২৩ মার্চ ২০২৪, শনিবার, ৯:৪৭

সজিনা-বরবটি-করলার সেঞ্চুরি আলু ও গোশতের দামও বাড়তি

নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের বাজার। সবজি ও পেয়াঁজের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে বেশকিছু পণ্যের দাম। রমযান মাসে বাজারে এখন সবচেয়ে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে সজিনা, বরবটি ও করলা। এগুলো ১০০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দামও বেড়েছে। এদিকে গরু-খাসি-মুরগিসহ সব ধরনের গোশতের দামই বেড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, দুয়েকটি সবজির দাম কমলেও বেশিরভাগ সবজিরই মৌসুম অনুযায়ী দাম বাড়তি রয়ে গেছে। তবে বাজারে তার কোন প্রভাব লক্ষ্যকরা যাচ্ছে না।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, সজিনা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটল কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে অন্য সবজির মধ্যে মুলার কেজি ৪০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টা এবং কাঁচামরিচ মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে সব ধরনের গোশতের দামই বাড়তি যাচ্ছে। কিছুদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গরুর গোশত ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসি প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও, এটির এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা দরে। যা কিছুদিন আগেও ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল। এছাড়া সোনালী মুরগির দামও বেড়ে প্রতি কেজি এখন ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে কক মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা এবং দেশী মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, পেঁয়াজের বাজার গত এক সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। একই পেঁয়াজের দাম এখন প্রায় অর্ধেক বা কাছাকাছি চলে এসেছে। বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজের দাম এখনও বেশি। গত বছরের এ সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতি মুনাফার আশায় অনেকেই পেঁয়াজ মজুত করেছিল। কিন্তু ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে এমন খবর বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে।

তবে বিপরীত চিত্র রয়েছে আলুর বাজারে। সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। তবে এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে আরও বেশি, ১২ থেকে ১৫ টাকা। কারণ মাস খানেক আগে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছিল আলুর দর। প্রতি কেজি নেমেছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। কিন্তু কিছুটা বেড়ে গত সপ্তাহে আলু বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এখন দাম আরও বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে ডিমের চাহিদা কমে যায়। যে কারণে ঢাকার বাজারে দ্রুত কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম। গত তিন দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। কোনো কোনো বাজারে এর চেয়েও বেশি কমেছে। ফলে বড় বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম নেমেছে ১২০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ২০০০-২৮০০ টাকা, রুই মাছ ৪৫০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০-১৫০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কই মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গতকাল মুদি দোকানের পণ্যের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে এক লাফে ৪০ টাকা বেড়ে গেছে খেসারির ডালের দাম। ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১৬০/১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে খেসারির ডাল ছিল ১৬০ টাকা কেজি, তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। খেসারির ডালের দাম কমে যাওয়া নিয়ে এক বিক্রেতা আমিনুল বলেন, ঘাটতি ছিল বলেই দাম বেড়ে গিয়েছিল। এখন ঘাটতি কমে যাওয়ায় দাম আবার কমে গেছে।

এছাড়া মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://www.dailysangram.info/post/552068