৩০ ডিসেম্বর ২০১৬, শুক্রবার, ৪:২৭

আলমগীর মহিউদ্দিন

চাই আইনের শাসন

আশা-নিরাশার দোলাচালে মানবকুল স্বনির্মিত গতিশীল সময়ের এক ভগ্নাংশ থেকে আরেক ভগ্নাংশে বহু পুরনো আকুতি নিয়ে পা দিলো।
বিশ্বব্যাপী আবার নতুনভাবে এই প্রাচীন আকুতি নিয়ে দাবি, আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। অবশ্য এ আলোচনার শুরুই হয়তো হয়েছে মানুষের আবির্ভাবের কাল থেকে। তখন এর আকার ও প্রকার ছিল ভিন্ন। এ আকুতি হলোÑ চাই ‘আইনের শাসন’। হয়তো এটা চলবে অনাদিকাল। কারণ একটিই, মানবকুলের ক্ষমতাবান-ক্ষমতাসীনেরা দাবি করে আইনের শাসন চালু আছে। এ দাবি দ্বারা তারা আশান্বিত তাদের ক্ষমতা অব্যাহত থাকবে। তবে একটু উদ্বিগ্নও বটে! এ জন্য যে, বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, তাহলে তাদের এই বিশাল শান্তি ও স্বস্তিতে ছেদ পড়বে। কারণ নিরাশাগ্রস্ত হচ্ছে ৯৯ শতাংশ মানুষ। ক্ষমতাহীন, হতাশাগ্রস্ত এবং ভাগ্যবিলাসী।
তবে সবাই এক মতে পৌঁছেছে। তা হলো আইনের শাসনের বিকল্প নেই। এ জন্য যে, ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান নির্বিশেষে বিশ্বাসÑ জীবনের পথকে নির্বিঘœ করতে হলে একটি নিয়ম সবাইকে মানতে হবে। আইনের শাসন হলো সেই নিয়ম। এমন নিয়মের ব্যতিক্রম হলে বহুমাত্রিক সমস্যা ও অশান্তির উদ্ভব ঘটে। রাজনৈতিক বা অপরাধমূলক ইচ্ছাগুলো বাধাহীন হয়। সন্ত্রাস ডালপালা মেলে। বিচার বিভাগ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কাউকে রক্ষা করতে পারে না। ক্ষমতাবান-ক্ষমতাসীনদের লোভ-লালসার কোনো সীমারেখা থাকে না। সরকার জনবিরোধী হয়ে পড়ার ফলে দেশে বিরামহীন অশান্তি বিরাজ করে।
তা হলে আইনের শাসন কী? সব আলোচনা-বিতর্ক শেষে সবাই একমত হয়েছেন যে, সর্বসম্মত কতগুলো নিয়ম সবাই মানবে, এমনকি রাষ্ট্রও। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছা আইনের বাইরে থাকবে না। জাতিসঙ্ঘও আইনের শাসনের এই সংজ্ঞা গ্রহণ করেছে এবং এটা স্পষ্ট করেছে যে, সবাই, এমনকি রাষ্ট্রও এই আইনের আওতায় থাকবে ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। তাই আইন হতে হবে স্বচ্ছ, জনকল্যাণকামী, সর্বস্বীকৃত ও বিশ্বমানের। এর সামনে সবাই সমান এবং সবারই এর আশ্রয়ে থাকার অধিকার থাকবে এবং এর সুযোগ নিতে পারবে। সবার জন্য আইন খোলা থাকবে। বিশেষ করে জনগণের প্রান্তিক অংশের (গরিব, অশিক্ষিত, অসংগঠিত) জন্য সহজলভ্য হতে হবে।
আইনের শাসনের জন্য বর্তমান সরব আলোচনার মূল কারণ ঐতিহাসিক। শক্তিমানেরা সংখ্যাগরিষ্ঠদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বারবার আইনের শাসনকে কুক্ষিগত করে নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে ব্রতী থেকেছে। প্রায়ই এমন আইন তৈরি করেছে যা জনবিরোধী। এ প্রক্রিয়া এখনো চালু আছে, কখনো কৌশলের মাধ্যমে, আবার কখনো খোলামেলা শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। এখন এ দুই প্রক্রিয়াই সচল। আধুনিক প্রযুক্তি বিশেষভাবে এই প্রক্রিয়ার পরম বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
এটা সত্য, ঐতিহাসিকভাবেই শক্তিমানেরা বিশেষ করে সরকারে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা বিচারব্যবস্থাকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এর ফলে বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা অনেকাংশে হারিয়ে গেছে। মস্তানি এবং স্থানীয় পেশিশক্তি শক্তিশালী হয়েছে। এমন অবস্থায় সত্যিকারের আইনের শাসন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকার প্রায়ই তাদের প্রতিপক্ষকে নির্মূলের কর্মকাণ্ড গ্রহণ করছে, কখনো তাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে অথবা নিছক অপরাধী বলে প্রচার করে। বন্দুকযুদ্ধ, সংঘর্ষ, ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দিয়ে তাদের হত্যা করছে। যেমন ভারতের পিইউসিএল বুলেটিনে বলা হয়, সে দেশের ইউপিতে পুলিশ ১৯৮০ সালে এক মাসেই ৯৮৩ জনকে ডাকাত বলে হত্যা করে। পরে বুলেটিনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এরা কেউই ডাকাত ছিল না। বুলেটিনের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে পুলিশ কিছু কারণ দেখায় এমন হত্যার পেছনে, যেমন ‘পালিয়ে যাবার সময় গুলিতে হত্যা’, ‘গোলাগুলিতে হত্যা’, ‘আস্তানায় পুলিশি হানায় বাধা দিতে গোলাগুলিতে হত্যা’ ইত্যাদি। এখন এটা বহুল প্রচলিত বক্তব্য যা এখন সর্বত্র সরব। বুলেটিন মন্তব্য করে এসব দুর্ধর্ষ অপরাধী অস্ত্র চালনায় কি এতই অপটু যে, যুদ্ধে বা গোলাগুলিতে শুধু তারাই মারা পড়ে। কচিৎ কখনো কোনো পুলিশ আহত হয়, তবে তা সামান্য। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বক্তব্য হলো, ধৃত অবস্থায় মৃত্যু নিয়ে। পুলিশ প্রায়ই দাবি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় বন্দুকযুদ্ধে মৃত বলে। ছবিতে দেখা যায় মৃত ব্যক্তি হ্যান্ডকাফে আবদ্ধ। তাহলে সে ব্যক্তি বন্দুক কোথায় পেল বা যুদ্ধ করল কেমন করে। পিইউসিএল ভারতের পুলিশের এসব ঘটনা উল্লেখ করে মন্তব্য করছে, এর মূলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আইনের প্রতি নগণ্য শ্রদ্ধা নেই অথবা আইনের শাসন অনুপস্থিত। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলো নামেমাত্র আছে।
পিইউসিএল (পিওপিলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক রাইটস) ভারতের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ জয়প্রকাশ ১৯৭৬ সালের ১৭ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি বাড়াবাড়ি এবং অসম্ভব সামাজিক পরিস্থিতির প্রতিবাদ করার জন্য স্থাপন করেন। উল্লেখযোগ্য ভারতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরা গান্ধীকে নির্বাচনে দুর্নীতি করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে তার লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করেন। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে এ আদেশ স্থগিত করেন এই শর্তে যে, তিনি সংসদে যেতে পারবেন তবে ভোট দেবেন না। এ সুযোগে ইন্দিরা গান্ধী প্রেসিডেন্টকে দিয়ে ১৯৭৫ সালের ২৫/২৬ জুনের গভীর রাতে তাদের সংবিধানের ৩৫২ ধারা অনুসারে ‘অভ্যন্তরীণ জরুরি অবস্থা’ (ইন্টারন্যাল ইমারজেন্সি) জারি করান (তার কেবিনেটও এটা জানত না) এবং এর অধীনে মিসা ব্যবহার করে (মেইনটেন্যান্স অব ইন্টারনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ১৯৭১) ব্যাপক ধরপাড়ক শুরু করেন। সরকারি হিসাবে কয়েক দিনের মধ্যে ৩৪ হাজার ৯৮৮ জনকে মিসা ব্যবহার করে এবং ৭৫ হাজার ৮১৮ জন ডিআইএসআর (ডিফেন্স অ্যান্ড ইন্টারনাল সিকিউরিটি অব ইন্ডিয়া রুলস) ব্যবহার করে আটক করেন। এর মধ্যে ছিলেন জয়প্রকাশসহ রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক এবং প্রতিবাদী। স্টেটসম্যান সম্পাদক কুলদীপ নায়ারও এই আটকদের লিস্টের মধ্যে ছিলেন। ভারতে ‘আইনের শাসনের’ দাবিতে পিউসিএলসহ সব রাজনৈতিক দল (তার মধ্যে বর্তমানে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দলসহ) ও সংস্থাগুলো আন্দোলন শুরু করলে ইন্দিরা একের পর এক নিবর্তনমূলক আইন জারি করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এমনকি সংসদের বিতর্কের বিবরণ ও কোর্টের বিরণও প্রকাশ নিষিদ্ধ করেন অথবা সেন্সরশিপ আরোপ করেন। পিউসিএল অক্টোবর ২০১৬ বুলেটিনে উল্লেখ করে ‘সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের বিদ্যুৎ সংযোগও ইন্দিরা বিচ্ছিন্ন করে দেন।’ বিচার বিভাগকে ভীতির মধ্যে রাখার জন্য তিনি বিচারক বদলি, প্রমোশন এবং বাদ দেয়া শুরু করেন। প্রথমেই তিনজন জাস্টিসকে ডিঙিয়ে এক জাস্টিসকে নিয়োগ দেন। তিনি এ ধারণা স্পষ্ট করতে সক্ষম হন, বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে তার হুকুমে চলবে। সুপ্রিম কোর্টের এই তিনজন বিচারক ইন্দিরা সরকারের দাবি ‘যে সংসদ ইচ্ছামতো সংবিধান সংশোধন করতে পারে’ নাকচ করেছিলেন। আর চতুর্থ বিচারককে (জে এন রায়) প্রধান বিচারপতি করার কারণ ইন্দিরার পছন্দের একটি মামলায় তার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। তিন বিচারক নাকচ করলেন সরকারের দাবি ‘সংসদ এত শক্তিবান যে ইচ্ছা করলে এটা রাজতন্ত্রও চালু করতে পারে।’ আবার এই বিচারকেরা সরকারের দাবি যে ‘পুলিশ কর্মসম্পাদন বা আত্মরক্ষার জন্য কাউকে হত্যা করলে তাকে গ্রেফতার বা বিচার করা যাবে না’ নাকচ করেন। আবার ‘সরকার প্রয়োজনের খাতিরে কাউকে গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম করতে পারবে’ এই দাবিও নাকচ করে দেন। বরং প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য জবাবদিহিতা থাকার জন্য মত দেন। এ জন্য তারা ইন্দিরার বিরাগভাজন হন। এই ট্র্যাডিশনের এরপর আর ব্যত্যয় ঘটেনি।
ইন্দিরা বিশেষভাবে বিচারকদের ভীতির মধ্যে রাখার জন্য সব চেষ্টা করেন। যেমন হাইকোর্টের সব ক্ষমতা হয় কেটে দেন নতুবা নতুন সংজ্ঞা দেন। রাষ্ট্রীয় আইনগুলো পর্যালোচনা করা, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ ও বিচার অথবা নির্বাচনসংক্রান্ত মামলা প্রভৃতি হাইকোর্টের এখতিয়ারের বাইরে আনা হয়। আইন করা হয় কোনো আইনের ব্যবহার বা বিধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে যদি সুপ্রিম কোর্টের সাতজনের বেঞ্চের তিন ভাগের দুই ভাগ অথবা হাইকোর্টে সাতজনের বেঞ্চের পাঁচজন সে বিষয়ে একমত হন। এর আগে এমন বিষয় মেজরিটি সিদ্ধান্তেই হতো। আবার একজন এমপি বা এমএলকে অযোগ্য ঘোষণা করার অধিকার শুধু প্রেসিডেন্টকে দেয়া হয়। আদালতকে এ বিষয় থেকে বাদ দেয়া হয়। ইন্দিরা ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনীর সব অধিকার গ্রহণ করেন এবং কোনো আদালতে তার বিচারও নিষিদ্ধ করা হয়। পিউসিএলের মতে, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে আইনের শাসন লুপ্ত হলো। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো ইন্দিরাপুত্র সঞ্জয় গান্ধী সরকারের কোনো পদে অধিষ্ঠিত না থেকেও, তিনি নিজেই আইনে পরিণত হন। কাকে ধরতে হবে, নির্মূল করতে হবে, বিভিন্ন পদে রাখতে হবে থেকে রাষ্ট্রীয় সব কর্মকাণ্ডের জন্য তার নির্দেশ কার্যকর করা হয়। ফলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো সর্বত্র সহজ হয়ে পড়ে। যেমন তার বাড়ি প্রশস্ত এবং সুন্দর করার জন্য ১৫০১০৫টি গরিবের ‘যু¹ি-যোপা’ ভেঙে দেয়া হয়। জনসংখ্যা কমানোর জন্য পুরুষদের নির্বীর্যকরণ কর্মকাণ্ড শুরু করেন সঞ্জয়। ১৯৭৫-৭৭ মধ্যে প্রায় দেড় কোটি মানুষকে এই নির্বীর্য করা হয়।
ভারতীয় এই আইন এবং কর্মকাণ্ডগুলো এখনো চালু। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো তৃতীয় বিশ্বসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এভাবে জনগণের অধিকার এবং আইনের শাসন স্তব্ধ করছে। এর একটা চিত্র পাওয়া যায় ডব্লিউজেপির (ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট) রুল অব ল ২০১৬ ইনডেক্সে। এই ইনডেক্স তৈরি হয় ৪৪টি বিষয়ের ওপর। যেমন সরকারি ক্ষমতা, দুর্নীতিমুক্ত কি না, মৌলিক অধিকার আছে কি না, আইন ও নিরাপত্তা কতটুকু, সরকারি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাগুলো কী, বিচার কোন পর্যায়ে। এ বছর ১১৩ দেশের ওপর এ জরিপ করা হয়। এতে ডেনমার্ক সবার ওপরে স্থান পায়। এরপর নরওয়ে, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। আর সর্বনি¤েœ ভেনিজুয়েলা, কম্বোডিয়া, আফগানিস্তান ও ইজিপ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান ১৮, ব্রিটেন ১০, জার্মানি ১০, সিঙ্গাপুর ৯। বাংলাদেশের স্থান একেবারেই নিচে।
গ্লোবাল ট্রাস্ট ফর রুল অব ল’তে দাবি করা হয়েছে, আইনের শাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সব সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশ বহু আইন, চুক্তি ও মধ্যস্থতা করেছে। তবুও বিশ্বব্যাপী এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। কারণ মানবিক অধিকার সংস্থাগুলো আইনের শাসনের ওপর জোর দেয় না। তারা বর্বরতা বা দুষ্কার্য ঘটার পড়ে তার প্রতি নজর দেয়। অন্তত ৪০টি জাতিসঙ্ঘের সংস্থা এ বিষয় নিয়ে গত ৩০ বছর কাজ করলেও, বিশ্বে আইনের শাসনের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। আবার বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাও এ বিষয়ে নজর না দেয়াতে বিভিন্ন শক্তি তাদের অনৈতিক এবং জনবিরোধী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে বলে ট্রাস্ট তাদের অনুসন্ধানী রিপোর্টে দেখিয়েছে।
আইনের শাসনের সবচেয়ে বড় বাধা এবং ব্যত্যয় হলো পুলিশের ‘এনকাউন্টার কালচার’। পুশকর রাজ এবং শোভা শর্মা তাদের ‘এনকাউন্টার কালচার অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি অব পুলিশ’ প্রবন্ধে এর ভয়াবহতা উল্লেখ করেছেন। তারা ভারতে এই পুলিশি কর্মকাণ্ডে নিহত শত শত ব্যক্তির বর্ণনা দিয়ে বলেন, সরকারি অবহেলা, বিকৃত আইন এবং আমলা ও রাজনীতিবিদদের অমনোযোগিতার কারণে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। ফলে সামাজিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অশান্তি বাড়ছে। তারা গুজরাটের মুসলিম হত্যাকাণ্ডের বিস্তৃত আলোচনা করে বলেছেন, পুলিশি এনকাউন্টার কালচার যেখানেই চলছে, সেখানেই আইনের শাসন অনুপস্থিত। এটা বন্ধ হলে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে এবং শান্তি, প্রগতি এবং উন্নয়ন অবাধ হবে। তাই নতুন বছরে সবার আকুতি আইনের শাসন চাই।
http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/182909