৯ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ৩:২৯

কোটা সংস্কারের কথকতা

সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা : দুর্ভাগ্যজনকভাবেই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে রাজপথ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা এতদিন সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও এখন তারা সে অবস্থানে আর নেই বরং সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। পরিণতিতে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা এখনই দিব্যি দিয়ে বলা যাচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি যে খুব সুখকর হবে না আপাত দৃষ্টিতে তা-ই মনে হচ্ছে। কিন্তু সরকার ইচ্ছা করলেই এই অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে পারতো; উচিতও তাই ছিল। বল শুধু তাদের কোটেই ছিল না বরং বিষয়টিও প্রায় মীমাংসিতই ছিল। আর মীমাংসিত বিষয়কে নতুন করে ইস্যু বানানো কারো জন্যই কল্যাণকর হবে বলে মনে হয় না। ঘটনার ধারাবাহিকতায় যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে আগামী দিনে তা আরও জটিল রূপ নিতে পারে বলেই মনে হয়।

মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুতেই সরকার আন্দোলনরত শিক্ষার্র্থীদের দাবি মেনে নিয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছিল বলেই মনে করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে সরকারি চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ইতিহাসই সৃষ্টি করেছিলেন। আর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এমন ঘোষণা আন্দোলনের যৌক্তিকতাও দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতিই থাকবে না, এটা ‘বাতিল’। একইসঙ্গে ওই দিনই কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও বলেছিলেন। যদিও আন্দোলনকারীরা কোটা বাতিলের দাবি কখনো করেন নি বরং তারা একটা যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণায় একদিকে আন্দোলনকারীরা আশ^স্ত হয়েছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষও আশায় বুক বেঁধেছিলেন। এর মাধ্যমে একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানই আশা করা গিয়েছিল। কিন্তু সে অশায় গুড়ে বালি পড়তে খুব একটা সময়ের প্রয়োজন হয়নি।
শুরুতেই কেউ কেউ এ বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। হয়তো তারা নেপথ্য থেকে তেমন একটা আভাসও পেয়ে থাকতে পারেন। তাই তাদের উপস্থাপনা ও দাবি ছিল বেশ জোড়ালো। কিন্তু বিষয়টিকে কেউ আমল বা পাত্তা দিতে চাননি। কারণ, জাতীয় সংসদের খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই যখন কোটা বাতিলের ঘোষণা এসেছে, তখন এই বিষয় নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তোলা কারো কাছেই যৌক্তিক বলে মনে হয় নি বরং তা অতিমাত্রায় সরকার বিরোধিতা, বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা বা ‘অপজিশন ম্যানিয়া’ বলেই মনে করা হয়েছে। তাই আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে, কোটা সংস্কার বিষয়ে একটি কাক্সিক্ষত ও যৌক্তিক সমাধান হয়েই গেছে। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা আর প্রক্রিয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিন্দুকের মুখেই ফুলচন্দন পড়তে শুরু করেছে। আর তা যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হতে যাচ্ছে তা অন্তত এখন আর কেউ অস্বীকার করেন না। কারণ, এর কলকাঠিটা এখন সরকারের হাতেই রয়েছে। তাই এর মেরিট-ডিমেরিট সবই সরকারের।

মূলত কোটা সংস্কার ও বাতিল নিয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে নিকট অতীতে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, অতিঅল্প সময়ের ব্যবধানে সে দাবি এখন প্রায় যথার্থই হতে চলেছে। প্রশ্নকারীদের বগল বাজানো এখন রীতিমত চোখে পড়ার মত। তারা মোক্ষম সুযোগটাই রীতিমত কাজে লাগাচ্ছেন বা লাগানোর সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। কারণ, সরকারের ঘোষণা মোতাবেক কোটা সংস্কার বা বাতিল তো দুরের কথা এখন সবকিছু উল্টোপথে চলতে শুরু করেছে। শুরুতেই আন্দোলনকারীরা সরকারের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণায় নিজেদের বিজয় ও আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুললেও এখন তা হরিষে-বিষাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ, শিক্ষার্থীদের দাবি ও আগামীতে সম্ভাব্য আন্দোলন ঠেকানোর জন্য পাল্টা শক্তির রাজপথে সরব পদচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এরা সরকারের অনুগ্রহপুষ্ট বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ও আন্দোলন প্রতিরোধক শক্তি মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এখন কোটা সংস্কার বা বাতিল তো দূরের কথা এখন আন্দোলনকারী নিজেদের জীবন ও শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়েই তারা আতঙ্কে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিবদমান পক্ষগুলো যেভাবে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন তাতে হয়তো কোনভাবেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঠেকানো গেলেও যেতে পারে। কিন্তু এই মুখোমুখি ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় যে ক্ষত বা গর্ত তৈরি হচ্ছে তা হয়তো আগামী এক শতাব্দীতেও পূরণ করা সম্ভব হবে না। এটা নিশ্চিত করে বলার সুযোগটা থেকেই যাচ্ছে।

একথা অস্বীকার করা যাবে না যে, সরকারের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই কোটা সংস্কার আন্দোলন আবারও দানা বেঁধে উঠেছে। কারণ, শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরকারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাই মনে করা হচ্ছে যে, সরকার কোটা সংস্কার বা কোটা পদ্ধতি বাতিলে মোটেই আন্তরিক ছিল না বরং আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্যই অপ্রত্যাশিতভাবে চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এখন এমনটিই মনে করছেন সকল শ্রেণির মানুষ। এই ঘোষণার পর ছাত্র আন্দোলন স্থগিত হয়ে গেলেও সরকারের কর্তাব্যক্তিরা একেকজন একেক কথা বলেছেন এবং এতদবিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল হতে জটিলতর করে তোলে এবং পরিস্থিতি ক্রমাবনতিশীল হয়ে ওঠেছে।
এমনকি আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃত হুমকি-ধামকি ও পিটিয়ে লম্বা করার ঘোষণা এবং সেই ঘোষণার প্রেক্ষাপটেই কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক নেতাকে রীতিমত অর্ধচন্দ্র শুধু নয় বরং উত্তম-মধ্যম দেয়ার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল হতে জটিলতর করে তুলেছে। আর সে ধারাবাহিকতায় সারাদেশেই এখন উত্তম-মধ্যম অভিযান চলছে। আর তা কাহাতক চলবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আর এখানেই সব শেষ হয়নি বরং আন্দোলকারীদের বিরুদ্ধে আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারায় মামলা এবং আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনী কর্তৃক আটক করার ঘটনা বিষয়টি নিয়ে সরকারের অবস্থান খুবই স্পষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, সরকার কোটা সংস্কার বা বাতিলে অতীতে মোটেই আন্তরিক ছিল না বা এখনও নয়। বরং দলীয় শক্তি ও রাষ্ট্রীয় শক্তির ব্যবহার করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঔপনিবেশিক শাসন আমলের সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনের আদলে দমন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর সার্বিক পরিস্থিতি সেদিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে। কিন্তু এর পার্শপ্রতিক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হলেও কেউ আশ্চর্য হবে না।
গত ৩০ জুন আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর পরিস্থিতি নতুন মোড় নিয়েছে। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠন এখন রাজপথে বেশ তৎপর। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে বেশ মারমুখী অবস্থান গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কোটা আন্দোলনের অকুস্থল শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের মারধর করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ৩০ জুনের ভিকটিমদের নামে মামলা রুজু করে কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করাও হয়েছে। তাদের কেউ কেউ এখন রিমান্ডেও আছেন। একটি যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নিয়ে সরকারের এমন নেতিবাচক অবস্থান কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বরং তা সাংবিধানিক বা আইনের শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন। আর যে দেশে রাষ্ট্রই আইনলঙ্ঘনের মহড়া প্রদর্শন করে দেশে আইনের শাসন আশা করা অরণ্যে রোদন বৈ কিছু নয়।

জনমনে শান্তি-শৃক্সক্ষলা ফিরিয়ে জানমাল, ইজ্জত-সম্ভ্রমের নিরাপত্তা প্রদান করার দায়িত্ব সরকারের। সকল নাগরিকের রাজপথে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও কর্মসূচি পালনের অধিকারও সংবিধানসম্মত। কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করা যেমন সংবিধান সম্মত, ঠিক তেমনিভাবে সে আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ বিরোধিতা করার সুযোগ সংবিধান দিয়েছে। কিন্তু তা অবশ্যই হতে হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠন যে সহিংস পথ বেছে নিয়েছে তা সংবিধান ও আইনের শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন। গণতন্ত্রে বাকস্বাধীনতার বিষয়টি স্বীকৃত। আর সরকারের দায়িত্ব হলো সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করা; তা লঙ্ঘন নয়। যে সরকার সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করতে পারে না সে সরকারকে কোনভাবেই সফল বলার সুযোগ নেই।
আমাদের সংবিধানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘The republic shall be a democracy in which fundamental human rights and freedom and respect for the dignity and worth of the human person shall be guaranteed.’ অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্ত্বার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও তাতে কোনো অগ্রগতি না দেখে ফের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। কারণ, আন্দোলনকারীরা (১-এর কলামে দেখুন)
সংস্কারের কথকতা মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে কোন অগ্রগতি দেখেননি। তাই তারা এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ হওয়ার সঙ্গত কারণও ছিল। কারণ, বিষয়টি নিয়ে সরকার পক্ষ শুধু সময় ক্ষেপণের কৌশলই গ্রহণ করেছিল বলে মনে করার যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। ফলে তা গত ৩০ জুনের অপ্রীতিকর ঘটনার অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের ওপর শুধু হামলার ঘটনাই ঘটেনি বরং একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আন্দোলকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে। সরকার পক্ষ থেকে কোটা সংস্কারের ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের বারবার আস্বস্ত করা হলেও এ বিষয়ে দৃশ্যত কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। এমনকি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কোন অগ্রগতি তো জানাতেই পারেনি। যা সরকারের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতা পরিচয় বহন করে।

মূলত কোটা পদ্ধতি বাতিল বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদে ঘোষণার পরও এই বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সরকারি প্রজ্ঞাপন না পেয়ে ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ফের আন্দোলন শুরু করেছে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছিল। কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণের দাবিও জানিয়েছিল তারা। কিন্তু মৌখিকভাবে তাদের দাবি মেনে নেয়া হলেও বাস্ততে এর কোন প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে সার্বিক পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে। সরকার ছাত্রদের এই যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করতে চাইছে। কিন্তু রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে কোটা বাতিলের ঘোষণা আশার পর সে অবস্থান থেকে ফিরে আসা সরকারের জন্য কল্যাণকার নাও হতে পারে। সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করার আন্দোলন আর সরকারের আন্দোলন দমনের বিপরীতমুখী তৎপরতার কারণে সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে এর দায় সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারে না। কারণ, দেশে শান্তি-শৃক্সক্ষলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারেরই।

মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলন শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলন। সংবিধানে সকল নাগরিকের চাকরি লাভের ক্ষেত্রে সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই আন্দোলন দমাতে সরকার ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়ে একটি খারাপ নজীর ও অগণতান্ত্রিক কাজ করেছে বলেই মনে হচ্ছে। আসলে শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি রেখে সেটাকে সংস্কারের জন্য আন্দোলন করলেও সরকার অনেকটা আবেগতাড়িত হয়েই পুরো কোটা পদ্ধতিই বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে এবং এখন তারা সে অবস্থান থেকে সরে আসার কথাই ভাবছে বলে মনে করার কারণ আছে।
আসলে শুরুতেই সরকারের বক্তব্য নিয়ে সন্দেহের তৈরি হয়েছিল। আন্দোলন দমাতেই যে এই কোটা বাতিলের এই কথিত ঘোষণা ছিলো সেটা এখন স্পষ্ট। কারণ, সরকারের কোটা বাতিলের ঘোষণা ছিল শুধুমাত্র কৌশলগত। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটা বাতিল কিংবা সংস্কার যেটাই হোক সরকারের উচিত আন্দোলনকারীদের সাথে অনাকাক্সিক্ষতভাবে বিরোধে না জড়িয়ে অতি দ্র”ত এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অন্যথায় বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আরও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। যা কারো জন্যই হয়তো শুভ হবে না।

http://www.dailysangram.com/post/337184