২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১১:২৮

কুরবানির আয়োজনেও দুর্নীতির কালো ছায়া

-আলী আহমাদ মাবরুর

মাত্রই ঈদুল আজহা উদযাপন করলো পুরো দেশ। একজন মুসলিম হিসেবে ত্যাগের মহিমায় সিক্ত হয়ে এই দিনটিতে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পছন্দসই পশু কুরবানি দেই। যার যা সামর্থ্য সে অনুযায়ী কুরবানির পশু পছন্দ ও ক্রয় করা হয়। সামর্থ্যবান মানুষ এক বা একাধিক পশু কুরবানি দেয়। আর যাদের সামর্থ্য কম, তারা হয়তো কয়েকজন মিলে পশু কুরবানি দেওয়ার চেষ্টা করেন। এটিই বাংলাদেশের রেওয়াজ এবং যুগ যুগ ধরে এই সংস্কৃতিই আমাদের এখানে চলে আসছে।

কুরবানির ঈদের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি লক্ষনীয় ও পালনীয় তাহলো, নিছক পশু কুরবানির মধ্যেই আসলে এই ঈদের স্বার্থকতা নেই। কুরবানির পুরো প্রক্রিয়াটি মুসলিম জাতির পিতা, খলিলুল্লাহ হজরত ইবরাহীম আ. এর পালিত সুন্নাহ’র ধারাবাহিকতা। কুরবানির এ প্রক্রিয়ায় তিনি যেভাবে সাড়া দিয়েছেন এতে করে তার মর্যাদা আল্লাহর কাছে আরো বেড়ে গিয়েছিল। আল্লাহ পাক ত্যাগের পরীক্ষায় হজরত ইবরাহীম আ. এর উত্তীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন,

“যখন ইবরাহীমকে তাঁর রব কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করে দিলেন, তখন রব বললেন, আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানাবো।” (সুরা বাকারা: ১২৪)

হজরত ইবরাহীম আ. এর এই আন্তরিকতা কোনো একটি কাজে নয় বরং প্রতিটি কাজেই আমরা অনিবার্যভাবে দেখতে পাই। তিনি তার গোটা জীবনে যে কুরবানিগুলো করেছেন এর সবটাই ছিল শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই। বস্তুবাদী এ জীবনের স্বার্থে পড়ে আমরা অধিকাংশ মানুষ ইবরাহীম আ. এর একদম বিপরীত মানসিকতা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই এখন কেবল মানুষের প্রশংসা পেতে চান, মানুষের সামনে প্রদর্শন করতে চান যাতে তারা নিজেদের সব চাওয়াগুলোই মানুষের কাছ থেকেই পেতে পারেন।

হজরত ইবরাহীম আ. তার জীবনে অনেকগুলো পরীক্ষার ভেতর দিয়ে গিয়েছিলেন। সর্বশেষ পরীক্ষায় তাকে তার ছেলে ইসমাইল আ. কে কুরবানি করার প্রক্রিয়ায় যেতে হয়েছিল। ইসমাইল আ. ছিলেন হজরত ইবরাহীম আ. এর বৃদ্ধ বয়সের সন্তান। স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত প্রিয় সন্তান। অথচ এ সন্তানকে নিয়েই তাকে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় অবর্তীর্ণ হতে হয়। আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাকে পরীক্ষায় ফেলেন বান্দাকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করার জন্য।

ইবরাহীম আ. কে একদম শৈশবে আগুনের গর্তে নিজের জীবন বিপন্ন করে এবং তারপর নিজের বাড়ি, পরিবার, দেশ ত্যাগ করিয়ে হিজরতের মাধ্যমে তাকে পরীক্ষা করা হয়। আর জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তাকে নিজের সন্তানকেই কুরবানি করতে বলা হয়। এর আগে ইবরাহীম আ. যে কুরবানিগুলো করেছিলেন এর প্রতিটিই তাকে আরো সম্মানিত করেছে এবং আল্লাহর প্রতি তাঁর আস্থা বৃদ্ধি করেছে। তাই এবারও আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তার পুত্রকে কুরবানি করার চেষ্টা করতে ইবরাহীম আ. দ্বিধা করেননি।

অপরদিকে, তার ছেলে ইসমাঈল আ. নিজেও স্বেচ্ছায় কুরবানি হওয়ার প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যদি আল্লাহ এমনটাই চান তাহলে তা মেনে নিতে আমার কোনো আপত্তি নেই। যদিও ইসমাইল আ. তখন শিশু ছিলেন, কিন্তু তার সাহসী মন্তব্য প্রমাণ করে যে, তিনিও পিতার কুরবানি দেখতে দেখতে তার যোগ্য উত্তরাধিকারী হয়ে উঠেছিলেন এবং আল্লাহর ওপর তারও পূর্ণ আস্থা ছিল। তাই তিনিও আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এবং আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য নিজেকে কুরবানি করতে প্রস্তুত ছিলেন।
“অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইবরাহীম তাকে বললেন, হে আমার প্রিয় পুত্র। আমাকে স্বপ্ন দেখানো হয়েছে যে আমি তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত? সে বললঃ বাবা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্য ধারণকারী হিসেবেই পাবেন। যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শোয়ালেন তখন আমি তাকে ডেকে বললাম- হে ইবরাহীম তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই নেক আমলদারদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।” (সুরা সাফফাত: ১০২-১০৫)

এই কুরবানিটি ছিল হজরত ইবরাহীম আ. এবং হজরত ইসমাইল আ. এর জন্য একটি পরীক্ষা যাতে তারা দুজনই উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। যদি কারো মধ্যে আল্লাহর পথে আত্মত্যাগ করার এবং আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করার মনোভাব ও দৃঢ়তা থাকে এবং আল্লাহর পথে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের ধন-সম্পদ কুরবানি করার মতো সাহস ও দৃঢ়তা থাকে, তাহলে আল্লাহ কখনোই তার প্রকৃত বান্দাদের পরিত্যাগ করেন না। ইবরাহীম আ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আল্লাহর আরো প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। আল্লাহ তাকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।

আমরা এই ইতিহাস অনেকেই জানি, আবার অনেকে জানিও না। আমি কুরবানি দিচ্ছেন এমন বেশ কয়েকজন মানুষের সাথে কথা বলেও তাদের মধ্যে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা পাইনি। তাদের কাছে কুরবানি নিছকই পশু কুরবানি, গোশত বিতরণ ও গোশত খাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ। প্রতি বছর কুরবানি এলেই এক শ্রেনীর মানুষ কুরবানির পশু নিয়ে মায়ার বাঁধন ছড়াতে ব্যস্ত হয়ে যান। নানাভাবে মানুষ হত্যা, গুম কিংবা যুদ্ধবিগ্রহে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু নিয়ে সরব না হলেও কুরবানি পশু হত্যা নিয়ে তারা ঠিকই সরব হয়ে যান। তাদের এসব মায়াকান্নায় আমাদের সন্তানেরাও অনেক সময় প্রভাবিত হয়ে যায়। এ কারণে কুরবানির প্রকৃত চেতনা নিয়ে প্রতিটি অভিভাবকেরই তাদের সন্তানদের সাথে আলাপ আলোচনা করা প্রয়োজন। সন্তানকে ইসমাইল আ. এর ত্যাগী মানসিকতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। তবে তার আগে অভিভাবক হিসেবে নিজেদেরও ইবরাহীম আ. এর মতো করে আল্লাহর রাহে সব কিছু বিসর্জন দেওয়ার মতো মানসিকতা লালনের চেষ্টা করা দরকার।

এতগুলো কথা বলার মূল কারণ হলো, প্রকৃত চেতনা হারিয়ে নিছক কুরবানির পশু আমাদের বিবেচ্য হয়ে ওঠার কারণে সমাজে এর নেতিবাচক পাশর্^ প্রতিক্রিয়াও প্রকটভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,

“এগুলোর (কুরবানির পশু) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের অধীনস্ত করে দিয়েছেন। যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করো- এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।” (সুরা হাজ্জ: ৩৭)

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, আমাদের অনেকের মধ্যেই তাকওয়ার স্থলে জায়গা করে নিয়েছে প্রদর্শনেচ্ছা। আর প্রদর্শনেচ্ছা করার জন্য যে বড়ো বড়ো পশু কুরবানি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ধরা পড়ে, সেখান থেকেই উদ্ভব হয়েছে বেশি দামে পশু কেনার প্রতিযোগিতার। এ বছর আমি পশুর হাটে একাধিকবার গিয়েছি। যে গরু আগে ৬০-৭৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়েছে সেগুলোই এবার ১ লাখের ওপর দাম চেয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, কোনো গরুই এক লাখের নীচে পাওয়া যাবে না।

যারা মধ্যবিত্ত বা নি¤œ মধ্যবিত্ত তারা ভাগে কুরবানি দিতে গিয়েও এবার হিমশিম খেয়েছেন। কুরবানির পশুর অস্বাভাবিক দামের কারণে আমাদের আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও পরিচিতজনদের মধ্যেও অনেকেই এবার কুরবানি দিতেও পারেননি। অথচ একই বাজারে লাখ লাখ টাকা দিয়েও গরু কেনার মানুষের অভাব দেখা যায়নি। হাটের বাইরে বিভিন্ন এ্যাগ্রো ফার্ম কালচারও আমাদের দেশে শুরু হয়েছে বিগত কয়েক বছর ধরে। কাঁচাবাজারের বিকল্প যেমন সুপারশপ তেমনি গরুর হাটের বিকল্প হয়ে উঠেছে এই ফার্মগুলো। তবে, এসব ফার্মে সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকজনই বেশি যাতায়াত করে। আর ফার্মের মালিকেরাও সুযোগ বুঝে চড়া দাম হাঁকায়। আর সেই চড়া দামেই পশুগুলো বিক্রিও হয়ে যায়।

প্রদর্শনেচ্ছার এই যুগে এ্যাগ্রো ফার্মগুলো মানুষের বড়াই করার প্রতিযোগিতায় যেন বাড়তি বারুদ ঢেলে দিয়েছে। কোটি টাকার গরু ও ১৫ লাখ টাকায় ছাগল বিক্রি হচ্ছে। এবারের ঈদে অন্য সব আলোচনাকে ছাপিয়ে ১৫ লাখ টাকার ছাগল বিক্রি যেন সর্বত্রই হটকেক হিসেবে প্রচারিত হচ্ছে।

কিন্তু চড়া দামে ছাগল বা কুরবানির পশু কেনার এই প্রক্রিয়ায় দেশে চলমান ভয়াবহ দুর্নীতির বিষয়টি আবার নতুন করে সামনে এসেছে। রাজনীতিবীদ তো বটেই, এমনকী নির্ধারিত বেতনে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারাও কী ভীষণভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, এবারের কুরবানির পশুর কেনাবেচায় তা ফের প্রমাণিত হয়েছে।

১৫ লাখ টাকায় তথাকথিত উচ্চবংশীয় ছাগল কিনে এবার আলোচিত হয়েছেন মুশফিকুর রহমান ইফাত। ইফাতের বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমান। একজন সরকারি চাকরিজীবীর কলেজপড়ুয়া ছেলে কীভাবে এত বিলাসী জীবনযাপন করতে পারেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ইফাতের বাবা তাৎক্ষণিকভাবে ছেলের পরিচয়ও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

প্রথম আলোর এক অনুসন্ধানী রিপোর্ট থেকে জানা যায়, মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত গত বছরও ঈদুল আজহার সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ছয়টি পশু কিনেছিলেন। এর মধ্যে ছিল দুটি গরু, দুটি ছাগল ও দুটি ভুট্টি (খর্বাকৃতির গরু)। এই ছয় পশু কিনতে তাঁর খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

ইফাতের বাবা মতিউর রহমান এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালেরও প্রেসিডেন্ট। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও শেয়ারবাজারে প্লেসমেন্ট শেয়ারের বড় ব্যবসায়ী তিনি। বিষয়টি তিনি নিজেও অস্বীকার করেননি। তিনি মিডিয়ার কাছে ছেলের মাত্রাতিরিক্ত অর্থব্যায়ের ন্যায্যতা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ওই কোম্পানির মালিকদের কাছ থেকে কম দামে কিনে নিয়ে পরে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে অনেক মুনাফা করেছেন। অন্যদিকে, ইফাতের মা শাম্মী আখতার ওরফে শিবু মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী। শাম্মীর বাবার বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। শাম্মী ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য (ফেনী-২) নিজাম উদ্দীন হাজারীর আত্মীয়।

বৈধ পথে টাকা উপার্জন করে কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রেও অনেকে অর্থ সম্পদের মালিক হন। তবে যারা বনেদি বা বংশীয়ভাবে সম্ভ্রান্ত তারা সাধারণত এ ধরনের সস্তা কাজ করে টাকার গরম দেখাতে উৎসাহী হন না। কিন্তু যারা হুট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন, কিংবা যারা নানারকম অবৈধ কাজ-কর্মের মাধ্যমে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন, তারা টাকার একটি উত্তাপে সবসময়ই আবিষ্ট থাকেন। টাকার বড়াই দেখানোর মধ্য দিয়ে তারা সমাজে নিজেদের ক্ষমতাবান হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেন। পশু জবাই ঈদুল আজহার প্রধান অনুষঙ্গ হলেও তার অর্থ এই নয় যে সেই পশু কিনতে গিয়ে পয়সাওয়ালা মানুষেরা প্রতিযোগিতায় নামবেন। ঈদুল আজহাকে আর্থিক সক্ষমতা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শনের উপলক্ষ বানানো উচিত নয়।

শুধু গরু ছাগলের হাটের কথাই কেন বলবো, গত কয়েক বছর ধরে মানুষের অলংকার বা স্বর্ণের দামও আকাশছোঁয়া। ভরি এখন এক লাখ ১০ হাজার টাকার ওপর। অনেকেই মনে করেন, অবৈধ পথে উপার্জনকারী ব্যক্তিরা চড়াদামে স্বর্ন কেনায় অলংকারের বাজারও এরই মধ্যে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

চলতি বছরেও বাংলাদেশ দুর্নীতির সূচকে নীচের দিকে নেমেছে। রাজনীতিবীদদের উচ্চমাত্রার দুর্নীতির পাশাপাশি সরকারি কর্মচারিরাও যে ভয়াবহ মাত্রায় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত খবরগুলো তারই প্রমাণ। দুর্নীতি কমানোর অজুহাতে এবং সরকারি কর্মচারীদের আস্থায় রাখার জন্য বেতন-ভাতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হলেও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীই সরকারি চাকরি আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। দুর্নীতির এসব খবর প্রকাশ্যে আসার পরও দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে এবং অনেকক্ষেত্রেই আইনের দুর্বলতার কারণে দুর্নীতিবাজরা শাস্তি থেকে রেহাইও পেয়ে যাচ্ছে। সরকারি কর্মচারীদের দলীয়করণও এজন্য অনেকটাই দায়ী। বলা হয়, দলবাজ সরকারি কর্মচারীরা হয়ে উঠেছেন দুর্নীতিবাজ।
সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বাংলাদেশের বাস্তবতায় নতুন কিছু নয়। কিন্তু পবিত্র ঈদুল আজহার আচারাদিও এই দুর্নীতির প্রভাবে কলূষিত হয়ে পড়ছে, আফসোসটা শেখানেই।

https://www.dailysangram.info/post/559378