২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১১:২৮

ফারমার্স থেকে পদ্মা ব্যাংকে অভিনব জালিয়াতি, খেলাপির পর ঋণের তথ্য জানল গ্রাহক

ঋণ অনুমোদন করে ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন কর্মকর্তারা

বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংকে (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) অভিনব জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহককে না জানিয়ে তার নামে ঋণ অনুমোদন করে ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আর ওই ঋণ খেলাপি হওয়ার পর গ্রাহক জেনেছেন তার নামে ব্যাংকে ঋণ রয়েছে। নজিরবিহীন এ ঘটনা ব্যাংকটির বসুন্ধরা শাখায়। এ ধরনের ৩টি কেলেঙ্কারির তথ্য যুগান্তরের হাতে এসেছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে পৃথক দুটি মামলায় ৪৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। আরও একটি মামলা বিচারধীন।

বর্তমানে আসামিরা পলাতক। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর দায় চাপিয়ে পার পেতে চাচ্ছে ব্যাংকের বর্তমান কর্তৃপক্ষ। জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করলেও তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ। ঋণ আদায়ে উলটো ভুক্তভোগী গ্রাহকের নামেই সম্প্রতি অর্থঋণ আদালতে মামলা করে হয়রানি করছে ব্যাংক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত এবং ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর রায়ে জালিয়াতির বিস্তারিত উঠে এসেছে। গ্রাহকের নাম আসিফ এন্টারপ্রাইজের মোহাম্মদ সলিম উল্যাহ, আজমিরি ইলেকট্রনিক্সের আফরোজা বেগম এবং সেল হোমটেক্স ইন্ডাস্ট্রির মালিক জাহেদুর রহমান। ব্যাংকের মামলা থেকে বাঁচতে তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা ব্যাংক বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হয়েছে। কিন্তু ঘটনার দায় নেবে না এক্সিম ব্যাংক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনায় ব্যাংক কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। পুরো দায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। ব্যাংকিং খাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

জানতে চাইলে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান শনিবার যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনার দায় কোনোভাবেই ব্যাংক এড়াতে পারে না। কারণ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এ পরিমাণ ঋণ অনুমোদন হওয়ার কথা নয়।

দ্বিতীয় বিষয় হলো, এ ধরনের একটি রায়ের পর অর্থঋণ আদালত গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার কথা না।
তিনি বলেন, ব্যাংকটির বিরুদ্ধে অনিয়ম-অভিযোগ অনেকদিনের। এ কারণে ব্যাংকটিকে অন্য আরেকটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জ) করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলার রায় হয়েছে, এরা হলেন পদ্মা ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ শামছুল হাসান ভুঁইয়া, অপারেশন ম্যানেজার মাহবুব আহমেদ, ক্রেডিট ইনচার্জ মো. কাওসার হোসেন এবং কর্মকর্তা সৈয়দ মিজানুর রহমান।

দুদকের তদন্তের ভিত্তিতেই রায় দিয়েছেন আদালত। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা) বসুন্ধরা শাখায় আসিফ এন্টারপ্রাইজের নামে ১ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন গ্রাহক মোহাম্মদ সলিম উল্যাহ। এ সময় ঋণ পাশের জন্য তার কাছ থেকে ১০টি ব্লাঙ্ক চেক (ইউডিসি) স্বাক্ষর করে নেওয়া হয়। জামানত হিসাবে ফেনীতে সাড়ে ১৭ শতাংশ জমি এবং ২ হাজার স্কয়ার ফুটের একতলা বাড়ি বন্ধক রাখা হয়। এ জমি ও বাড়ির মূল্য ধরা হয় ১ কোটি টাকা। কিন্তু গ্রাহককে না জানিয়ে দুই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে ব্যাংক।

আসিফ এন্টারপ্রাইজের নামে ঋণ মঞ্জুরের পর শাখা ম্যানেজার মোহাম্মদ শামছুল হাসান ভুঁইয়া জানান, এই টাকা ছাড় করার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি আছে। এর কয়েক মাস পর তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসিতে একটি ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই সময়ে আইডিএলসির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) থেকে তিনি জানতে পারেন, ফারমার্স ব্যাংকে তার নামে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার একটি ঋণ রয়েছে।

ইতোমধ্যে এ ঋণ সাব স্ট্যান্ডার্ড (নিম্নমান বা খেলাপি ঋণের প্রথম ধাপ) হয়ে গেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, গ্রাহক ১ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেছিলেন। জামানতও দিয়েছিলেন ১ কোটি টাকার। কিন্তু তার অনুকূলে ২ কোটি টাকা ঋণ পাশ করে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে। আসামিরা গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংকে ০১৬১১০০২৪৫৮৭১ নম্বর একটি ঋণ হিসাব খোলে। ওই হিসাবে টাকা ছাড় করে সেখান থেকে আসিফ এন্টারপ্রাইজের নামে সিল ও স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ওই বছরের ১৭, ১৮ ও ২৮ সেপ্টেম্বর ৮টি চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

আইডিএলসির মাধ্যমে ঋণের তথ্য জানার পর তিনি (গ্রাহক সলিম উল্যাহ) ব্যাংকে যোগাযোগ করেন। প্রথমে ব্যাংক থেকে ঋণের কথা অস্বীকার করা হয়। পরবর্তী ডকুমেন্ট দেখানো হলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান। এ সময় দ্রুতই টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ব্যাংকের স্টেটমেন্ট (বিবরণী) চাইলে তা দিতে কর্মকর্তা অস্বীকৃতি জানান। তারা বলেন, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে। অনেকদিন চেষ্টার পর ব্যাংকটির ঢাকার বাইরে শাখা থেকে কৌশলে স্টেটমেন্ট তুলে দেখা যায়, তারা দেড় কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। তবে পরদিনই সেখান থেকে আবার ৩০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। অর্থাৎ ৭৮ লাখ টাকা কম।

এ অবস্থায় ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের তৎকালীন এমডিকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এর সাড়ে সাত মাস পর ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী গ্রাহক আসিফ এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে ঘটনা জানিয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। জবাবে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তাদের প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এরপর ভাটারা থানায় মামলা করেন গ্রাহক সলিম উল্যাহ। শুরুতে মামলা নিতে চায়নি ভাটারা থানা। পরে আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা নেওয়া হয়। তবে আইনের যে ধারায় মামলা হয়েছে, তা তদন্তের এখতিয়ার পুলিশের নেই। ফলে মামলাটি থানা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্থানান্তর করা হয়।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক সাহিদুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) ফরেনসিক ল্যাবের সহায়তা নেন দুদক কর্মকর্তা। এ সময় ভুক্তভোগী গ্রাহকের ৫০০ স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ স্বাক্ষরগুলোর সঙ্গে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় যে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, তার কোনো মিল পায়নি দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্বাক্ষরগুলো জাল।

এক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট খোলার ফরমে গ্রাহকের ছবিও নেই। এছাড়াও ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারও এ ঘটনার বিপক্ষে অর্থাৎ গ্রাহকের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ব্যাংকের উপর মহলের নির্দেশে এ কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। চাকরি বাঁচাতে তাদের কিছু করার ছিল না।

মামলার অভিযোগের সত্যতা পেলে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর চার্জশিট দেয় দুদক। ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট গ্রহণ করে বিচারকাজ শুরু করেন মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে ২০২২ সালের ৩ জুলাই মামলার রায় দেন বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক।

এজাহারে উল্লেখ করা ৫টি ধারায়ই অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এতে প্রতিটি ধারায় ৪ আসামিকে আলাদা আলাদভাবে ৭ বছর করে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে একটি ধারায় ৭ বছর জেল খাটলেই সবগুলো সমন্বয় হবে বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ মোট শাস্তি ৩৫ বছর নয়। ৭ বছর সাজা ভোগ করলেই পুরোটা সমন্বয় হবে। এছাড়াও আসামিদের প্রত্যেককে ৭৮ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে ঋণ আবেদনের সময় নিরাপত্তার জন্য আসিফ এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ১০টি ইউডিসি চেক নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুদকে মামলাটি হস্তান্তরে তদন্ত কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান একটি জব্দ তালিকা তৈরি করেন। ওই তালিকায় মাত্র ৩টি চেক নেওয়ার কথা উল্লেখ করে ব্যাংক। বাকি ৭টি চেকের তথ্য অস্বীকার করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২০২১ সালে সেখান থেকে ১টি দিয়ে আসিফ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার (চেকের বিপরীতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই) মামলা করা হয়। এছাড়াও ব্যাংকের ঋণে অর্থ আদায়ের জন্য চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থঋণ আদালতে মামলা করে পদ্মা ব্যাংক।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী গ্রাহক আসিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ সলিম উল্যাহ কান্নাজড়িত কণ্ঠে যুগান্তরকে বলেন, ‘মানুষের জীবনে প্রেশার কাকে বলে, ৬ বছরে আমি হাড়ে হাড়ে অনুভব করেছি। আমার জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে ফারমার্স ও পদ্মা ব্যাংক। গত বছর আমার জীবন কেটেছে আদালতে হাজিরা দেওয়া, ব্যাংক, থানা ও দুদকে ছোটাছুটি করে। ব্যবসা তো দূরের কথা, ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা চালাতে গিয়ে আমি আমার অন্যান্য সম্পদও বিক্রি করে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল যাত্রাবাড়ীতে।
ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার পর প্রথমেই ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হিজড়া পাঠায় ব্যাংক। হিজড়ারা এসে বলে, মামলা না তুললে তোরে খেয়ে ফেলব। এরপর আরও একদিন হিজড়ারা এসেছিল। উপায় না পেয়ে আমি ২০১৯ সালের ১০ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেছি।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি। কিন্তু পুলিশ বলেছে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং এমডির বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া যাবে না। এজন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনুমতি লাগবে।

সলিম উল্যাহ বলেন, মামলায় আমার পক্ষে রায় হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলার আসামিদের শুধু চাকরিচ্যুত করেছে। উলটো টাকা আদায়ে অর্থঋণ আদালতে আমার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা করেছে। এছাড়াও চেক ডিজঅনার মামলা করেছে তারা। অর্থাৎ এখনো আমাকে সব ধরনের হয়রানি করে যাচ্ছে।’

অপরদিকে গ্রাহকের নামে ঋণ অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর ভাটারা থানায় মামলা করেন আজমিরি ইলেকট্রনিক্সের মালিক ঢাকার কোতোয়ালি থানার বাসিন্দা আফরোজা বেগম। মামলার বিবরণে তিনি উল্লেখ করেন, সিসি ঋণের (ক্যাশ ক্রেডিট) জন্য তিনি ফারমার্স ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখায় আবেদন করেন। এরপর ৮০ লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর হয়। কিন্তু ব্যাংকে নগদ টাকা নেই-এই অজুহাত দিয়ে ব্যাংক থেকে তাকে বলা হয়, টাকা ছাড় করতে সময় লাগবে। এমনকি তার ঋণ অ্যাকাউন্টের চেকবইও আটকে রাখা হয়। এরপর তিনি জানতে পারেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঋণের টাকা তুলে নিয়েছেন।

দুদকের তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে ৪ বছর ৩ মাস মামলা চলার পর গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালত-২-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। আজমিরি ইলেকট্রনিক্সের মামলায় রায়ে ৩ আসামিকে আরও ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পেনাল কোড ৪০৯ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৭৯ লাখ টাকা জরিমানা, ৪৬৭ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৬৮ ধারায় ২ বছর কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৪৭১ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে একই প্রক্রিয়ায় সেল হোমটেক্সের ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র। মামলাটি তদন্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ইতোমধ্যে চার্জগঠন হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন। যুগান্তরের অনুসন্ধানে তিনটি ঘটনা সামনে এলেও এ ধরনের আরও অনেক ঘটনা রয়েছে বলে ব্যাংক সূত্র জানায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যাংকটির এ জালিয়াতির ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। ওই সময়ে এ ব্যাংকের নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। কিন্তু ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি ব্যাংকটির নাম এবং মালিকানা পরিবর্তন হয়। ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে ‘পদ্মা ব্যাংক’ হিসাবে নামকরণ করা হয়। কিন্তু প্রতারিত গ্রাহকরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাড়া মেলেনি। জানতে চাইলে পদ্মা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. তালহা যুগান্তরকে বলেন, আমি এ ব্যাংকে যোগদান করেছি গত বছরের ডিসেম্বরে। ফলে বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাদের আইন ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে পরে জানাতে পারব।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/799314