২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার, ৯:২৭

সরকারকে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ

বাংলাদেশে গুম বন্ধ করতে জাতিসংঘের আহ্বান

 * প্রতিটি গুমের ঘটনার স্বাধীন তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান গুমের ঘটনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল শুক্রবার জেনেভা থেকে দেয়া বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও ওয়ার্কিং গ্রুপ এ আহ্বান জানায়। হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর আহমদে বিন কাসেম এবং বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (সাবেক) আবদুল্লাহিল আমান আযম্রী গুমের ঘটনা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিটি গুমের ঘটনার স্বাধীন তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তাও আগ্রহ প্রকাশ করে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান গুমের ঘটনা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষর প্রতি আহ্বান জানায়। জাতিসংঘের বলপূর্বক ও অনৈচ্ছিক অন্তর্ধান বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গুম হওয়ার এই সংখ্যা ৪০ এরও বেশি এবং এ সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, সরকারের একটি সংস্থা বিভিন্ন গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। এর শিকার সরকারের বিরোধী পক্ষ।

বিবৃতিতে বলা হয়, গুম করা একটি জঘন্য অপরাধ, মানবাধিকারের লংঘন এবং কোনভাবেই তা সমর্থন যোগ্য নয়। ওয়ার্কি গ্রুপ বলছে, এ ধরনের অপহরণের ক্ষেত্রে আইনশৃংখলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক গত বছরের আগস্টে অপহৃত তিন জনের আবেদন ফলো করছে। তারা হলেন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর আহমদে বিন কাসেম এবং বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (সাবেক) আবদুল্লাহিল আমান আযমী, যারা ঢাকা থেকে পৃথক পৃথকভাবে অপহৃত হয়েছে। এই তিন জনেরই সাথে সরকারের বিরোধী রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের পিতারা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত। বিচারের সময় তারা তাদের পিতার পক্ষে কাজ করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা প্রতিটি গুমের ঘটনার স্বাধীন তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে উল্লেখিত ব্যক্তি ও গুম হওয়া অন্যান্য ব্যক্তিদের অবস্থান প্রকাশের আহ্বান জানায়। গুম হওয়া ব্যক্তিদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ১৯৯২ সালের জাতিসংঘের ঘোষণার আলোকে বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা, অমানবিক, অবমাননাকর আচরণ ও শাস্তি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মি. নিল্স মিলজার, শান্তিপূর্ণভাবে সভা ও সংগঠন করার অধিকার সংক্রান্ত বিশেষ দূত মি. মাইনাকেই, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেয়া সংক্রান্ত বিশেষ দূত মিস.এজেন্স চিল্লিমার্ড এবং বিচারপতি ও আইনজীবীদের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিশেষ দূত মি. ডিগো জার্সিয়া সায়ান এ বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতির সাথে একমত প্রকাশ করেছেন, বলপূর্বক ও অনৈচ্ছিক অন্তর্ধান বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। এই গ্রুপ চেয়ার হচ্ছেন মিস হুরিয়া এস সিলমি (মরক্কো), ভাইস চেয়ার মি. বিরান্ড ধোহিমি (কানাডা)। সদস্যরা হলেন, মি. টিও উঙ্গ বাইক (কোরিয়া প্রজাতন্ত্র), মি. এরিয়াল ডোলিটাজকি (আর্জেন্টিনা) এবং মি. হেনসিক্স মাইকিভিকোয়াস (লিথুনিয়া)।

http://www.dailysangram.com/post/273202