জাতীয় প্রেস কাবে নন-এমপিও শিক্ষকদের আমরণ অনশন
৪ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ১০:৫৯

শর্ত শিথিল করে এমপিওভুক্তির দাবি

অনশনে অসুস্থ শিকের সংখ্যা বাড়ছেই

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি শিাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবিতে গত ৯ দিনের আমরণ অনশনে অসুস্থ শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়ছেই। গতকাল নবম দিনে অসুস্থ হয়েছেন আরো ২৭ জন। অনশনরত শিক্ষক নেতারা জানান, এক দিনে অসুস্থতার সংখ্যা এটাই সবচেয়ে বেশি। এ ২৭ জনকে গতকাল থেকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দেয়া হয়েছে। গত ৯ দিনে মোট ১৯২ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাদের সবাইকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

গতকাল পর্যন্ত গুরুতর অসুস্থ ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্য থেকে নন-এমপিও শিাপ্রতিষ্ঠান শিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গতকাল বেলা ১১টার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারো অনশনে যোগ দিয়েছেন। গত ২৫ জুন থেকে জাতীয় প্রেস কাবের বিপরীত দিকের ফুটপাথে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে।
গতকাল বিকেলে ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, গত ২২ জুন নন-এমপিও শিাপ্রতিষ্ঠান শিক-কর্মচারী ফেডারেশন রাষ্ট্রপতির কাছে যে স্মারকলিপি দিয়েছিল, রাষ্ট্রপতি সংগঠনের সভাপতি বরাবরে তার জবাব দিয়ে একটি পত্র দিয়েছেন। তাতে, রাষ্ট্রপতি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি পাঠিয়েছেন।
আনোয়ার হোসেন আরো জানান, গতকাল বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদের সাথে তার (যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন) নেতৃত্বে সাতজন শিক্ষক নেতা সাক্ষাৎ করেন সচিবালয়ে তার দফতরে। অতিরিক্ত সচিব শিক্ষক নেতাদের কাছে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। শিক্ষক নেতারা তার জবাব দেন। অতিরিক্ত সচিব শিক্ষক নেতাদের কাছে তাদের দাবি ও তার যৌক্তিকতাসহ নানা বিষয় জানতে চান। তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের অনুরোধ জানালে শিক্ষক নেতারা বলেন, আলোচনার ব্যাপারে তাদের কোনো আপত্তি নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে তারা তাতে সাড়া দেবেন।
এ দিকে গতকালও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন অনশনরত শিক্ষকদের সাথে অনশনস্থলে সংহতি প্রকাশ করে। এদের মধ্যে রয়েছেন লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও তেল-গ্যাস-জ্বালানি সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর মাহমুদা খানম প্রমুখ।
লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ অনশনস্থলে এসে সংহতি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এভাবে শিকদের, বিশেষ করে নারী শিকদের রাস্তায় অবস্থান করাটা বিব্রতকর। আলোচনা করে সরকার সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিলে শিকেরা শ্রেণিকে ফিরে যাবেন।

আন্দোলনের সাথে একাত্মতা
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো: সেলিম ভূঁইয়া, মহাসচিব চৌধুরী মুগীস উদ্দিন মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান কাজী আব্দুর রাজ্জাক, প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত মহাসচিব মো: জাকির হোসেন গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করেছেন।
বিবৃতিতে ঐক্যজোটের নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের যৌক্তিক দাবিতে জাতীয় প্রেস কাবের সামনে অনশনে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবি পূরণের ন্যূনতম আশ^াসও দেয়া হয়নি। নেতারা আরো বলেন, অবিলম্বে শিক্ষক কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি পূরণের আশ^াস দিয়ে অনশন না ভাঙ্গালে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকারকে শিক্ষক সমাজের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/330070