নির্মাণাধীন খুলনা রেলওয়ে ভবন
১০ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ১১:৪০

১৮ মাসের কাজ ৩৮ মাসেও শেষ হয়নি

খুলনা আধুনিক রেল স্টেশন নির্মাণ

জুনেও শেষ হয়নি খুলনার আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণকাজ। এখনো মূল ভবনের ফিনিসিং ছাড়াও সীমানা প্রাচীর ও প্রবেশ পথের অনেক কাজ বাকি। বসানো হয়নি রেলপথও। জুলাইয়ের মধ্যে বসানো হবে প্লাটফর্মের রেলপথ। কর্মকর্তারা বলছেন, জমি উদ্ধারে দেরি এবং প্লাটফর্মের ছাদের নকশাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়েছে। সবঠিক থাকলে আগামী আগস্টে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী গত ৩ মার্চ স্টেশনটি উদ্বোধন করেন।

রেলস্টেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী মোসাব্বির হক বিপ্লব বলেন, স্টেশন মূল কাজ শেষ। এখন শুধু ফিনিশিং কাজ বাকি। তিনি বলেন, প্লাটফর্মের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (পাকশি) ওয়াসিম কুমার তালুকদার বলেন, স্টেশনের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী আগস্ট মাসে ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী বিরবল মণ্ডল জানান, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। আর ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্লাটফর্মের রেলপথ বসানোর কাজ সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যে প্লাটফর্মের আগ পর্যন্ত রেলপথ বসানোর কাজও শেষপর্যায়ে। তিনি বলেন, প্রকল্পের প্রায় ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। তবে আগস্টে এই স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল করবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হচ্ছে ৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর এর মধ্যে শুধু স্টেশন ভবনের নির্মাণ ব্যয় ৬০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অন্যান্য কাজে বাকি ব্যয় হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত খুলনার পুরাতন রেল স্টেশন দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন খুলনার মানুষ। এ জন্য খুলনায় একটি আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের। ২০০৭ সালে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘রিমডেলিং অব খুলনা রেল স্টেশন অ্যান্ড ইয়ার্ড’ নামে এই প্রকল্প গ্রহণ করে। একাধিকবার সংশোধনের পর ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৫ সালের ৪ মার্চ ঠিকাদার নিয়োগসংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ওই মাসেই কার্যাদেশ। এপ্রিল মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় খুলনার আধুনিক রেল স্টেশনের কাজ। শর্ত ছিল ১৮ মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু ৩৮ মাস পার হলেও এখনো অনেক কাজ শেষ হয়নি।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প এলাকায় প্রায় ২২ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি তিনতলা স্টেশন ভবন, ১ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের তিনটি প্লাটফর্ম, ৭৮৪ বর্গমিটারের একটি লিংক করিডোর নির্মাণ হয়েছে। ভবনের ভেতরে ৮৬০ বর্গমিটারের ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া চার হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে কার পার্কিং, ফুটপাথ ও রাস্তা থাকার কথা রয়েছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/331691