১২ জানুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ৩:০৮

ছাত্রশিবিরের সাবেক সাথী ও সদস্যদের নিয়ে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

কঠিন পরিস্থিতেও ইকামাতে দ্বীনের কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে

-মাওলানা আব্দুল হালিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে আমাদেরকে আনুগত্যের সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করতে হবে। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতেও ইকামাতে দ্বীনের কাজে সক্রিয় থেকে ইসলামের বিজয়কে তরান্বিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও কোনো অপশক্তির সাথে আপস করেননি। জালিমের সকল জুলুমকে উপেক্ষা করে তারা এদেশে ইসলামের বিজয়কে এগিয়ে নিতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। আমাদেরকেও কৌশল ও বিনয়ের মাধ্যমে সকল স্থানে সংগঠনকে তুলে ধরতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে নিজেদের মাঝে কোনো ক্ষোভ বা অভিমান রাখার কোনো সুযোগ নেই। ছাত্রজীবনে আমরা কুরআনের আলোকে যে শিক্ষা অর্জন করেছি, বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনে আমাদের সেই শিক্ষা, মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

আজ ১২ জানুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণেরউদ্যোগে আয়োজিত ছাত্রশিবিরের সাবেক সাথী ও সদস্যদের নিয়ে শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহা. দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আঃ মান্নান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার দেশকে গভীর সংকটে নিমজ্জিত করেছে। তারা দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। দেশের জনগণ প্রহসনের নির্বাচনে ভোট বর্জন করে আওয়ামী লীগকে চরম তিরস্কার জানিয়েছে। অথচ শেখ হাসিনার সরকার জোর করে, একগুয়েমী করে নির্বাচনের নামে তামাশা করে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। শেখ হাসিনা নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারকে বিপদে ফেলছেন। অন্যদিকে গণমাধ্যমে যারা একপেশে সাংবাদ পরিবেশন করে তারাও আজ বিদেশিদের স্যাংশনের ভয়ে আছে। এবার চতুর্থদিক থেকে এই অবৈধ সরকারের উপরে নিষেধাজ্ঞা আসবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবার জবাব দিতে বাধ্য থাকবে। এমতাবস্থায় প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সচেতন থাকতে হবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণ রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামতে বাধ্য করবে। তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতার সাথে ময়দানে ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।

অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, একজন ঈমানদার হিসেবে দুনিয়ার সুযোগ সুবিধা আমাদের জন্য অগ্রগণ্য না। আমাদের মূল টার্গেট হবে আখেরাতে চূড়ান্ত সফলতা। আল্লাহর দেওয়া বিধানের সাথে আমাদের সম্পর্ক যতো মজবুত হবে ইকামতে দ্বীন বিজয়ের কাজ ততো সহজ হয়ে উঠবে। ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করতে আমাদেরকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রেও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। দ্বীনের বিজয়ের জন্য আমাদের দাওয়াতি কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের কাছে ইসলামী আন্দোলনের সঠিক আহ্বান পৌঁছিয়ে দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে নিজেদেরকে জান্নাতের উপযোগী করার পাশাপাশি এদেশে ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য আল্লাহর শর্ত গুলো পূরণে আমাকে ব্যাকুল থাকতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী ও বিজয়ী আন্দোলনে পরিণত করতে নিজেদের গণমুখি চরিত্রকে উদ্ভাসিত করতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে ইসলামী আন্দোলনের রাজধানীতে পরিণত করতে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সহ সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। নিজেদের পরিশুদ্ধ করে জান-মালের কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।