৯ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৪:৫১

তাকওয়া অর্জনকারীর জন্য ঈদুল ফিতর

অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম রহমত

মাগফিরাত, নাজাতের পয়গাম নিয়ে রমযান আমাদের সামনে প্রতি এগার মাস পরে হাজির হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে ঈমানদারগণ। তোমাদের প্রতি রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের লোকেদের প্রতি ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার।” (বাকারা-১৮৩) প্রতিপাদ্য আয়াত থেকে বোঝা যায়া রমযান আসে মুসলমানদের মুত্তাকী বানানোর জন্য। আর যারা এই দীর্ঘ একটি মাস আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ শিকার করে হালালকে গ্রহণ এবং হারামকে বর্জন করে তাকওয়া অর্জন করে মুত্তাকী হতে পারে তাদের আনন্দের জন্য আল্লাহ তায়ালা ঈদের ব্যবস্থা করেছেন। যাতে আমরা তার মমত্ব-বড়ত্ব এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। ঈদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: “আর যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন, তার জন্যে তোমরা আল্লাহর মমত্ব-বড়ত্ব প্রকাশ কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।” (বাকারা-১৮৫)
রমযান ত্যাগেরও আত্মশুদ্ধির মাস। সংসারের লোভ-লালসা এবং কামনা-বাসনা মানুষকে আল্লাহ বিস্মৃতির পথে টেনে নিয়ে যায়। বছরের শেষে রমযানুল মুবারক মুমিন বান্দাদের এক নবজীবন দান করার জন্য এবং সে সব মন্দ পথ হতে ফিরিয়ে রাখার জন্য কতিপয় শিক্ষা সবক নিয়ে এগিয়ে আসে। পাপ-পঙ্কিলতার আবর্তে নিমজ্জিত কলুষিত মলিন আত্মাকে পরিশোধিত করার জন্য সিয়াম সাধনা একান্ত জরুরি। পবিত্রতা ও ইবাদতের মাস হিসেবে পরিচিত রমজান মাসেই আল্লাহ তায়ালা বিশ্ব মানবতার মুক্তির সনদ ‘আল-কুরআন’ অবতীর্ণ করেন। এ কারণেই কুরআনে রমযানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘এই সেই রমযান মাস, যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে।’ রমযানের এতেকাফে অঢেল পুণ্যের ব্যবস্থা রয়েছে। লাইলাতুল কদরের মত বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ রজনী রয়েছে রমজান মাসেই। তাছাড়া অসংখ্য কারণে এ রমজান গুরুত্বপূর্ণ। এই রমযানের মর্যাদা ও পবিত্রতার যারা অবমাননা করছে আল্লাহর বেহিসাব নিয়ামত ভোগ করে তাঁর নাফারমানী ও অবাধ্যতা করে যারা কাটিয়েছে ঈদ তাদের জন্যও নয়। মানুষ নামের এসব অবিবেচক লোকদের আগ্রহাতিশয্যা পোশাকের জৌলুস, খানাপিনার অযথা আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সাথে ইসলামের অনুমোদিত পবিত্র আনন্দের কোন সম্পর্ক নেই। তাদের আনন্দোৎসবের জবাব রয়েছে রসুলে মকবুল (সা.) এর অমোঘ বাণীতে। ‘যে মুমিন একান্ত নিষ্ঠার সাথে রমজানের যাবতীয় কর্মসূচি পালন করেছে ঈদের আনন্দ তারই জন্যে, আর যে ব্যক্তি রমযানের আদর্শ উপেক্ষা করে শুধু হাসি-তামাশা ও লোক দেখানোর জন্য মুমিনের লেবাস পরে ঈদ করেছে তার জন্য এটি আনন্দ নয় বরং দোযখের অগ্নিশিখা তুল্য।’
বিশ্বমানবতার খাঁটি বন্ধু ও মানবতার মুক্তিরদূত হযরত মুহাম্মদ (সা.) আনন্দের সুসংবাদ দিতে গিয়ে বলেছিলেন “লিকুল্লি কাওমিন ঈদ, হাযা ঈদুনা”। প্রত্যেক জাতিরই নিজস্ব উৎসব রয়েছে। তেমনি মুসলমানদের জন্যও দু’টো ঈদ উৎসব রয়েছে। মানুষের প্রকৃতির স্বাভাবিক চাহিদা মোতাবেক দুঃখের পরে সুখ এবং বেদনার পর আনন্দ আসে। এটা একটি অপরিবর্তনীয় রীতি বা নিয়ম পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই প্রচলিত রয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের সওগাত সমৃদ্ধ হয়ে ত্যাগ-তিতীক্ষা ও সংযম সাধনার শিক্ষা নিয়ে যে রমজানুল মুবারক আমাদের মাঝে এসেছিল, তার বিদায়লগ্নে বিমল আনন্দের অনুপম মাধুরী এনে দিয়েছে “ঈদুল ফিতর”। পৃথিবীর প্রত্যেক জাতির বিশেষ আনন্দ অনুষ্ঠানের মতো ঈদুল ফিতরও মুসলিম মিল্লাতের এক বার্ষিক আনন্দের মেলা। কিন্তু অন্যান্য অনুষ্ঠানের চেয়ে এর স্বতন্ত্র ও বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ভিন্নতর। উৎসবের নামে অনাচার-কদাচার আর নৈতিকতা বিবর্জিত বল্লাহীন অনুষ্ঠান আড়ম্বরের কোন অবকাশ নেই ইসলাম অনুমোদিত এ আনন্দে। বরং এ আনন্দ সংযম ও আনুগত্যের জন্যই বছরে দুটি বিশেষ দিনে এরূপ আনন্দের অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। হযরত আনাস (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) যখন মদীনায় হিজরত করেন, তখন তিনি সেখানকার নও-মুসলিমদের দু’টো বিশেষ দিনে নানারূপ খেল-তামাশার মাধ্যমে আনন্দোৎসব করতে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এ দুটি দিন তোমাদের এরূপ করার কারণ কি?’ তারা বললো, ‘আমরা জাহিলী যুগেও এ দুটি দিন এমনি খেল- তামাশার মাধ্যমে আনন্দ উৎযাপন করতাম।’ নবী মুহাম্মদ (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের আনন্দোৎসবের জন্য এর ঈদুল ফিতরের দিন পহেলা শাওয়াল। অপরটি হলো ঈদুল আযহার দিন দশই জিলহজ্জ।

হযরত মুহাম্মদ (স.) পহেলা শাওয়ালকে ঈদের দিন ঘোষণা করেন। আল্লাহ নবীর ইচ্ছা অনুযায়ী ঈদের আনন্দ মুসলমানদের জন্য আল্লাহপাক বরাদ্দ করেছিলেন। সেই সময় থেকেই চলে আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসব। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, রমযানের রোযা ও ঈদুল ফিতর হিজরী দ্বিতীয় বছর চালু করা হয়। ঐ বছর রোযা শেষ হবার বার দিন আগে বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। আর রোযার শেষে পহেলা শাওয়ালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম ঈদুল ফিতরের উৎসব। হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর নির্দেশ মতো ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিতে দিতে মুসলমারা খোলা ঈদের ময়দানে গিয়ে হাজির হয়। নবীজী (সা.) উপস্থিত সকল মুসলমানকে সাথে নিয়ে খোলা ময়দানে দুই রাকাত ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করলেন। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে খুতবা পড়ে ঈদের উৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন।
তাই ঈদকে কেবলমাত্র আনন্দের বা পানাহারের উৎসব বলে বিবেচনা করলে চলবে না। ঈদের উৎসব পালনের মধ্যে যে ধরনের সৌভ্রাতৃত্ব ও তাকওয়া রক্ষা করে চলা এবং ত্যাগের মহান অনুপম তাৎপর্য রয়েছে তা উপলব্ধি করতে হবে। দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার অনল দহনে দগ্ধ হবার পর মুমিন বান্দার পক্ষে মহান আল্লাহর দরবারে নির্মল ও নিখাদরূপে উপস্থিত হবার দিন হলো ঈদুল ফিতর। এ দিনের স্বচ্ছে সুন্দর ও মধুর প্রভাতে মুমিন বান্দার মন কৃতজ্ঞতায় ভরে যায়। বস্তুত দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পরে ঈদের আনন্দ হচ্ছে আল্লাহর শুকরিয়ারই বহিঃপ্রকাশ।

ঈদুল ফিতরের আনন্দ আমাদেরকে বিনয়ী, নম্র ও হৃদয়বান করে তোলে। যেন ঈদের প্রভাত থেকেই আমরা পরের সুখে সুখী হবার তাগিদ অন্তরে অনুভব করি। ছোটদের প্রতি স্নেহ-মমতা এবং বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তির প্রাণ-প্রবাহে আমাদের হৃদয়মন ভরে যায়। আল্লাহর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার সাথে সাথে আমরা যেন সৃষ্টির সাথে সদ্ব্যবহার করতে পারি। যেন সৃষ্টিকে ভালবেসে স্রষ্টাকে সন্তুষ্ট করতে পারি। বস্তুত নিছক একদিনের হৈ-হুল্লোড় ও মাতামাতিতেই ঈদের সার্থকতা নিহিত নয়। বরং প্রত্যেক ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন মন- মানস ও উন্নত চরিত্রের অধিকার লাভ করাতেই রয়েছে ঈদ উৎসবের আসল সার্থকতা।

কাজেই মাহে রমযানের পবিত্র দিনে নির্লজ্জভাবে পানাহারকারীদের জন্য ঈদের আনন্দ নয়। ঈদুল ফিতরের উৎসবে তাদের কোন অধিকার নেই বরং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ভাষায় ‘এ আনন্দ তাদের জন্য শাস্তির হুমকি স্বরূপ।’ তিনি বলেছেন, ‘ঈদের আনন্দ তার জন্য নয়, যে ব্যক্তি কেবল মাত্র নতুন জামা পরিধান করে, বরং ঈদ হচ্ছে তার জন্য, যে আল্লাহকে ভয় করে। বস্তুত আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে এমন এক অপার্থিব আনন্দ রয়েছে, যা ঈদের আনন্দের চাইতেও অনেক সময় বেশি তৃপ্তিদায়ক। ঈদের প্রভাতে মুসলমানদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমার নামায, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমরা মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর জন্য।’

মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ যে কত অসীম, ঈদের পবিত্র দিনে মুমিনবান্দা তা চিন্তা করে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। তারা বৃথা সাজ- সজ্জা ও নিষ্ফল আনন্দের পরিবর্তে রসুলে করীম (সা.) এর নির্দেশ পালন করেই পরিতৃপ্তি পায়। ঈদের দিনে আল্লাহর কাছে তওবা করো, কারণ এ দিনে তওবা কবুল হয়। মুমিন বান্দা তাই মোনাজাত করে, ‘হে আমার প্রতিপালক। তুমি আমার রোযা কুবল করো, আমাকে তোমার নেক বান্দাদের মধ্যে শামিল করে নাও।’ আরো শোনা যায়, মুমিনের কান্না কাতর কণ্ঠের আবেদন: ‘হে আমার জীবন-মৃত্যুর মালিক। তুমি আমার অজ্ঞানপ্রসূত কৃতকর্মের ভুলত্রুটি ক্ষমা করো। আমাকে জাহান্নামের কঠিন আযাবে নিক্ষেপ করো না। হে রাব্বুল আলামীন তুমি আমাদের গুনাহ-খাতা মাফ করো, আমাদের ঈদকে তুমি সফল এবং স্বার্থক করো।’

রসুলে করীম (সা.) এর সাহাবায়ে কেরামগণ ঈদের দিনে নির্জন একাকিত্যে আল্লাহর দরবারে নিজেদের যাবতীয় গুনাহখাতা ক্ষমা চাইতেন। আল্লাহ ভীতি ওঁদেরকে নিরর্থক আনন্দ থেকে বিরত রাখত। আনন্দ ও খুশীর এ পবিত্র দিনে তাঁরা কেঁদে কেঁদে আল্লাহর দরবারে রোজা কবুলের জন্য দোয়া করত। যানবাহনে আরোহন করে সুখ ও কৌতুহল প্রকাশ করতে তাঁদের অন্তর ভীত বিহকাল হয়ে পরত। কেননা তাঁরা রসুলে মকবুল (সা:) এর পাক জবানে শুনেছেন, ‘ঈদের আনন্দ তার জন্য নয়, যে উর্ধ্বে আরোহণ করেছে, ঈদের আনন্দ তো সেই মুমিনের জন্য যে রমজানের কৃষ্ণে সাধানায় নিজ জীবনকে পবিত্র করেছে।’

দুঃখ দারিদ্র্যের নিষ্পেষণে যারা জর্জরিত, ঈদুল ফিতরে তাদেরও বিশেষ আনন্দের ব্যবস্থার জন্য সদকায়ে ফিতর ওয়াড়ি করা হয়েছে। মক্কা-মুয়াজ্জমার অলিতে-গলিতে লোক পাঠিয়ে নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছিলেন, ‘জেনে রেখো, সদকায়ে ফিতরা প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ, আঘাদ-গোলাম ও ছোট-বড় সবার প্রতি ওয়াজিব।’ সদকায়ে ফিতরের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে নবী করীম (সা:) বলেছেন, যতক্ষন পর্যন্ত সদকায়ে ফিতর আদায় করা না হয়, ততক্ষন পর্যন্ত বান্দার রোজা জমিন ও আসমানের মাঝখানে ঝুলন্ত থাকে।’
ঈদুল ফিতরের পবিত্র ও প্রশান্তিময় আনন্দের দিনে সিয়ামের শিক্ষাকে ভুলে গেলে দীর্ঘ এক মাসের সাধনা পূর্ণতা লাভ করবে না। রমযানের সাধনায় কে কতটুকু সংযমী ও পরহেজগার হতে পেরেছে পরবর্তী সময়ের কাজ কর্মেই তা প্রমাণিত হবে। আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগ-তিতীক্ষায় যে সবক দিয়ে গেছে রমজানুল মুবারক ঈদের পূণ্য প্রভাত হতেই তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। সফলতা ব্যর্থতার বাছ-বিচার শুধু একমাসের সাধু জীবন যাপনেই নয়, বরং আল্লাহর আনুগত্যকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়ার মাধ্যমেই মাহে রমযানের সফলতা। সারা বছর যারা মনে রাখতে পারে এবং আমল করতে পারে যেমন, ‘যে ব্যক্তি আপন প্রতিবেশীকে। অভুক্ত রেখে নিজে পেট ভরে খায়, তার কোন ইবাদতেই আল্লাহ কবুল করেন না’ তারাই সিয়ামের শিক্ষা ও ঈদের আনন্দে গৌরব বোধ করতে পারেন।
অনেক সময় দেখা যায়, এক শ্রেণীর মানুষ ঈদের বাজারে কেনাকাটার আনন্দে এত ব্যস্ত থাকে যে, শেষ পর্যন্ত ঈদের দু’রাকাত নামাযও আদায় করতে পারে না। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এদের কাছে আল্লাহর এ শুভ সংবাদের কোন মূল্য নেই। “শোন ফেরেস্তারা। আমার প্রিয় বান্দারা তাদের উপর অর্জিত কর্তব্য পালন করে আবার দৌড়ে আসছে আমার দিকে, আমার করুণা প্রার্থী হয়ে। আমি আমার সম্ভ্রম, আমার উচ্চে মর্যাদার শপথ করে বলছি, তাদের সব ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দিয়ে, তাদের আমার দরবারে কবুল করে নিলাম।”
বাস্তবে আমরা যদি এভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারি, তাহলে আমাদের একটি মাসের সিয়াম সাধনা সার্থকতা ফলে-ফুলে ভরে উঠবে এবং আরো পবিত্র মন-মাসিকতা নিয়ে ঈদুল আযহার কুরবানি তথা সকল প্রকার ত্যাগ তিতীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে পারব। আর পবিত্রতা ও ত্যাগের মহড়া আমাদেরকে পৌঁছে দেবে সাফল্যের সর্বোচ্চ মঞ্জিলে।

পরিশেষে বলা যায়, ঈদুল ফিতরের ফজিলত সমপর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ঈদুল ফিতরের দিন ফিরিশতাগণ রাস্তার মুখে মুখে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন- হে মুসলিম জাতি। ভালো কাজের ক্ষমতাদাতা ও সাওয়াবের আধিক্যদাতা আল্লাহর কাছে অতি শিগগিরই চলো। তোমাদের রাতে ইবাদত করার হুকুম করা হয়েছিলো, তোমরা তা পালন করেছো। তোমরা তোমাদের রবকে খাওয়ায়েছো (অর্থাৎ গরিব-মিসকিনকে খাবার দিয়েছো) আজ তার পুরস্কার গ্রহণ করো। অতঃপর মুসলিমগণ যখন ঈদের নামাজ পড়ে তখন একজন ফিরিশতা উচ্চঃস্বরে বলতে থাকেন- ‘তোমাদেরকে তোমাদের রব ক্ষমা করে দিয়েছেন। এখন তোমরা তোমাদের পুণ্যময় দেহ-মন নিয়ে নিজ ঘরে ফিরো।’ (আল-মুজামুল কাবির, হাদিস নং- ৬১৮)

প্রকৃতপক্ষে ঈদ ধনী-দরিদ্র, সুখী-অসুখী, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সব মানুষের জন্য কোনো না কোনোভাবে নিয়ে আসে নির্মল আনন্দ। এ ঈদ ধর্মীয় বিধিবিধানের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস। আসুন, আমরা ২০২৪ সালে সবার মনে প্রাণে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিই। করোনার কারণে গত ২০২০ ও ২০২১ সালে দুই বছর আমরা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। তাই আমরা আশা করি ২০২৪ সালে ঈদুল ফিতরে সকল মানুষকে নিয়ে আনন্দ করবো, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করবো এবং রমযান আর ঈদুল ফিতরের শিক্ষা নিয়ে আমাদের বাকি জীবন পরিচালনা করবো, ইনশাআল্লাহ।

https://www.dailysangram.info/post/553502