২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার, ১০:৪৩

গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই

চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। যেন কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই মাংসের বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। বলছেন, বিভিন্ন দাবি আদায়ের নামে ধর্মঘটের পর থেকেই মাংসের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। তবে নতুন করে দাম বাড়েনি চালের। সবজি, মাছ, সয়াবিন তেল, চিনি, পেঁয়াজ-রসুনসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কলমীলতা মার্কেট, শেওড়াপাড়া বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাংসের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এ প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারে গরুর মাংস বিক্রেতা আবদুল খালেক যুগান্তরকে বলেন, বাজারে গরুর সরবরাহ কম, তাই বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে চামরার দাম কম হওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে মাংসের ওপর। ফলে বাড়তি দামে বিক্রি করেও খুব বেশি লাভের মুখ দেখা যায় না। খাসির মাংস বিক্রেতা জালাল উদ্দিন বলেন, অবরোধের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। শীতের শুরু থেকে এমনিতেই খাসির মাংসের দাম বাড়তির দিকে। এখন বাজারে খাসি সরবরাহ কম হচ্ছে। ফলে দাম বেশি নিয়ে বিক্রি করছি।

শেওড়াপাড়া বাজারের ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী কালাম বলেন, হঠাৎ করেই মাংসের দাম ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেল, কিন্তু কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই। যেন মগের মুলুক। যে যেভাবে পারছে আমাদের পকেট কাটছে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজেেিত ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০। লাল লেয়ার ১৬৫ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১৮০। সাদা লেয়ার ১৫০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে ছিল ১৬০। দাম কমার কারণ হিসেবে মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে গরু ও খাসির মাংসের ধর্মঘট ছিল, তাই মুরগির চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়ে। এ সপ্তাহে চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমেছে।

রাজধানীর বাজারে গাজর ২০ টাকা কেজি, আলু ১৫, ঢেঁরস ৭০, বেগুন ৪০, করলা ৭০, টমেটো ৪০, ফুলকপি ২৫-৩০, বাঁধাকপি ২০ ও ধনে পাতা প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ৪০ টাকা, শিম ৩০, চিচিঙ্গা ৪০, মুলা ২০, কাঁচা মরিচ ৪০, বরবটি ৮০ টাকা কেজি। এছাড়া পেঁয়াজ (দেশী) ২৫ টাকা, আমদানি করা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুন দেশী ১৬০ টাকা এবং আমদানি ২০০ টাকা কেজি। আদা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৮৮ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা। হাঁসের ডিম প্রতি হালি ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিম ১৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৪০ টাকা।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ ১০০-১২০, শোল ১৮০, কই (বড়) ১৮০, তেলাপিয়া ১০০, চিংড়ি (বড়-মাঝারি) ৪৫০-৮৫০, কাতলা ২৫০, রুই ২৫০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া রূপচাঁদা (২০০ গ্রাম ওজনের) ৮০০ টাকা, ইলিশ (আমদানি) ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি এবং দেশী মাঝারি ইলিশ (৮০০ গ্রাম ওজনের) ১ হাজার ২০০ টাকা জোড়া বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাল আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি দরে। পারিজাত ৪০ টাকা কেজি, গুটি স্বর্ণা ৩৮, ২৮ চাল ৪৪-৪৫, নাজিরশাইল ৫০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/02/25/103964