৬ মার্চ ২০২৪, বুধবার, ৭:৫৫

ডলারের মূল্য বৃদ্ধি

এক প্রকল্পে খরচ বেড়েছে ১৫১ কোটি

ডলারের দাম বৃদ্ধির ধাক্কা লেগেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশ্যালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পে। মুদ্রা বিনিময় হার তারতম্যের কারণে প্রকল্পটিতে ব্যয় বাড়ছে ১৫৮ কোটি ৮৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। তবে মোটরযান, কম্পিউটারসহ কয়েকটি অঙ্গের ব্যয় ৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা হ্রাস পেয়েছে। ফলে নতুন করে প্রকল্পের খরচ বাড়ছে ১৫১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এদিকে গত বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ শেষ হয়ে গেলেও আরও ১ বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া ৪ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের সময় বেড়ে সাড়ে ৮ বছরে ঠেকেছে। ওদিকে প্রকল্পটিতে অনুমোদন বহির্ভূত খরচ করা হয়েছে। এই খরচকে শৃঙ্খলা পরিপন্থি বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এ ছাড়া কনস্ট্রাকশন খাতে ১০০ ভাগ কাজ শেষ হলেও ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৭৮ কোটি টাকারও বেশি। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র বলছে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিলের (ইডিসিএফ) সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট যেকোনো আমদানিকৃত পণ্য ও ম্যাটেরিয়ালসের বিপরীতে সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত সকল কাস্টমস ডিউটি, ট্যাক্সেস, লেভিস, টিডিএস, ভ্যাট ইত্যাদি ক্রয়কারী কর্তৃক পরিশোধ করতে হবে।
বিজ্ঞাপন

কিন্তু কর কমিশনারের কার্যালয় থেকে ধার্যকরণের সময় বর্তমান ইউএস ডলার রেট (১ ইউএস ডলার সমান সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা) বিবেচনা করা হয়েছে। যা চুক্তিকালীন ডলার থেকে রেটের তুলনায় অধিক (১ ইউএস ডলার সমান সর্বোচ্চ ৮০ টাকা)। এ ব্যয়গুলো জিওবি খাত থেকে বহন করতে হবে বিধায় এই খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মোটরযান, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, কম্পিউটার সফটওয়্যার, ফার্নিচার, ফিজিক্যাল ও প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে জিওবি বাবদ ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের কিছু অঙ্গে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে জিওবি অংশে আয়কর, ভ্যাট, সিডি বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫৮ কোটি ৮৬ লাখ ৩৭ কোটি এবং হ্রাস পেয়েছে ৮ কোটি ৯৫ লাখ ২২ হাজার টাকা। কাজেই জিওবি খাতে মোট বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪২ কোটি ৯১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। সার্বিকভাবে দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাবে ১ বছর মেয়াদ বৃদ্ধিসহ ১৫১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের উপর একটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা সূত্র জানায়, প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে আরও ১ বছর মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকে বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে অনুমোদন বহির্ভূত ব্যয় করা হয়েছে জানিয়ে সূত্র আরও জানায়, সর্বশেষ অনুমোদিত আরডিপিপি অনুযায়ী ইলেক্ট্রিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট অঙ্গের জন্য ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার সংস্থান ছিল। তবে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এই খাতে ব্যয় করা হয়েছে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অনুমোদনবহির্ভূত এই খরচ শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এ ছাড়া প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন কাজ ১০০ ভাগ সম্পন্ন হওয়া শর্তেও এই খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এই ব্যয় বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। আর ১৩০৯৩টি মেডিকেল অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট খাতে ৯৬ কোটি ৬৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে।

https://mzamin.com/news.php?news=100489