১০ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার, ১১:১৫

রানা দাশগুপ্তের অভিযোগ

দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও প্রকৌশলী আবদুর রশীদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সনাতনী মঠ-মন্দির সেবায়েত পুরোহিত কল্যাণ সংস্থার অভিযোগ- নগরীর চকবাজারে সোয়া ছয় কানি জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তিনি (মহিউদ্দিন চৌধুরী) বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে হিন্দুদের সোয়া ৬ কানি জমি দখলের পাঁয়তারা করেছেন। এখনও করছেন। অথচ তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি কোন দলের নেতা তাও আমরা সবাই জানি। আমরা সরকার ও সরকারি দলের মানসম্মান ক্ষুণœ হোক তা চাই না। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব সম্পত্তি রক্ষা করা। এখন নাগরিকদের পক্ষ থেকে বলতে হয়, আপনারা আপনাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সনাতনী মঠ-মন্দির সেবায়েত পুরোহিত কল্যাণ সংস্থার আহ্বায়ক জহর লাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ও প্রকৌশলী আবদুর রশীদ নগরীর চকবাজারে দেবোত্তর সম্পত্তি তথা শিবমন্দির পুকুর ভরাট করে অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মাণের পাঁয়তারা করেন। সম্প্রতি একটি ডিও লেটার থেকে আমরা এটি জানতে পেরেছি। যাতে উল্লেখ রয়েছে, প্রকৌশলী আবদুর রশীদ ও মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকাকালে সিটি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক সুপার মার্কেট নির্মাণ প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, চক্রান্ত করে দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হলে বর্তমান সেবায়েত বিশ্বজিত চক্রবর্তী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিট নম্বর ৮৮৩৭/২০১৬। গত বছর ২ আগস্ট অধিগ্রহণের ‘কথিত’ নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর জমি অধিগ্রহণ করতে না পেরে পুকুরটি মাটি, বালি ও ময়লা ফেলে ভরাট করে ফেলছে। পুকুরটির দক্ষিণ পাড় কেটে বড় পাইপের মাধ্যমে পুকুরের পানি সিটি কর্পোরেশনের নালার সঙ্গে সংযুক্ত করে সেচে ফেলা হয়। সেবায়েত বিশ্বজিত চক্রবর্তী গত ৭ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে হাইকোর্টে আরেকটি রিট করেন। পরে হাইকোর্ট বেঞ্চ পুকুরসহ যাবতীয় দেবোত্তর ভূমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ভূমি সচিব, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, পরিবেশ অধিদফতর ও ফায়ার ব্রিগেডকে নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার পিএস আমির হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিবমন্দিরের জমি, পুকুরসহ দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সনাতনী মঠ-মন্দির সেবায়েত পুরোহিত কল্যাণ সংস্থার সহসদস্য সচিব নিতাই ভট্টাচার্য, সহআহ্বায়ক পণ্ডিত বিজয় চক্রবর্তী ও চকবাজার শিবমন্দিরের সেবায়েত বিশ্বজিত চক্রবর্তী।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/03/10/107596