১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ১২:৩৫

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যার অবনতি

ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশজুড়ে আবারো বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে অনেক এলাকা। বিভিন্ন নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নি¤œাঞ্চলের বাসিন্দারা। দ্বিতীয় দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক প্লাবিত হয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে আবারো বেড়েছে সিলেটবাসীর দুর্ভোগ। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার উপরে আছে। বন্যায় ১৩টি উপজেলার ৯৫টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৪১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে আবারও বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি। বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে তিস্তার পানিও। চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলসহ নি¤œাঞ্চলের বন্যা কবলিত ২ লক্ষাধিক মানুষ।

টাঙ্গাইলে প্রধান তিন নদী যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাইয়ের পানি আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায়, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। শাখা নদীগুলোর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে। কয়েকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদের বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলী জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা তলিয়েছে। জামালপুরে বন্যার পানিতে ৪ জনের প্রাণহানিসহ প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গত ১২ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা থেকে জোবায়ের আলী: গাইবান্ধায় আবারো বাড়ছে নদনদীর পানি। বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও আবারো ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনও বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট, তিস্তা, করতোয়া নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ ৪ উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। প্রকট আকার ধারণ করেছে শুকনো খাবার, গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানির।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্টা, আউশ ধান ও আমন বীজতলাসহ আড়াই হাজার হেক্টরের অধিক জমির ফসল। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষ শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১২ সে. মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর পানি সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধা জেলায় ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েকদিন নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও আবারও বাড়তে শুরু করেছে।

বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি। পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন জেলার চার উপজেলার চরাঞ্চল ও নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। গত ১০ দিন ধরে অসহনীয় দিন পার করছেন তারা। নতুন করে পানি বাড়তে থাকায় তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।বন্যায় অনেকের বাড়িঘরে পানি ওঠায় তারা নৌকা বা উঁচু ¯’ানে অব¯’ান নিয়েছেন। দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট। জ্বালানির অভাবে চুলা জ্বলছে না। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকট থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বানভাসিরা। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার এবং শহরে নিউ ব্রিজ স্টেশনে ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে ঘাঘট নদের পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ও করতোয়া নদের পানি বিপৎসীমার

অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের চর খামারজানি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাই মিয়া। তিনি বলেন, ‘টানা ১০ দিন ধরে ঘরের বাইরে পানি। বউ- ছোল নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কাজ-কাম নাই, হাতে টাকা নাই। থাকার কষ্ট, খাবারের কষ্ট।’হায়দার আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘দুদিন পানি কমলো, গতকাল সকাল থেকে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। একদিকে আমাদের নিজের খাবার নিয়ে চিন্তা, অন্যদিকে গরুর খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন কী করবো বুঝে উঠতে পারছি না।’

কুড়িগ্রামে বন্যার্তদের দুর্ভোগ বাড়ছে : কুড়িগ্রাম থেকে মোস্তাফিজুর রহমান : চলতি প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্যায় উদ্বাস্তু মানুষজন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। পানিবন্দী হাজার হাজার পরিবারের প্রায় সোয়া ২ লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে নতুন করে অতিমাত্রায় ভারী বর্ষণ আর উজানের ভারতীয় ঢলে নতুন করে পানি বাড়তে শুরু করায় নতুন নতুন এলাকার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় জেলার পানিবন্দী মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই-২০২৪ইং) পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্যানুযায়ী, জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ৩ নদীর পানি ৫ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া-২৫, উলিপুরের হাতিয়া পয়েন্টে-১৯, এবং চিলমারী পয়েন্টে-৪০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার তথ্য বলছে, চলমান বন্যায় জেলার ৯ উপজেলার ৫৫ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৭ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্লাবিত এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দাবী, পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষাধিক।
বুধবার (১০ জুলাই-২০২৪) থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তা মরার উপর খারার ঘায়ে পরিনত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও বাঁধে আশ্রয় নেওয়া লোকজনও বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। গবাদিপশু খাদ্য সংকট নিয়ে দুর্ভোগের মাত্রা চরমে পৌঁছেছে।

কুড়িগ্রামে বন্যায় লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন জনগণ এবং জনপ্রতিনিধি। পরিস্থিতির অবনতি হয়ে বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্লাবিত এলাকার মানুষজন। আশ্রয়, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে নিদারুণ কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বানভাসিরা। এ অবস্থায় প্লাবিত এলাকায় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিক এবং সংশ্লিষ্টরা।

আশঙ্কাজনক এমন পরিস্থিতিতে সরকারী সহায়তাই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে বন্যা আক্রান্তদের। রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কিছু শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারে অপ্রতুল। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দরকার বন্যার্তদের জন্য।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় সোয়া দুই লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী। বন্যা কবলিতদের জন্য এখন পর্যন্ত ৫৮৭ মেট্রিকটন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৪ হাজার ৩৬০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। তবে গো খাদ্যের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই বলেও জানা গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে জেলায় ২৯৫টি বিদ্যালয় পানিবন্দী ও ২৮১ টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে এবং নদীগর্ভে বিলীন ০৩টি বিদ্যালয় স্থানান্তরিত করা হয়েছে ০৪টি বিদ্যালয়।

শাহজাদপুংের বন্যায় সড়কের ৬০ মিটার ধস : ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাশিনাথপুর-শক্তিপুর সড়কের ৬০ মিটার বন্যায় ধসে গেছে। এতে আশপাশের নয় গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান জানান, বুধবার রাতে সড়কটির চিথুলিয়া অংশে ভেঙে গেছে। প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সড়কটি এখনও মেরামত করা হয়নি। অথচ এ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ইউনিয়নের কায়েমকোলা, বাঙ্গালপাড়া, সায়েস্তাবাদ, সরাতৈল, বৃ-আঙ্গারু, চর আঙ্গারু, বনগ্রাম, কাশিনাথপুর ও চিথুলিয়া গ্রামের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।তিনি আরও জানান, এ নয় গ্রামে বহু দুগ্ধ খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে প্রতিদিন ৭০০থেকে ৮০০ মণ দুধ উৎপাদন হয়। যা বাঘাবাড়ি মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ৭-৮ কিলোমিটার বেশি এলাকা ঘুরতে হচ্ছে। এদিকে সঠিক সময়ে দুধ পৌঁছাতে না পাড়লে সেটি নষ্ট হয়ে খামারি ও কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।

শাহজাদপুর উপজেলা এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী এ এইচএম কামরুল হাসান রনি বলেন, আমরা দ্রুত ওই সড়কের মেরামত কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে সড়কটি ভাঙা ও পানির গভীরতা বেশি হওয়ায় কাজ করতে একটু বেশি সময় লাগছে। তবুও আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে মেরামত কাজটি সম্পন্ন হবে।

লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলায় ভয়াবহ ভাঙন : মোঃ লাভলু শেখ লালমনিরহাট থেকে : লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি শুক্রবার ভোর বেলা থেকে কমলেও ভয়াবহ ভাংঙ্গন অব্যহত। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা জেলায় ২০ হাজার থেকে কমে ৫ হাজারে নেমেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে দূভোগের যেন শেষ নেই। চাহিদার তুলনায় এান কম। জানা গেছে, লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কিছুতা কমলেও ভয়াবহ নদীর ভাঙ্গন অব্যহত। লালমনিরহাট জেলায় নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদী পাড়ের হাজারো পরিবার। হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদ্রাসা। প্রতি বছর নদী ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে বসতভিটা আর আবাদি জমিসহ নানা স্থাপনা। ২ দিকের ভাঙনে জেলার মানচিত্র প্রতি বছর সংকুচিত হয়ে আসছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুজ্জামান সরকার বাদল শুক্রবার ১২ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখ বিকেল সাড়ে ৫ টায় জানান, তার ইউনিয়নে ১৬ শত পরিবার পানিবন্দী হলেও শুক্রবার ভোর বেলা থেকে পানি কমে যাওয়ায় এখন ২ শত পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এান বিতরণ করা হয়েছে। তবে চাহিদা তুলনায় সামান্য। বন্যাকবলীত ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে পযাপ্ত পরিমাণে এান বিতরণের জোড় দাবী জানান, এলাকাবাসী।

জেলায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হলেও শুক্রবার ভোর বেলা থেকে পানি কমে এখনো ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বাপাউবো, পানি ভবন, ঢাকা থেকে শুক্রবার ১২ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখ সন্ধ্যা ৬ টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসাদের। তিস্তার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রক্ষায় কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। লালমনিরহাট এান অফিস জানান, পানিবন্দী ও ভাংঙ্গন কবলীত পরিবারদের জন্য ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা ইতোমধ্যে বিতরণ শুরু করা হয়েছে।

https://www.dailysangram.info/post/561131