৯ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৫:০১

ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৭০ টাকা !

পুরো রমজান জুড়েই মাছ গোশতের দাম ছিল চড়া। এবার ব্রয়লার মুরগির দাম পৌঁছেছে কেজি ২৭০ টাকায়। ঈদের আগে দাম আরো এক দফা বাড়বে বলেছেন বিক্রেতারা। প্রতিবছর রোজার আগে থেকেই ছাগল ও গরুর গোশতের দাম বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এবার ব্যতিক্রম ব্রয়লার মুরগির অতিরিক্ত বাড়ার পেছনে কারণ হিসেবে জানা গেছে, কয়েক দিন পর একটি মেলা আয়োজিত হতে যাচ্ছে। আর এ মেলা উপলক্ষে একটি সিন্ডিকেট দেশের পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করেছে। এ নিয়ে প্রথম দিকের সভায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, তাদের ব্যবসা ভালো না। তাদের পক্ষে মেলায় সাহায্য করা সম্ভব নয়। তখন ২০-২৫ টাকা দাম বাড়ানোর সুযোগ বাতলে দেয়া হয়। এ মেলা উপলক্ষে সিন্ডিকেট ৫ কোটি টাকা পাবে। আর করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সুযোগ নিয়ে মুরগির দাম অতিরিক্ত বাড়িয়ে কামিয়ে নিচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা। অথচ মেলার আয়োজন ও খরচ সরকারিভাবেই করা হবে। অথচ মুরগির দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলে একটি সিন্ডিকেট কামিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

ক্রেতারা বলছেন, বাজার মনিটরিংয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো। বড় ধরনের কোনো অভিযান না হওয়ায় এবং অসাধু ব্যবসায়ী বেপরোয়া। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্রেতার পকেট কাটা থামছে না।

প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়ে গত কয়েকদিনে মুরগি দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। কেজি এখন ২৭০ টাকা। পাড়া মহল্লায় এর চেয়ে কম দামে কেউ মুরগি বিক্রি করছে না। এ অনিয়মের বৃত্ত কোনো তদারকি সংস্থা ভাঙতে পারেনি। ফলে বাধ্য হয়ে অস্বাভাবিক দামে মুরগি কিনেছে ভোক্তারা। ঈদের এক সপ্তাহ আগে কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল মুরগি। এরপর থেকে প্রতিদিনই দাম বাড়তে থাকে।

মুরগি দাম অজানা কারণে এখন সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে গেলেও এ বিষয়ে হুঁশ নেই চট্টগ্রামের সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোর। ফলে পোলট্রি শপগুলো ক্রেতাদের জিম্মি করেছে। এখন কাঁচাবাজারের মুরগি দোকানে পাঁচশ টাকায় মিলছে একটি মুরগি। কারণ আকারে প্রতিটি মুরগিই দেড় কেজির চেয়ে বেশি। এক কেজি ওজনেরও কোনো বয়লার মুরগি নেই বাজারে। সাধারণ ভোক্তাদের গোশতের চাহিদা পূরণ করা এ বয়লার মুরগিও দামের তোপে পাত থেকে উঠার উপক্রম। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে পোলট্রি খাতেও সিন্ডিকেট গড়ে তোলায় প্রতিবছর দাম বাড়ছে মুরগি। অপরদিকে সোনালী মুরগির কেজি ৩৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা।
নগরীর চেরাগী পাহাড় এলাকার কয়েকটি খামারী দোকানি রয়েছে। তারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম বেশি। ঈদের কারণে মুরগির পিকআপ নগরীতে আসতে পারছে না। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কমেছে। এছাড়াও চাহিদা অনুযায়ী খামার থেকে মুরগি দিতে হিমশিম অবস্থা। ঈদের কয়েকদিন আগে এ দাম আরও ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়বে।

মুরগির দাম নিয়ে ক্রেতাদেও চরম ক্ষোভ। তারা বলছেন, বয়লার মুরগি যদি ২৭০ টাকায় পৌঁছে তাহলে বুঝতে হবে দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে। সরকারের নজরদারির অভাব রয়েছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার। নগরীর প্রতিটি বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা এবং খাসি এক হাজার ১১৫০ টাকায়। গরু ও খাসির গোশতের দামও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

https://dailyinqilab.com/national/article/650639