১৬ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:১৩

ছাত্র আন্দোলনের সাবেক ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে সকলকে ময়দানে আপোষহীন থাকার আহ্বান

-ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের

ইসলামী আন্দোলনে সাবেক বলে কিছু নেই; বরং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে জান্নাতের অভিযাত্রী হওয়ার মাধ্যমে প্রত্যেক মুমিনকে মঞ্জিলে মকসুদের দিকে অগ্রসর হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাদের।

তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভার্চ্যুয়ালি প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড.মাওলানা হাবিবুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক প্রমূখ।

ডা. তাহের বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের হতাশ হওয়ার কোন সুযোগ নেই বরং বিজয় আমাদের মধ্যে অবধারিত যদি আমরা প্রকৃত মুমিন হতে পারি। মূলত, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা সকল শ্রেণি ও মত-পথের মানুষের মধ্যে বেড়েছে। জামায়াত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী যে একটি সুশৃঙ্খল, গণতান্ত্রিক, গণমুখী, কল্যাণকামী ও আদর্শবাদী দল একথা নিয়ে কেউ তেমন দ্বিমত পোষণ করেন না। তাই এই ইতিবাচক দিকগুলোই আমাদেরকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামকে আরো শাণিত করতে হবে। ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করলে বিজয় অবশ্যাম্ভাবী হয়ে উঠবে। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সকলকে সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ময়দানে আপোষহীন থাকার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। আর আমরা যারা এই বিধান মেনে চলি তারাই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই আমাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে, ‘আমরা কে, আমরা কার বা কিসের জন্য? মৃত্যুর পর আমাদের কী হবে; কিসে আমাদের সফলতা আসবে’? আর সত্যের পথে সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব পরিবর্তন করার জন্য এখনই আমাদেরকে দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। সাময়িক কোন ঘটনার কারণে আমাদেরকে হতোদ্দম হলে চলবে না বরং আমাদেরকে আবারো নতুন করে শুরু করতে হবে। নিজের সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি সৃষ্টি করতে হবে। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ও প্রত্যেককে নর শার্দুলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার আহবান জানান। তাহলেই দেশ ও জাতির কাঙ্ক্ষিত মুক্তি মিলবে।

মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, জীবনের কোন অংশেই কারো জন্যই আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই। আর এই মহতি কাজের আঞ্জাম দেওয়ার জন্য আমাদের প্রত্যেককে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হবে কর্মীদের চরিত্রমাধূর্য্য ও নেক কর্মতৎপরতার মাধ্যমে। সকলকে আমানতদার হতে হবে এবং সব সময় খেয়ানত থেকে বাঁচতে হবে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে ময়দানের অকূতোভয় সৈনিক হিসাবে। তাহলে দ্বীনের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।

ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আল্লাহ তা‘য়ালা আমাদেরকে খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছে। আর খলিফা বা প্রতিনিধির দায়িত্ব হলো মহাপ্রভূ কর্তৃক অর্পিত সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করা। সে কাজে আঞ্জাম দিতে গিয়েই আমাদের ভাইয়েরা ২৮ অক্টোবর শাহাদাতের অনন্য নজরানা পেশ করেছেন। শীর্ষনেতৃবৃন্দকে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে। তাই এই পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোন সুযোগ নেই বরং দ্বীন বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, আপনারা হচ্ছেন দ্বীনের পথের অগ্রসৈনিক। আপনাদের কাছেই আমারা দ্বীনের পতাকা হস্তান্তর করতে চাই। জনগণের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের জন্য আপনাদেরকেই ময়দানে আপোষহীনভাবে কাজ করতে হবে। গণবিচ্ছিন্ন ও বিনাভোটের সরকার আমাদেরকে গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করেছে। তাই দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য আপনাদেরকেই ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অন্যথায় আমাদের জাতিস্বত্ত্বাই অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে।