২ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ১০:৪৫

রাশেদগ্রেফতার, কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলা মারধর

আরও এক নেতাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পুলিশের অস্বীকার * ঢাবিতে দিনভর ছাত্রলীগের মহড়া * রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দফায় দফায় হামলা * চট্টগ্রামে দুই সংগঠককে মারধর * আজ থেকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবরোধ * বিএনপির নিন্দা

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছাত্রলীগের এক নেতার দায়ের করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রোববার সকালে মিরপুর-১৪ ভাষানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১২ নম্বর বাসা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একই এলাকা থেকে একই সময়ে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ খানকেও তুলে নেয়া হয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তা স্বীকার করা হয়নি। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা-নির্যাতন ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবিতে আজ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি আজ সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও চট্টগ্রামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শাহবাগে আন্দোলনকারী সন্দেহে কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশে দেয় তারা। সকালে রাবি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর প্রথমে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বিক্ষিপ্তভাবে গোটা ক্যাম্পাসে লাঠি, বাঁশ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া করা হয়। সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দফায় দফায় হামলায় অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। চট্টগ্রামেও কোটা সংস্কার আন্দোলনের দুই সংগঠককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে ফেসবুক লাইভে এসে রাশেদ খান বলেন, ‘ভাষানটেক মজুমদারের মোড় এলাকায় ডিবি আমাকে ধাওয়া দিয়েছে। আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমি একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। সবাই আমাকে বাঁচান। প্লিজ, আমাকে বাঁচান। আমার ভিডিওটি সবাই শেয়ার করুন। সাংবাদিকদের জানান।’ চার মিনিটের ওই ভিডিওটিতে তিনি বারবার একই ধরনের আর্তি জানান।
রাশেদ খানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলাটি করেন ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয়। মামলার এজাহারে জয় উল্লেখ করেন, কিছুদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটাপ্রথা বাতিলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ প্রক্রিয়াধীন। তারপরও রাশেদ খান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৭ জুন রাত ৮টা ৮ মিনিটে লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মনে হচ্ছে, তার বাপের দেশ, সে একাই দেশের মালিক, ইচ্ছা মতো যা ইচ্ছা বলবে, আর আমরা কোনো কথা বলতে পারব না।’ এটি একদিকে যেমন প্রধানমন্ত্রীর জন্য মানহানিকর, অন্যদিকে তার বক্তব্যটি নাশকতাকে উসকে দিচ্ছে। এজাহারে আরও বলা হয়, রাশেদ খান মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী চাকরিতে কোটাপ্রথা বাতিল করে সরকারি ঘোষণা বাস্তবায়ন না করায় শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংবাদ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরসহ সাত শিক্ষার্থী আহত হন।
রাশেদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৯ জুলাই : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে রাশেদ খানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৯ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। রোববার মামলার এজাহার আদালতে এলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আমিনুল হক শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমানকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

ঢাবিতে দিনভর ছাত্রলীগের মহড়া-মারধর : রাজধানীর শাহবাগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী সন্দেহে অন্তত ৬ জনের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। পরে তাদের শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। আন্দোলনকারীরা শাহবাগে জড়ো হতে পারে- এমন খবরে আগে থেকেই শাহবাগে অবস্থান নিয়েছিল ছাত্রলীগ। যদিও পরবর্তী সময়ে আন্দোলনকারীরা আর শাহবাগে আসেনি। এদিকে রোববার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহড়া দেয় ছাত্রলীগ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. আল জুবায়ের বলেন, তারা আশপাশে দাঁড়িয়ে থেকে ফেসবুকে গুজব ছড়াচ্ছিল। তাদের হাতেনাতে ধরে আমরা পুলিশে সোপর্দ করেছি। পুলিশ জাস্টিফাই করে ব্যবস্থা নেবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক সৈয়দ আরাফাতও সেখানে ছিলেন।
এ বিষেয় রোববার সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস যুগান্তরকে বলেন, ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে কীভাবে আটক করা হয়েছে জানি না। আমি মাত্র কোর্ট থেকে এসেছি।
সার্বিক বিষয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, ডিবি পুলিশের পরিচয়ে আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান ও মাহফুজ খানকে তুলে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে সোমবার (আজ) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে ক্যাম্পাসগুলোয় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় সংস্কৃতিকর্মী লাঞ্ছিত : এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে শরীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক সংস্কৃতিকর্মী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইক অ্যাকশনের পরিচালক মুকাভিনেতা মীর লোকমান। শনিবার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। রোববার লাইব্রেরির সামনে তাকে পেয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণ জানতে চান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা সাদ বিন কাদের, রিয়াদ হাসান এবং মোহাম্মদ নাজিম। কিছুক্ষণ পর জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রচারবিষয়ক উপসম্পাদক নজরুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান বকুল সেখানে আসেন। তাদের মধ্যে একজন মীর লোকমানকে থাপ্পড় দেন। তবে অভিযুক্তদের দাবি, তাদের সঙ্গে মীর লোকমানের কথা হয়েছে, তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে এ ঘটনায় শাস্তি চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানীর কাছে আবেদন করেছেন ওই সংস্কৃতিকর্মী।
মশিউর কারাগারে : কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার মামলায় মশিউর রহমান নামে এক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম আমিনুল হক এ আদেশ দেন। এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক বাহাউদ্দিন ফারুকী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর ওই আদেশ দেন।

রাবিতে দফায় দফায় হামলা : রাবি প্রতিনিধি জানান, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরুর পর ৯টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে যায়। তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। কেউ কেউ ধারালো অস্ত্র, বাঁশ ও লাঠি নিয়ে ধাওয়া করে। আবদুল্লাহ শুভ ও অন্তর নামে দুই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বর, পরিবহন মার্কেট, চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন, শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় মারধর করে তারা। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ব্যানার নিয়ে চলে যায়। তারা ক্যাম্পাসে বাইক নিয়ে মহড়া বের করে ভীতি সৃষ্টি করে। কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক স্লোগানও দিতে থাকে।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদুল আলম বলেন, আমরা গ্রন্থাগারের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রুনু নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাদের গালি দিয়ে বলে, ‘তোরা এখানে কী করছিস? কাজকর্ম নেই। দ্রুত পালা, না হলে জানে মেরে ফেলব। পরে তারা ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করে। আমাদের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তারা ভয়ে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এর আগে সকালে আন্দোলনকারীদের ডাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। রাবির আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক মাসুদ মোন্নাফসহ ১০-১২ জন সেখানে যান। এর মধ্যে মাসুদ মোন্নাফসহ দু’জনকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন প্রক্টর ও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। সেখান থেকে বেরিয়ে আন্দোলনকারীরা জানান, তারা কর্মসূচির জন্য প্রক্টরের অনুমতি চেয়েছিলেন। প্রক্টর তা না দিয়ে উল্টো হুমকি দিয়েছে। কর্মসূচি পালনের সময় কোনো হামলার শিকার হলে কর্তৃপক্ষ দায় নেবে না বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।

জানতে চাইলে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে, আন্দোলনের নামে একটি পক্ষ ক্যাম্পাসের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। তাই কোনো কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি। তাদের ডেকে কথা বলেছি। তারা দ্রুত ক্যাম্পাস থেকে চলে যাবে। নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা কারও ওপর হামলা করিনি। ক্যাম্পাসে প্রতিদিনের মতো অবস্থান নিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা না রেখে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, তাদের ছাত্রলীগ অবশ্যই প্রতিরোধ করবে।
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। পরে তারা গ্রন্থাগারের সামনে সমাবেশ করে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

চট্টগ্রামে দুই সংগঠককে মারধর : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, শনিবার ঢাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থী। মিছিলটি ষোলশহর রেল স্টেশনে গিয়ে শেষ হয়। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের দুই সংগঠক তোফায়েল আহমেদ ও মো. আরজু রেল স্টেশনে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের পাঁচ-ছয়জন কর্মী এসে তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে বলে চট্টগ্রামে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা আনোয়ার হোসেন জানান। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, মিছিল কিংবা হামলার কোনো সংবাদ আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগও করেনি।

শাবিতে কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের বাধা : শাবি প্রতিনিধি জানান, বেলা ১১টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন শুরুর আগেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হুমকিধমকি দিয়ে ব্যানার কেড়ে নেয়। এছাড়া আন্দোলনের সিলেট শাখার সমন্বয়ক শাবি শিক্ষার্থী মো. নাসির উদ্দিনকে শাহপরান হলে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শাবির যুগ্ম আহ্বায়ক এনএইচ খন্দকার নোমান বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিনকে তুলে নেয়া হয়। হুমকি দেয়ার কারণে আমরা মানববন্ধন করতে পারিনি। এ ব্যাপারে শাবি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, আন্দোলনকারীদের মানববন্ধনে আমাদের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়নি। তাদের কর্মসূচি না করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, তারা আমাদের কথা রেখে চলে গেছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/65373