৫ মার্চ ২০১৭, রবিবার, ১:০২

আমান আযমী এবং মীর আহমদকেও দ্রুত মুক্তি দেয়া উচিত

বাংলাদেশে আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর দীর্ঘ ৬ মাস নিখোঁজ থেকে বাড়ি ফিরেছেন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ-িত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। হুম্মামের সন্ধান লাভের পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক বিবৃতিতে বলেছে, গোপনে আটক আরও দুই ব্যক্তি গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহ হিল আমান আযমী ও মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমদ বিন কাসেমের ভাগ্যে কি ঘটেছে, তারা কোথায় আছেন সে বিষয়টিও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দ্রুত খোলাসা করা উচিত। তাদের (ওই দুই ব্যক্তি) হয় মুক্তি দেয়া উচিত নতুবা বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গত বছরের ৪ আগস্ট সাদা পোশাকে একদল লোক তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে গত ২ মার্চ রাজধানীতে তার বাসার কাছে ছেড়ে দেয়া হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দ-িত গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আজমি ও মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমদ বিন কাসেমকেও গত বছরের আগস্টে পৃথক ঘটনায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ নেই। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত হবে অনতিবিলম্বে ওই দু’জনকে মুক্ত কিংবা বিচারের মুখোমুখি করা।

বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, হুম্মাম কাদের চৌধুরীর মুক্তিলাভের বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু তাকে এতদিন গোপন স্থানে আটকে রাখা ঠিক হয়নি। মীর আহমদ বিন কাসেম ও আবদুল্লা হিল আজমির ক্ষেত্রে কি হয়েছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত সেটি পরিষ্কার করা। সেই সঙ্গে তাদের পরিবারকে এদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দেয়া উচিত। ওই দু’জনকে পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীর সামনে তুলে নেয়া হয়েছে। তাই তাদের ‘গুমের’ সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সম্পর্ক নেই- এ কথা বলার সুযোগ নেই।

অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক বিরাজ পত্মিক বলেন, গুম বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি আতঙ্কের নাম। বহুদিন ধরে বহু পরিবার তাদের প্রিয় মানুষটি কোথায় আছে কেমন আছে সেটি না জেনে চরম দুঃখ নিয়ে বেঁচে আছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া দরকার। সরকারের উচিত যারা গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের মুখোমুখি করে মৃত্যুদ- দেয়া। গুম-অপহরণ ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ রয়েছে। গত সপ্তাহেও জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ ওই তিন ব্যক্তিসহ অন্যান্য গুম-অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধান বের করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে গুম-খুন বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্কিং গ্রুপ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও কয়েক মাস ধরে গুম-খুনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

http://www.dailysangram.com/post/274310