভোলামিয়ার পুত্র মো. মোত্তালিব প্রধান (৫০), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের কুমার গাড়ী গ্রামের পিতা আজিজুল হকের পুত্র মোঃ বেলাল (৫০), একই গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়ার পুত্র মোঃ সবুজ মিয়া (৩৮)।
উল্লেখ্য নিহতরা বাজার করার উদ্দেশ্যে গত ২১ মার্চ পার্শ্ববর্তী নাকাইহাট বাজারে যান এবং বাজার করে ফেরার পথে বড়পুল নামক স্থানে পৌঁছুলে পিছন দিক থেকে আসা মাটির হাঁড়ি ভর্তি একটি নসিমন স্ব-জোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনা স্থলেই ইজিবাইকের চালক আশরাফুল ইসলাম মারা যান এবং অন্যরা গুরুতর আহত হন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।