৯ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৪:৪৯

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, চোরাচালান ও ভারতীয় পণ্য বর্জন

-ড. মো. নূরুল আমিন

॥ দ্বিতীয় কিস্তি ॥
গত সংখ্যায় এই স্তম্ভে আমি ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের জেলা/অঞ্চলওয়ারী বিবরণ এবং ঐসব সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে মালামাল পাচারের কিছু তথ্য পরিবেশনের চেষ্টা করেছিলাম। এই প্রেক্ষিতে একজন পাঠক দিনাজপুর থেকে টেলিফোনে একটি অতিরিক্ত তথ্য পাঠিয়ে জানিয়েছেন যে, ঐ সীমান্ত দিয়ে আরো দুটি পণ্য ব্যাপকভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হয়। এগুলো হচ্ছে পাট এবং মাটি। বাংলাদেশের এই সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে মাটি নিয়ে ভারতের ইটখোলাগুলোতে ইট তৈরি হয়। এই মাটি হচ্ছে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি বা Top Soil বলাবাহুল্য জমির টপসয়েল হচ্ছে মাটির সবচেয়ে উর্বর অংশ। এই অংশ অবৈধভাবে পাচার হবার ফলে এই এলাকার উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং ফলন কমে খাদ্যাভাবের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মতে, এই সমস্যাটি কয়েক বছর আগে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, কৃষকদের প্রতিবাদের মুখে এখন কিছু কমেছে। তবে পাট পাচার অব্যাহত আছে।

আগেই বলেছি, উভয় দেশের জন্যই সীমান্তের সাধারণ সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ (১) চোরাচালান, (২) মানব পাচার (এদের মধ্যে যুবতী মেয়ে এবং শিশুদের সংখ্যা বেশি), (৩) হত্যা, (৪) বিনা উসকানিতে গোলাগুলি, (৫) সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষেতের ফসল, বাড়িঘর, গাছপালা, ফলমূল, পুকুর ডোবার মাছ প্রভৃতি ব্যাপক লুটপাট, (৬) পুশ ইন ও পুশ ব্যাক, (৭) উন্নয়ন কাজে বাধা প্রদান, (৮) অনুপ্রবেশ বা অবৈধ সীমান্ত পারাপার এবং (৯) আন্তর্জাতিক সীমানার ১৫০ গজের মধ্যে এবং কোথাও কোথাও এমনকি নোম্যানসল্যান্ডের উপর ভারত কর্তৃক কাঁটাতারের বেড়া প্রদান, (১০) Revetment বিরোধ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে দিয়ে বর্ষা মওসুমে বাংলাদেশে প্রলয়ংকরী বন্যার সৃষ্টি প্রভৃতি। উপরোক্ত সমস্যাগুলোর তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে দেখা গেছে যে, বহু মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে বিদেশ থেকে আমরা যে সমস্ত পণ্য আমদানি করি তার একটা বিরাট অংশও সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে ভারতে পাচার হয়ে যায়। যেমন, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, কম্পিউটার, ডিজেল প্রভৃতি। যশোরসহ কয়েকটি সীমান্তবর্তী জেলার বোরো চাষাধীন জমিতে সেচ দেয়ার নামে বহু সংখ্যক বিশালায়তন ডিজেল স্টোরেজ তৈরি করা হয়েছিল। এইসব স্টোরে মজুদকৃত বেশিরভাগ ডিজেলই ভারতে পাচার হয়।

আগেই বলেছি, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পুরো দেশটিকেই ঘিরে ফেলেছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, এর ফলে চোরাচালানি ও অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধভাবে দু’দেশে আনাগোনা করতে পারবে না। এর সাথে তারা আরো দুটি কাজ করেছে বলে সীমান্তবাসীরা অভিযোগ করেছেন। একটি হচ্ছে নাইট কার্ফু জারি এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে রাতের বেলা সীমান্ত এলাকায় ৫০০০ থেকে ১০০০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ফ্লাড লাইট জ¦ালিয়ে রাখা। এর ফলাফল সীমান্তবাসীদের জন্য মারাত্মক বলে গণ্য হচ্ছে।

কাঁটাতারের বেড়া ও কার্ফু জারির ফলে সীমান্তবাসীরা প্রায় ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে যে সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বলাবাহুল্য ১৯৪৭ সালে প্রথম দেশ স্বাধীন হবার সময় বাউন্ডারী কমিশন তৎকালীন পাকিস্তান ও ভারতের মাঝখানে যে সীমান্ত নির্ধারণ করেছিলেন বাংলাদেশ হবার পর সেই সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে। এই সীমানাতেই (৪১৪৬ কি.মি.) ১৮০ কি.মি. জলসীমা বাদ দিয়ে বাকী সীমান্তের মধ্যে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩২০৭ কি.মি. এলাকায় তারা কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গ বরাবর ৩০৭ কি.মি. এলাকায় বাংলাদেশ এই বেড়া দেয়ার বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বরং তারা আরো অগ্রসর হয়ে ২৭৭ কিলোমিটারব্যাপী Flood Light তৈরির কাজও সম্পন্ন করেছে। এখানে আমি একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই যা এই প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানেন না। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় হিন্দু-মুসলমানের ভিত্তিতে শুধু দেশ প্রদেশ, জেলাই বিভক্ত হয়নি কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্ত কমিশন গ্রাম এমনকি পাড়াও ভাগ করে সীমানা পিলার গেড়ে দিয়েছিলেন। এতে দেখা গেছে যে, সীমান্তে হাজার হাজার পরিবারের বাড়ি পড়েছে পাকিস্তান বা ভারতে; কিন্তু জায়গা-জমি পড়েছে অন্য দেশে। এই সমস্যাটি বহু বছর তাদের দুর্দশার কারণ হয়েছিল। ১৯৬০ সালে এর সমাধানের লক্ষ্যে জেনারেল আইয়ুব খানের শাসনামলে উভয় দেশের সম্মতিতে জিরাতিয়া আইন নামে একটি আইন চালু হয়। এই আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কৃষকরা মাথায় বোঝাই করে আনা যায় একবারে এই পরিমাণ (Head load) ফসল এক দেশ থেকে অন্য দেশে বহন করে নিয়ে যেতে পারতো। কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার ফলে এই দরিদ্র মানুষগুলো এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

দ্বিতীয়, ২৭৭ কিলোমিটার এলাকায় Flood Light স্থাপনের ফলে এর সন্নিহিত বিশাল এলাকায় কৃষি জমিতে খাদ্যশস্য ও তরিতরকারি এবং গাছ গাছড়ার ফলমূল উৎপাদন সাংঘাতিকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং হ্রাস পেয়েছে। কেননা এর ফলে ফসলের উপযোগী যে আলো ও তাপমাত্রা প্রয়োজন (Photo Sensitiveness and thermo sentsitiveness) তার বেলায় ক্ষতিকর প্রভাব সাংঘাতিক আকার ধারণ করে পরিবেশের ভারসাম্য ব্যাহত করেছে। এই বিষয়টি দেখার জন্য এপার ওপার কোথাও কেউ নেই।

পাঠকদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার তিন দিকে ভারত ও একদিকে মায়ানমার এবং বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত। আমাদের এই প্রতিবেশী দেশ বলুন আর উপসাগর বলুন তারা কেউই আমাদের প্রতি সত্যিকার অর্থে বন্ধু ভাবাপন্ন নয়। এ অবস্থায় ৪১৪৬ কিমি এর এই বিশাল সীমান্তের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা অত্যন্ত কঠিন এ ব্যয়বহুল একটি কাজ। এর জন্য যে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আনুষঙ্গিক অস্ত্রশস্ত্র ও লজিস্টিক প্রয়োজন আমাদের হাতে তা পর্যাপ্ত নেই। ফলে এই বর্ডার দিয়ে যে চোরাচালান ও অবৈধ কাজ হয় বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী তার মাত্র ১০ শতাংশের মতই ধরা পড়ে এবং বাজেয়াপ্ত হয়।

আমি দুঃখিত সংশ্লিষ্ট দফতর সমূহের সাথে অনেক যোগাযোগ করেও সাম্প্রতিক বছর সমূহের চৌরাচালান সংক্রান্ত পরিপূর্ণ তথ্যাবলী সংগ্রহ করতে পারিনি, তথ্য পাবার অধিকার right to information নামে আমাদের দেশে একটা আইন আছে। এই আইনের সুবিধা আমি ভোগ করতে পারিনি। তবে ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মেয়াদের কিছু তথ্যানুযায়ী চোরাচালান বাবদ লেনদেনের অবস্থা নিম্নরূপ: ( টাকার অংকে )
বছর বাংলাদেশেপাচার ভারতেপাচার মোট মূল্য
২০০৩ ১৪৬৪,৮২,৭৯৫৬১/- ৮৩,৭১,৬৯,০১৫/- ২৩০১৯৯৬৯৭১/-
২০০৪ ১৯৮,০৭,৯১৫০২/- ৮৬,২৬,১৮,৬৮৯/- ২৮৪৩৪১০১৯১/-
২০০৫ ১৭০,২৮,৯০৩১৮/- ৫৮,৭৭,০২,৬৯৭/- ২২৯০৫৯৩০১৫/-
২০০৬ ১৬৪,৪৯,২৬৭১৭/- ৪৭,১৯,৫৬,৬৮৬/- ২১১৬৮৮৩৪০৩/-
২০০৭ ১৯,১৭,৬০,৩৭৭/- ৭৫,২৫,৮৭,৬৪২/- ২৬৭,০১,৯৮০১৯/-
২০০৮ ১০৯৬১,৬৫,০২১/- ১৮,২৩,১০,৮২৭/- ১২৭,৮৪,৭৫৮৪৮/-

আগেই বলেছি এটা হচ্ছে মোট চোরাচালানের মাত্র ১০ শতাংশের হিসাব, ১০০% হলে এর মূল্য দাঁড়াবে বার্ষিক ১২৭৮ হাজার কোটি থেকে ২৮৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি, ১৬ বছর পর বর্তমানে এর মোট মূল্য দাঁড়াবে অন্যূন বার্ষিক ৬০০০ কোটি টাকার বেশি। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সময়ে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে চরিত্র বিধ্বংসী যে সব মারাত্মক মাদকদ্রব্য পাচার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বার্ষিক গড়ে তিন লক্ষ বোতল ফেনসিডিল, প্রতিবছর গড়ে ৫ কোটি কেজি মদ, প্রতিবছর এক লক্ষ কেজি গাঁজা, প্রতিবছর গড়ে ৩৫ হাজার কেজি হিরোইন, এবং বছরে গড়ে ৫ হাজার বোতল বিয়ার। নারকটিকস বিভাগ কর্তৃক সিজকৃত মাদকের এটি একটি খণ্ড চিত্র। টাকার অংকে ২০০৬ সালে আটককৃত মাদকের মূল্য ২১২ কোটি, ২০০৭ সালে ২৬৮ কোটি এবং ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত ৬১ কোটি টাকা।

এই সময়ে অর্থাৎ ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১৫৫ জন মহিলা ও ১৩৮ শিশুসহ ৪৯৩ জন ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারকালে সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়েছে।

বাংলাদেশে চোরাচালানের জন্য পণ্য তৈরি ভারতের একটি লাভজনক শিল্প। শুধু পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত ও তার সন্নিহিত এলাকায় ফেনসিডিল তৈরি ও পাইকারী বিক্রির জন্য ৩০২টি কারখানা ও আউটলেট সক্রিয় আছে এবং এগুলো পরিচালনা করেন কোলকাতার ২১ জন প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য চোরা কারবারি। মাদক ও ফেনসিডিল চোরা কারবারের সাথে বাংলাদেশী বেশ কিছু অর্থপিশাচ চোরাকারবারি জড়িত রয়েছে। তারা ব্যক্তিস্বার্থে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর প্রতি আসক্ত করে একটি জাতিকে ধ্বংস করে দিতে বদ্ধপরিকর। ভারত সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী এদের দমনে বাংলাদেশ সরকারকে তারা সহযোগিতা করছেন। এক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্ন হচ্ছে এটাই যদি হয় তাহলে ভারত সরকারের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশে পাচারের জন্য বর্ডার এলাকায় ৩০২ টি কারখানা ও আউটলেট প্রতিষ্ঠার পেছনে যৌক্তিকতা কী? এখানে আরেকটি মারাত্মক খবরও আছে যা অনেকে জানেন না।

ফেন্সিডিলকে আমরা কাশের সিরাপ হিসাবে জানি, কাশি হলে আগে ডাক্তাররা এই সিরাপটি প্রেসক্রাইব করতেন এখনো অনেকে করেন। অনেকের প্রশ্ন তাহলে এটি মাদক হয় কিভাবে? কাশির ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত ও প্রেসক্রাইবকৃত ফেন্সিডিল আর মাদক হিসেবে বাংলাদেশে পাচারকৃত ফেন্সিডিল এক নয়। পাচারের জন্য তৈরি ফেন্সিডিল বিশেষভাবে ব্র্যান্ডেড করা, এতে ২৫ শতাংশের বেশি কোডিন ফসফেট মেশানো হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক। পক্ষান্তরে কাশির সিরাপ হিসেবে ব্যবহৃত ফেন্সিডিলে ওষুধ প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক নিয়ম বিধি অনুযায়ী আছে মাত্র ৫% কোডিন ফসফেট। বিএসএফ অথবা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কি এটা জানে না? চোরাচালানিরা অপরাধী এবং তারা যখন বিনা অনুমতিতে অন্য দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাদের অপরাধের মাত্র আরো বৃদ্ধি প্রায় সন্দেহ নেই। কারণ এটি বেআইনী-আইনের লংঘন। কিন্তু বিএসএফ যখন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার না করে তাৎক্ষণিক গুলি করার হুকুম দেয় তখন তো তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে। আবার তাদের চোখের সামনে যে পাচারের জন্য পণ্য তৈরির লক্ষ্যে শত শত কারখানা আউটলেট প্রকাশ্যে উৎপাদন ও বিপণনের কাজ করে তখন তা বন্ধ করার জন্য তাদের কোন ও তৎপরতা পরিলক্ষিত হয় না কেন?

এই পর্যায়ে আমি সীমান্তে বাংলাদেশ ভারতের তুলনামূলক অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করা জরুরি মনে করি। সাবেক বিডিআর বা বর্তমান বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের সবগুলো সেক্টরই ঢাকাস্থ তার প্রধান কার্যালয় পিলখানা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই সেক্টরগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণগুলো হচ্ছে ১। খুলনা ২। কুষ্টিয়া ৩। রাজশাহী ৪। দিনাজপুর ৫। রংপুর ৬। ময়মনসিংহ ৭। সিলেট ৮। কুমিল্লা ৯। খাগড়াছড়ি ১০। রাঙ্গামাটি ১১। চট্টগ্রাম ১২। ফেনী প্রভৃতি। পক্ষান্তরে বিএসএফ এর সীমান্তবর্তী সেক্টরসমূহের হেডকোয়ার্টার হচ্ছে দিল্লীতে। তারা বাংলাদেশের সাথে তাদের সীমান্ত অঞ্চলগুলোকে চারটি সীমান্ত হেডকোয়ার্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর প্রত্যেকটির অধীনে রয়েছে ২ থেকে ৩টি সেক্টর। তাদের প্রত্যেকটি সীমান্ত একজন আইজি এবং সেক্টর ডিআইজি দ্বারা পরিচালিত হয়। তাদের সীমান্তগুলোর অবস্থান হচ্ছে:

১। সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার : এর হেডকোয়ার্টার কোলকাতায় এবং কোলকাতা, কৃষ্ণ রামপুর ও মালদহে এর শাখা রয়েছে।
২। নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার : এর হেডকোয়ার্টার শিলিগুড়ি। শাখাগুলো হচ্ছে: কিষানগড়, শিলিগুড়ি এবং কুচবিহারে।
৩। আসাম, মনিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ফ্রন্টিয়ার : এর হেড কোয়ার্টার শিলং এবং শাখা রয়েছে গোহাটি ও শিলং-এ
৪। ত্রিপুরা, কাছাড় ও মিজোরাম। হেডকোয়ার্টার আগরতলা এর শাখাগুলো হচ্ছে কাছাড় ও মিজোরাম, উত্তর ত্রিপুরা ও দক্ষিণ ত্রিপুরা।
এসব সীমান্তে বিএসএফ’র ৫৮ টি এবং বিজিবি’র ৪৫ টি ব্যাটেলিয়ন কাজ করে। বিএসএফ’র একটি ব্যাটেলিয়নে আছে ১০২৬ জন ও বিজিবি’র একটি ব্যাটেলিয়নে ৮২৬ জন সৈন্য আছে, বিএসএফ’র মোট ষ্টেশন ৪৪১১৮ টি বিজিবির ২৮৯১০ টি। বিএসএফ’র পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ৪৬৮টি বিজিবির মাত্র ২৪টি।

https://www.dailysangram.info/post/553501