২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার, ১১:২২

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা ধারণাকেও ছাড়িয়ে গেছে

জাতিসঙ্ঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার

কক্সবাজার সফর শেষে জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার ইয়াংগি লি বলেছেন, রোহিঙ্গা পরিবারগুলো যে মাত্রায় সহিংসতার শিকার হয়েছে, তার ভয়াবহতা আমার প্রকৃত ধারণাকে ছাড়িয়ে গেছে।

রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করা, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা রোধে ত্বরিত পদক্ষেপ নেয়া এবং সহিংস ঘটনাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইয়াংগি লি। রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ লাঘবে মিয়ানমার সরকারকে তিনি জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

জাতিসঙ্ঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এ সময় তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করে তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অবহিত হন।

এর আগে জাতিসঙ্ঘের এই স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার ৯ থেকে ২১ জানুয়ারি মিয়ানমার সফর করেন। সফরকালে তিনি রাখাইন ও কোচিন রাজ্য পরিদর্শন এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চিসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেন। এরপর জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা এক কথায় প্রতিহিংসামূলক। সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পরিকল্পিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যের শিকার। তিনি বলেন, বিগত জাতীয় নির্বাচন মিয়ানমারের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আকাক্সক্ষার জন্ম দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র এক বছরের মধ্যে সেই প্রত্যাশা মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এটি খুবই দুঃখজনক।

ইয়াংগি লি আগামী ১৩ মার্চ জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।

গতকাল জেনেভা থেকে দেয়া বিবৃতিতে লি বলেছেন, গত বছরের ৯ অক্টোবরের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, তাদের অনেকের সাথে তিনি কথা বলেছেন। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তিনি ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনেন, যার মধ্যে রয়েছে গলা কেটে হত্যা, গুলিবর্ষণ, বন্দী করে ঘরে আগুন দেয়া, শিশুদের আগুনে ছুড়ে মারা, গণধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন নির্যাতন। অক্টোবর থেকে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে এবং তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/199477