২৮ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৪

সিলেট মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

২৮ অক্টোবর জাতির জন্য একটি বেদনা বিধুর কলঙ্কময় দিন

-এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর জাতির জন্য একটি বেদনা বিধুর কলঙ্কময় দিন। ২০০৬ সালের এই দিনে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে দেশকে করদরাজ্যে পরিণত করার হীন উদ্দেশ্যেই দেশব্যাপী লগি-বৈঠার নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। যার সুদুরপ্রসারী ফলাফল জাতি আজ উপলব্ধি করতে পারছে। দেশে আইনের শাসন নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই। সর্বত্র দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। খুন, গুম, ধর্ষণ, হামলা-মামলায় নাগরিক জীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও সেদিকে ক্ষমতাসীনদের কোনো দৃষ্টি নেই।

তিনি বলেন, ভয়াল ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট রাজধানীর পুরান পল্টনসহ সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের উপরে পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডবলীলা চালায়। তারা প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে সাপের মত পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে। ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষমতাসীন সরকার পল্টন ট্র্যাজেডি’র এই জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করেনি। বরং রাজনৈতিক বিবেচনায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলা সমূহ প্রত্যাহার করেছে। অথচ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে কলঙ্কমুক্ত করতে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের বিচার সময়ের অপরিহার্য দাবী। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারেনা, যতই ষড়যন্ত্র ও টালাবাহানা হোক না কেন? দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করার সাধ্য কারো নেই। সময়ের ব্যবধানে লগি-বৈঠার নারকীয় তাণ্ডবের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবেই হবে। ইনশাআল্লাহ।

তিনি ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে ভয়াল ২৮ অক্টোবর উপলক্ষে লগি-বৈঠার তাণ্ডবে শাহাদাৎবরণকারী শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক দায়িত্বশীল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং সিলেট জেলা উত্তর জামায়াতের আমীর হাফিজ মাওলানা আনোয়ার হোসাইন খান।

বক্তব্য রাখেন মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা এডভোকেট আলিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগর সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম। সভা শেষে শহীদদের মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৬ সালে জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের রাজনৈতিক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়েই আওয়ামীলীগ মূলত এই জঘণ্য তাণ্ডবলীলা চালায়। সেদিন জামায়াতকে ধ্বংস করার জন্য নির্দয়, নিষ্ঠুর ও পাশবিক কায়দায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও তার বাম শরীকরা পরিকল্পিতভাবে যে নরহত্যায় মেতে উঠেছিল তা বিশ্ববিবেককে কাঁদিয়েছিল। প্রকাশ্য দিবালোকে লগি, বৈঠা ও মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল তা দেখে বিশ^ বিবেক স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই বর্বরতা দেখে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব সহ সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অথচ ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিকতার বিচার হওয়া তো দূরের কথা, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাই প্রত্যাহার করে নেয়। দেশে আইনের শাসন ও সুবিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে এমন জঘণ্য হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।