২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১০:৪২

ডেঙ্গু মোকাবেলায় প্রয়োজন প্রাক-প্রস্তুতি

-ইবনে নূরুল হুদা

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত মৌসুমী রোগ। সাধরণত গ্রীষ্মকালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। এই রোগ পুরোপুরি প্রাণঘাতী না হলেও প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং চিকিৎসার অভাবে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। প্রতিবছরই গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে এই ভাইরাসের অধিক সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু গত বছরের প্রকোপটা ছিল খুবই বেশি। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে। তা ছিল বেশ দীর্ঘ মেয়াদি এবং প্রাণহানির সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য।

মূলত, ডেঙ্গুজ্বর একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত গ্রীষ্মম-লীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলির মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষয়ী রূপ নিতে পারে যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষয়ী জ্বর (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার) বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনো বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা দেয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। যা অনেক সময় প্রাণহানির অনুষঙ্গ হয়ে দেখা দিতে পারে। আর গত বছরে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ও সংক্রমণ ছিল ঠিক এই গতি-প্রকৃতিরই। তাই সম্ভাব্য এই রোগের বিস্তাররোধ এবং আক্রান্তদের সুচিকিৎসা দেয়ার জন্য জাতীয়ভাবে প্রাক-প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ আমাদের দেশের নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। প্রাণহানির ঘটনাও নেহাত কম নয়। কিন্তু গত বছর ছিল খুবই ব্যতিক্রম। দেশে দীর্ঘ পরিসরে চলেছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রাণহানির ঘটনাও উল্লেখ করার মত। কিন্তু এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। যা রীতিমত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে যথাযথ গণসচেতনতার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ নতুন করে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। আর তা হতে পারে গত বছরের চেয়ে আরো বিস্তৃত ও ভয়ঙ্কর। প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় এই বছরের প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হার দ্বিগুণেরও বেশি। গবেষণায় ঢাকাসহ ৯টি জেলায় ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার উচ্চঘনত্ব দেখা গেছে। আর ডেঙ্গু এখন মৌসুমী রোগের পরিবর্তে সারা বছরের রোগে পরিণত হয়েছে। যা এখন রীতিমত উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছেছে।

কীটতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন, চলতি বছর ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, নরসিংদী, গাজীপুর, বরিশাল, বরগুনা ও মাদারীপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ গত বছরের চেয়েও বাড়বে। তারা আরো বলছেন, মার্চ মাসে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করে দেখা গেছে, এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি ওই জেলাগুলোতে আরো খারাপ ও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। গবেষণায় ডেঙ্গু মশার ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ডেঙ্গু রোগী এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এবার ওই জেলাগুলোতে শীতকালেও এডিস মশার ঘনত্ব ১০-এর উপরে ছিল। এটা মার্চ মাসের হিসাব। বৃষ্টি হলে এটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এবার আগাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এখন এডিস মশার ঘনত্ব দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আগামীতে এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর যদি রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয়, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছরের মার্চ মাসে দ্বিগুণেরও বেশি ছিল। ফলে এখন যে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে তাতে ডেঙ্গু এবার অনেক প্রকট হবে। আর সার্বিক পরিস্থিতি সেদিকেই মোড় নিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছর প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ৯ জনের। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২২ জন, যা গত বছরের একই সময়ে দ্বিগুণের বেশি। এ বছর একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। গত বছর প্রথম তিন মাসে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছিল ৮৪৩ জন। এবার প্রথম তিন মাসেই ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৭০৫ জন। আগামীতে পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় এবং মারা যায় এক হাজার ৭০৫ জন। গত বছর জুলাই-আগস্টের দিকে হঠাৎ ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় কোথাও কোথাও স্যালাইন সঙ্কট দেখা দিয়েছিল এবং পরবর্তীতে এই সঙ্কট আরো তীব্র হয়েছিল। তখন স্যালাইনের দামও বেড়ে যায়। চলতি বছর সেরকম পরিস্থিতি যাতে না হয় সে জন্য গত ৩১ মার্চ বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু এক্ষেত্রে পর্বত মূষিক প্রসব করে কি না তা-ই এখন দেখার বিষয়। কারণ, এক্ষেত্রে অতীত রেকর্ড মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পক্ষে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, কৃত্রিম সঙ্কট মোকাবেলা করতে চাহিদার চেয়ে বেশি স্যালাইন উৎপাদন হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে উৎপাদন বাড়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব হাসপাতালে এখন থেকে স্যালাইন কিনে মজুদ রাখার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ) চিকিৎসার জন্য প্লাজমা ও রক্তক্ষরণ প্রতিরোধী ওষুধ আমদানি করা যায় কি না, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের আবশ্যকতা রয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গু আমাদের দিকে ধেয়ে আসলে এখন পর্যন্ত সবকিছু কথামালার ফুলঝুড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

মূলত, মার্চ থেকে অক্টোবরকে ডেঙ্গুর মৌসুম ধরা হয়। এ সময়ে সারাদেশে প্রতি মাসে স্যালাইনের চাহিদা থাকে প্রায় ৫০ লাখ লিটার। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ কম থাকে। ওই সময়ে এ ধরনের স্যালাইনের মাসিক চাহিদা থাকে প্রায় ৩০ লাখ লিটার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর রোগীর চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসকরা এখন যথেষ্ট দক্ষ হয়ে উঠেছেন।

হাসপাতালগুলোতেও ব্যবস্থাপনা এখন ভালো। তারপরও বড় ধরনের প্রাক-প্রস্তুতি প্রয়োজন। জেলা, উপজেলার সব হাসপাতালেরই আগাম প্রস্তুতি দরকার। সেই সাথে দরকার মানুষকে আত্মসচেতন করা। তবে সমস্যা হলো আগেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করে ডেঙ্গু রোগ যাতে না হয় তার ব্যবস্থা তেমন নেয়া হচ্ছে না। আর এখন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে না গিয়ে অপেক্ষা করেন। রোগীর অবস্থা জটিল হলে হাসপাতালে যায়। ফলে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বাড়ছে। তারা আরো বলছেন, ডেঙ্গু এখন সারা বছরের রোগ। এটা এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এডিস মশার একটি ধরন হলো শহুরে এডিস। কিন্তু ২০১৯ সালের পর আরেকটি প্রজাতির এডিস মশা ‘বুনো এডিস’ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এটা বনে বাদাড়ে, গাছের কোটরে থাকে। ফলে এখন গ্রামেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।

মূলত, এখন দেশের মানুষ ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে অনেকইটাই সচেতন। এডিস মশা চেনে। এই মশা প্রতিরোধে কি করতে হয় তাও জানে। জানার পরও তারা বাড়িঘর পরিষ্কার করেন না। স্বচ্ছ পানি জমতে দেন। আর এই পানিতেই এডিস মশা জন্মায়। আর সিটি করপোরেশনের মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নেই। যা করা হয় তা শুধুই লোক দেখানো। মূলত, প্রয়োজনীয় গণসচেতনতার অভাব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে বড় ধরনের অবনতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে দেখা দিয়েছে।

দাবি করা হয়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনই প্রতি বছর মশা মারতে বাজেট বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে আসছে না বরং সার্বিক। ঢাকার দুই সিটির চলতি অর্থবছরে মশক নিধনে বাজেট ১৫২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে উত্তরের ১২১ কোটি ৮৪ লাখ আর দক্ষিণের ৩১ কোটি এক লাখ টাকা। আর গত ১২ বছরে ঢাকার মশা মারার আয়োজনে খরচ হয়েছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। এই বাজেটের টাকা মশা নিবারণের নানা যন্ত্রপাতি, কীটনাশকসহ আরো অনেক কাজে ব্যয় হয়েছে। কিন্তু বাজারে অভিযোগ রয়েছে মশক নিধনে বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার হয় নি বরং এর সিংহভাগই লুটপাট হয়েছে। তাই বরাদ্দ বেশি থাকার পরও তা পুরোপুরি কাজে আসে না। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এডিস মশার লাগামহীন দৌরাত্ম্য।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১০টি অঞ্চলে ৭৫টি ওয়ার্ডে মশা নিধনে ১৫০ জন মশক সুপারভাইজারসহ এক হাজার ৫০ জন কাজ করছেন বলে জানা গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে মোট ৫৪টি ওয়ার্ডের ৭৫ জন মশক সুপারভাইজারসহ প্রায় ৬০০ জন কাজ করছেন বলে দাবি করা হলেও সার্বিক পরিস্থিতির কোন উন্নতি নেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এখন ডেঙ্গু রোগী তেমন নেই। হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আছে। এখন নিয়মিত মশা নিধনের কাজ চলছে। ঈদের পর আরো বড় পরিসরে কাজ শুরু করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ে কাজও চলছে। সবাইকে চিঠি দেয়া হবে। সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে শুধু শুধু সিটি কর্পোরেশন বা সরকারি সংস্থা নয় বরং সবাইকে একযোগে কাজ করা দরকার। কারণ, কারো বাড়ির ভেতরে গিয়ে তো আর মশা নিধন করা সম্ভব নয়। তাই এবার আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোনো বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ আত্মসচেতন হয়।

এ দিকে ঢাকা উত্তর সিটি সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, মশা নিধনে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এটা আরো জোরদার করা হচ্ছে। তবে বাসাবাড়ির জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। তাই বাসাবাড়ির ছাদ, বারান্দা, বাথরুম এগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। এ জন্য উত্তর সিটি করপোরেশন এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ছাড়াও পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি নগরবাসীর কাছ থেকে নগদ মূল্যে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে, যাতে ওই সবের ভেতর পানি জমতে না পারে। পরিবেশও রক্ষা পায়। আর মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হবে। ঈদের পর থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা জনগণকে সচেতন করতে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে বলেও জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন সূত্র।

ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশনের এডিস মশার বিস্তাররোধ ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ ও কর্মসূচির কথা বলা হচ্ছে তা বেশ শ্রুতিমধুর ও ছেলে ভোলানো হলেও বাস্তবতার সাথে এর তেমন মিল লক্ষ্য করা যায় না। কর্তৃপক্ষের দাবি কিয়দংশ সত্য হলেও পরিস্থিতির এতো অবনতি হতো না। তাই এই বিষয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলেই নিজেদের দায়সারার চেষ্টা করা ঠিক হবে না বরং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে ব্যাপকভিত্তিক গণসচেতনতাও দরকার। আর বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি ঘটলে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বড় ধরনের প্রাক প্রস্তুতি প্রয়োজন। দরকার প্রয়োজনীয় ওষুধসহ সর্বাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতাও বাড়ানো দরকার। যাতে সার্বিক পরিস্থিতি সফলভাবে সামাল দেয়া বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। দরকার প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দও। অর্থভাবে যাতে কেউ যাতে চিকিৎসা বঞ্চিত না হোন সেদিকে সবিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা কোনভাবেই কাম্য নয়।

https://www.dailysangram.info/post/554589