২১ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১২:০০

লোডশেডিং অসহনীয়

গ্রীষ্মকাল চলছে। গরমও পড়ছে অসহ্য রকম। টানা কয়েক দিন দাবদাহ চলছে দেশব্যাপী। এ সময়টায় লোডশেডিংয়ের যে অবস্থা, তাতে সামনের দিনগুলোয় অবস্থা কী হয়, তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মানুষ। দিন দিন পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে পড়ছে। রমযানের পর একদিকে গরম, অন্যদিকে লোডশেডিং। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষ। এ সময় লোডশেডিংয়ের কারণে কষ্ট বাড়ছে। বর্তমানে অনেক গ্রামে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। কী ভয়াবহ পরিস্থিতি! ঈদের ছুটিতে রাজধানী থেকে বহু মানুষ গ্রামে গিয়েছিলেন। অফিসের মানুষ ফিরলেও অনেকে এখন ফিরছেন। দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো বলেই তো আমরা জানতাম। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, রাজধানী আলোকিত রাখতেই গ্রামের বিদ্যুতে কাটছাঁট করা হচ্ছে। তবে কি রাজধানীর অধিবাসীরাই দেশের নাগরিক, গ্রামীণ জনপদের মানুষ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক?

গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা ও জোগানে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। কিন্তু জ্বালানি সংকট থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ মুহূর্তে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকেরও কম। দেশীয় উৎস থেকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে না পারায় এবং জ্বালানি আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ও ডলারের জোগান না থাকায় তেল,গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে ভাটা পড়েছে। এ অবস্থায় বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকছে, ওদিকে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। কাপ্তাইয়ের ৪ ইউনিটের মধ্যে ৩ টি বন্ধ। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে অর্থের জোগান বাড়ানো হয়েছে ঠিকই; কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণের এই হাল-হকিকত কেন? এটা তো জানা কথাই যে, গরমকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। গত দুই বছরেও গরমের সময় লোডশেডিং বেড়েছিল। গরমকালে সম্ভাব্য লোডশেডিংয়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হয়। ঈদের সময় যেহেতু মন্ত্রী-এমপিসহ ভিআইপিরা নিজ নিজ গ্রামে গিয়েছিলেন, তাই তাদের বিশেষ এলাকায় বিদ্যুৎ দিতে গিয়ে বাকি বৃহৎ অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। বিদ্যুতের ঘাটতি বর্তমান সময়ে কীভাবে মেটানো যায়, হাজার ভেবেও বোধহয় তার উপায় বের করা যাবে না। তবে দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, এ বিষয়টি মাথায় না রাখলে দেশের মানুষ কিন্তু বিগড়ে যেতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষকে গভীরভাবে বিষয়টি ভাবতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, রাজধানীকেন্দ্রিক নয়, সমতাভিত্তিক বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শহরের মানুষকে কোলের আর গ্রামের মানুষকে পিঠের ভাবলে চলবে না।

https://www.dailysangram.info/post/554075