৩ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:৪৯

কলেজে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অন্য রকম ভোগান্তি

পয়লা জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণীর কাস শুরু হলেও, নিশ্চায়নের পর এখন পর্যন্ত ভর্তি হতে পরেনি অনেক শিক্ষার্থী। তারা অন্য রকম ভোগান্তিতে পড়েছে। কয়েক দিন ধরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কলেজ পরিদর্শকসহ বোর্ড কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এসব শিক্ষার্থী। তারা ভর্তি হতে চায়, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কলেজ থেকে তাদের ভর্তির সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলেছে ভর্তি হতে ইচ্ছুকদের। 

এ দিকে বোর্ডে তিন দফায় আবেদন করেও যে ২৮ হাজার ৬৬৭ শিক্ষার্থী কোনো কলেজ পায়নি; তারা আবেদন করলে নতুন করে ভর্তির সুযোগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ।
তিনি জানান, নানা সীমাবদ্ধতা ও কারণে ভর্তি হতে পারেনি অথবা আবেদন করেও কলেজ পায়নি, তাদের জন্য আবার ভর্তির সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। তাই অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ অনুমোদন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। ৮ জুলাই থেকে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন ভর্তির আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে। তা অবশ্যই অন-লাইনে। জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে কোনো কিছুই জানানো বা বলা হয়নি বোর্ডকে।
কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ জানান, ৭ জুলাইয়ের মধ্যেই ভর্তির বিজ্ঞপ্তি বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) দেয়া হবে।
কাস শুরু এবং এ পর্যন্ত কত শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে পেরেছে, জানতে চাইলে কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন বলেন, ৫ জুলাইয়ের আগে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, এখন যারা কলেজে ভর্তি হয়েছে, তাদের কাস চলছে। পাঠদান শুরু হলেও খুব সিরিয়াসলি শুরু হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষের পরই কাসে নিয়মিত পাঠদান শুরু হবে। এমন নির্দেশনাই রয়েছে কলেজগুলোর প্রতি।
নিশ্চায়নের পরও কলেজ থেকে ভর্তি হতে ইচ্ছুকদের হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এমন অভিযোগ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সামান্য। কারিগরি ওয়েবসাইট কেন্দ্রিক কিছু সমস্যা হচ্ছে, তা তাৎক্ষণিকভাবেই সমাধান করে দেয়া হচ্ছে।
আন্তঃবোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ভর্তির জন্য মনোনয়ন ও নিশ্চায়ন করা ১২ লাখ ২৮ হাজার ১৫ শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ভর্তি সম্পন্ন করেছে। তবে যারা কলেজ পেয়েও ভর্তি হয়নি, এমন শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তারা কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করার পর যে কলেজে তাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, সেটি তার পছন্দ হয়নি। অনেকে মাইগ্রেশন বাতিল চেয়ে বোর্ডে আবেদন করেছে, তাই ভর্তি হয়নি।
বোর্ড সূত্রে বলা হয়েছে, কলেজ নিশ্চায়নের পরও যারা ভর্তি হয়নি, তাদের নতুন করে অবশ্যই আবেদন করতে হবে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি হয়নি, তাদের ভর্তির সুযোগ বাতিল হয়ে গেছে। তাদের আগামী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন করতে হবে।
আবেদন করেও ২৮ হাজার ৬৬৭ শিক্ষার্থীর কলেজ না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন বলেন, এই ২৮ হাজারের বেশি আবেদনকারী তিন দফায় আবেদন করার সময় একই কলেজেই বারবার আবেদন করেছিল। এ কারণেই আসন খালি না থাকায় এবং মেধা তালিকায় স্থান না পাওয়ায় তারা কলেজ পায়নি। এখন তাদের নতুন করে আবেদন করতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন করে আবেদনের সময় ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই যে সব কলেজে আসন খালি রয়েছে, সেখানেই আবেদন করতে হবে। আসন খালি রয়েছে এমন কলেজে আবদন করলেই তাদের কলেজ দেয়া হবে। তিনি বলেন, শেষ দফায়ও যদি ভর্তি হতে ইচ্ছুকেরা একই ভুল করে, তবে তাদের ভর্তির কোনো সুযোগ থাকবে না।


 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/329697/