২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১১:৫০

পানি কমছে : দূষণে রোগের কবলে বানভাসিরা

বন্যার পানি কমার সঙ্গে পরিবেশ দূষণে নানা রোগের কবলে পড়েছেন বানভাসিরা। পরিবেশবিদরা বলছেন, বন্যায় ময়লা আবর্জনা জমে নির্মল পরিবেশ দূষণের শিকার হয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে ভেসে আসা নানা বর্জ্য ময়লা জমে থাকায় বন্যায় আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হচ্ছে। বর্জ্য নিষ্কাশনব্যবস্থা দুর্বল থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।

অন্যদিকে রোগ বালাইয়ের মধ্যে সবচাইতে বেশী কলেরা ও ডায়রিয়া রোগের আাক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, রোগের প্রাদুর্ভাব থাকলেও এখনো আশংকাজনক কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।

তবে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বন্যার পানি যেহেতু কমছে এ সময় ডায়রিয়াসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগগুলো বাড়তে পারে। যেহেতু বন্যার ময়লা পানির সংস্পর্শে লোকজন এসেছে, সেহেতু চর্মরোগও বাড়ছে।

কিন্তু এই রোগগুলো ছোঁয়াচে কিংবা সংক্রামক না হওয়ায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকেই চিকিৎসা নেয়া যাবে জানিয়ে তারা বলেন, হাসপাতালগুলোতে সরকারিভাবে ইতোমধ্যে জরুরি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। এবার বন্যায় কবলিতদের তেমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয়নি। স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসাই যথেষ্ট।

দ্য আমেরিকান জার্নাল ফর ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়, বিগত সময়ে বন্যায় ডায়রিয়াসৃষ্ট কলেরা ছিল সবচেয়ে প্রচলিত রোগ। এর পরই ছিল রোটা ভাইরাস। এ ছাড়া সে সময় বন্যায় প্রায় ৩৫ শতাংশ পানিবাহিত রোগই ছিল ডায়রিয়া। এতে গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৪৫ হাজার রোগীর মধ্যে ১৫৪টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, যা ছিল মোট মৃত্যুর ২৭ শতাংশ।

এ দিকে বন্যায় নীলফামারীর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত শুরু না হওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল বন্ধ হওয়ায় সুনামগঞ্জে এখন বিপদসীমার নিচ দিয়ে বইছে সুরমার পানি। এতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে।
আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তবে সুনামগঞ্জের হাওর বন্যার পানিতে টইটম্বুর থাকায় এলাকার পানি কমেছে ধীরগতিতে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, এ বছর জেলায় ৮১টি ইউনিয়নের প্রায় আট লাখ ৫৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছিল।
সিলেট শহর থেকে বন্যার পানি নামলেও স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারেনি মানুষ; যে কারণে খাবার সঙ্কট রয়েছে কম আয়ের মানুষের। এ দিকে ড্রেন আর খালের ময়লার পানির কারণে নগরীর ১৫ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

নেত্রকোনার উব্দাখালী নদীর পানি না কমায় কলমাকান্দায় দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চলাচল। নীলফামারীতে পানি কমতে শুরু করলেও তিস্তার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নিয়ে শঙ্কায় আছে বহু মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, শিগগির বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে।

এ দিকে বন্যার উন্নতি হওয়ায় লালমনিরহাটে তিস্তা ধরলা পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/844502