১৭ অক্টোবর ২০২০, শনিবার

রাজধানীতে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

সিলেটের এক পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে পিটিয়ে হত্যা অতীতের সকল নির্মমতাকে হার মানিয়েছে -ড. রেজাউল করিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ কর্তৃক রায়হানকে পিটিয়ে হত্যা অতীতের সকল নির্মমতাকে হার মানিয়েছে। নিহত ব্যক্তির মাত্র ২ মাস বয়সী শিশু সন্তানও রয়েছে। পিতার অনাকাঙ্খিত মৃত্যুতে এই শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্বাধীন ও সভ্য সমাজে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি রায়হান হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে নিহত রায়হানের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশব্যাপী খুন, গুম ও নারী নির্যাতন বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ আল আরাফা ব্যাংকের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যালে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি এনামুল হক, প্রায়ভেট বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মাসুদুর রহমান, উত্তরের সেক্রেটারি ডা. মুরাদ হোসেন ও পশ্চিমের সেক্রেটারি মারুফ হোসেন প্রমূখ।

ড. রেজাউল করিম বলেন, সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের অবৈধভাবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ খুন, গুম ও বিরোধী মত দমনে দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত কতিপয় অসৎপ্রবণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীরই সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই নিজেদের স্বার্থেই সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে এসব অসৎপ্রবণ সদস্যদের বয়কট করে বিচারের কাছে সোপর্দ করা করা উচিত। মূলত এসব অসৎপ্রবণ সদস্যদের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সারাদেশে গুম, খুন, নারী নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মহোৎসব চলছে। তিনি সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমী, ব্যারিষ্টার আরমান, শিবির নেতা হাফেজ জাকির, ওয়ালী উল্লাহ সহ সকল গুমকৃত ব্যক্তিকে অবিলম্বে পরিবারের কাছে ফেরৎ দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, তারা করোনার চেয়ে শক্তিশালী। বর্তমানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্তৃক নারী নির্যাতনের ভয়াবহতা সে কথায় প্রমাণ করে। সরকার ধর্ষণের দন্ডবৃদ্ধি করে নিজেদের দায়সারার চেষ্টা করছে। কিন্তু শুধুমাত্র আইন করে নারী নির্যাতন রোধ করা যাবে না বরং শিক্ষা ব্যবস্থার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা, মূল্যবোধ চর্চা ও সামাজিক মূল্যবোধ সংযোজনের মাধ্যমেই ধর্ষণ সহ অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দেশের মানুষের জন্য সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি ইতোমধ্যেই গণদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। মূলত এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই এই ব্যর্থ সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে দেশে অবিলম্বে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। তিনি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।