২৬ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার

জামায়াতের পেশাজীবী ফোরামের নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুবসমাজকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে

-ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াত ক্ষমতায় এলে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করে জাতিকে একটি ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি গতকাল ২৫ নভেম্বর রাত ৮.০০ টায় মিরপুরের রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ ভিলেজ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

পেশাজীবী পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তরের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি, পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম।

উপস্থিত ছিলেন পেশাজীবী জোনের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, কাফরুল জোনের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ, ঢাকা-১৫ আসনের সদস্য সচিব ও মিরপুর পূর্ব থানার আমীর শাহ আলম তুহিন, কাফরুল দক্ষিণ থানা আমীর আনোয়ারুল করিম, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থানা আমীর সোহেল রানা, সাহিত্য-সংস্কৃতি থানা আমীর আবেদুর রহমান, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখার সভাপতি হাফেজ আবু তাহের, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিম শাখার সভাপতি রেজাউল করিম, কাফরুল উত্তর থানা আমীর রেজাউল করিম মাহমুদ, কাফরুল পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত আমীর আতিক হাসান রায়হান, আদর্শ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী বিভাগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ ইসমাঈল, ডা. হাসানুল বান্না, জসিম উদ্দিন, হাফেজ আশিকুর রহমান, আবু নাহিদ ও মুফতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই তাদের যোগ্যতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী জাতীয় দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। নারীদের ঘরে ও কর্মস্থলে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করা হবে। কারো ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না; বরং প্রত্যেক নাগরিকই তাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার ভোগের নিশ্চয়তা পাবেন।

মূলত আমরা এমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও অবক্ষয় থাকবে না। বরং আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মানবিক রাষ্ট্র গড়তে চাই। তিনি সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লাকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা লাভের ৫৪ বছর পূর্ণ হলেও অবক্ষয় ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাবে দেশকে কাঙ্ক্ষিতভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারা জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা না করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু আমরা নির্বাচিত হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করা হবে, যেখানে পড়াশোনা শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী সবার কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে। জন্মের পর থেকেই প্রতিটি শিশুকে সঠিক চিকিৎসা ও ভালো শিক্ষার মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনব এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করব। দুর্নীতিকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে না আনা পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।

আমীরে জামায়াত ঢাকা-১৫ আসনের বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে এ এলাকায় সন্ত্রাসের কালো ছায়া দূর করব এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

যুবসমাজের উদ্দেশে ডা. শফিক বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা তোমাদের দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাই এবং তোমাদের নিয়েই সুন্দর দেশ গঠনের স্বপ্ন দেখি। তিনি সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।