৩০ ডিসেম্বর ২০১৬, শুক্রবার, ৪:১০

চট্টগ্রাম কাস্টমসের গুরুত্বপূর্ণ ৬৫ নথি মিলল গার্মেন্টে: নথি পাচারের এ ঘটনা অ্যালার্মিং - ড. মইনুল খান ; তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের গুরুত্বপূর্ণ ৬৫টি গোপন নথি একটি পোশাক কারখানার অফিস কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছে। বুধবার রাতে নগরীর নয়াবাজারে আল-আমিন মেরিটাইম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেলস ফ্যাশন নামের পোশাক কারখানা থেকে এসব নথি উদ্ধারের পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর কাস্টম হাউসে ছিল নানা গুঞ্জন। কাস্টমসের মতো সুরক্ষিত এলাকা থেকে এসব গোপন নথি কিভাবে পোশাক কারখানায় গেল, কী উদ্দেশে কারা নিল, এর সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কেউ জড়িত আছেন কিনা তা খুঁজে বের করতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বৃহস্পতিবার শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এ প্রসঙ্গে ড. মইনুল খান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে বলেন, ‘কাস্টম হাউসের মতো একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কি পয়েন্ট ইন্সটলশেন থেকে কিভাবে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ নথি বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার গার্মেন্ট কারখানায় গেল, কারা কী উদ্দেশে নিয়ে গেল, এ নথি পাচারের সঙ্গে কাস্টমসের কোন কোন কর্মকর্তা জড়িত, এতে রাষ্ট্রের কোনো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কিনা তা তদন্ত করা হবে। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি এ ঘটনাকে অ্যালার্মিং বলেও মন্তব্য করেন। ড. মইনুল খান আরও বলেন, শুধু এ ৬৫ নথিই নয়; তারা মামলার তদন্তের স্বার্থে আরও বেশ কিছু নথি চেয়েছেন কাস্টম হাউসের কাছে। কিন্তু এসব নথি তারা দিতে পারছেন না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, কাস্টম হাউস থেকে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব সংশ্লিষ্ট অনেক ফাইল এভাবে গায়েব হয়ে গেছে।’
শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টম হাউস থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়াবাজারে আল-আমিন মেরিটাইম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেলস ফ্যাশনে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দার একটি দল। অভিযানে ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষের আসবাবপত্রের ভেতর থেকে কাস্টমসের ৬৫টি গোপন নথি উদ্ধার করা হয়। এসব নথির মধ্যে ১১টি নথি ব্যাংক গ্যারান্টিসংক্রান্ত, ৪৩টি নথি বিচারাধীন বিভিন্ন মামলার এবং ১২টি নথি শুল্কায়ন ও অন্যান্য সংক্রান্ত। প্রাথমিকভাবে তিনটি নথি পরীক্ষা করে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার ব্যাংক গ্যারান্টির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাংক গ্যারান্টি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়েছে, নাকি তা কেউ তুলে নিয়েছে সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি আরও জানায়, যে পোশাক কারখানা থেকে কাস্টম হাউসের গোপন নথি জব্দ করা হয়েছে ওই কারখানার মালিক মো. আল আমিন। এসব নথি কিভাবে ওই কারখানার অফিসে গেল- জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কাস্টম হাউসের এসব নথিতে এআইআর থেকে শুরু করে কাস্টমস কমিশনারেরও স্বাক্ষর রয়েছে। যদি এসব নথি ফটোকপি হতো তাও একটা কথা ছিল। একেবারে মূল নথি যেখানে কাস্টম হাউসের সর্বনিু থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে।
এছাড়া নির্ভরযোগ্য সূত্রটি জানায়, কয়েক মাস আগে শীর্ষ পর্যায়ের ৪ দালালকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরা কতিপয় সিএন্ডএফ এজেন্টের সঙ্গে জোগসাজশ করে কাস্টমস হাউসে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছিলেন। এদের সঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এমনকি এনবিআরের কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তার যোগসূত্র পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এখন তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে এরা প্রত্যেকেই গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন।
http://www.jugantor.com/first-page/2016/12/30/89088/%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3-%E0%A7%AC%E0%A7%AB-%E0%A6%A8%E0%A6%A5%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%B2-%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE