বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব মকবুল আহমাদ দেশের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রাক্তন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ওলামা-মাশায়েখ, ব্যবসায়ী ও কৃষিবিদসহ বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে আজ ০৯ জুলাই ২০১৪ তারিখ বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকার হোটেল সোনারগাঁও-এর গ্র্যান্ড বলরুমে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন।
এই ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
প্রধান অতিথি বেগম খালেদা জিয়া বলেন, সরকার দেশকে ধ্বংস করছে। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দেলন করতে হবে। ঈদের পরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। ঈদের পরে আন্দোলন করে সরকারকে বিদায় করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
তিনি বলেন, দেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। মানুষ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশ। দেশে চলছে খুন, হত্যা, গুম, অপহরণ। এই সংকটজনক অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করার জন্য তিনি আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আজ যাদের এখানে বসার কথা ছিল, অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে এ জালেম সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ তাদেরকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রেখেছে। গত বছর যিনি এই ইফতার মাহফিলে আমাদের সঙ্গে ইফতার করেছিলেন তিনিও আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। গভীর পরিতাপের বিষয় তার মত একজন পরিচ্ছন্ন লোকের জানাযাও সরকার সুষ্ঠুভাবে করতে দেয়নি। তার জানাযায় অশংগ্রহণ করতে যাওয়া নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে সরকার তাদের উপর জুলুম এবং নির্যাতন চালিয়েছে। যারা সরকারের জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, যারা অত্যাচারিত এবং নির্যাতিত হয়েছেন তাদের সকলের জন্য আমরা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে সর্বোত্তম পুরস্কার ‘জান্নাত’ দান করুন। আমীন।
তিনি আরো বলেন, পবিত্র রমজান কুরআন নাজিলের মাস। মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের পথনির্দেশিকা রয়েছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে। কুরআনের আলোকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলার জন্য তাকওয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে রমজানের সাওম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে। তাকওয়া শুধু মনে আল্লাহর ভয় পোষণের নাম নয়। বাস্তব জীবনে আল্লাহর ভয়ের প্রতিফলন ঘটানোই তাকওয়া।
তিনি বলেন, দেশ ও জাতি আজ এক কঠিন সংকটে নিপতিত। এই সরকার মানুষের ন্যায্য ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থার কবর রচনা করে ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করে জোর পূর্বক ক্ষমতা দখল করেছে। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। এ সরকার অবৈধ। সরকারের জুলুম, নিপীড়নে গোটা জাতি আজ অতিষ্ঠ। হত্যা, খুন, গুম, অপহরণসহ মানবাধিকার লংঘন, সংবিধান বিরোধী কর্মকান্ড সরকারের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালাচ্ছে। নারী-শিশু-পুরুষ এমনকি বৃদ্ধরা পর্যন্ত সরকারের নিপীড়ন থেকে রেহাই পায়নি। এ সরকার দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে সরকার শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তার পরিবারকে জানাযা ও দাফনে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি। আমরা এ সরকারের সকল জুলুম, নির্যাতন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “তোমাদের কী হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়বে না, যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরী করে দাও।” (সূরা আন-নিসা, আয়াত-৭৫)
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের এই বাণীকে সামনে রেখে তিনি জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
ইফতারীর পূর্ব মুহূর্তে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাাণ কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
এই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জনাব এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী জনাব আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরএ গণি, জনাব আবদুল্লাহ নোমান, জনাব নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ঢাকা মহানগরী বিএনপির সেক্রেটারী জনাব আবদুস সালাম, সাবেক মন্ত্রী মীর নাসির উদ্দিন, বিএনপি নেতা জনাব বরকত উল্লাহ বুলু, এড. মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর, বীর উত্তম, বেগম সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সেক্রেটারী শিরিন আখতার, বিএনপি নেতা জনাব মারূফ কামাল প্রমুখ, এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. ওলি আহমদ, বীর বিক্রম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যরিষ্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপার সভাপতি জনাব শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বীর প্রতীক, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জনাব জেবেল রহমান গণি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি জনাব এএইচএম কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এড. আবদুল মোবিন, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জনাব সাঈদ আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা ইসহাক, জমিয়তে ওলামা ইসলামের সভাপতি মাওলানা আবদুল মোমিন, জমিয়তে ওলামা ইসলামের প্রতিনিধি মুফতি রেজাউল করিম, বিজেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাব সালাহ উদ্দিন মতিন, খেলাফত মজলিমের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের, হেফাযতে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ইশা শাহেদী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান জনাব খন্দকার গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব সাইফুদ্দিন আহমদ মনি, বাংলাদেশ পিপলস লীগের সভাপতি এড. গরীবে নেওয়াজ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এড. নূরুল হক মজুমদার, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জোবায়দা কাদের চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফর উল্লাহ খান, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন, মাওলানা মোফাজ্জল হোসেন খান, সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এড. জয়নাল আবেদীন, এড. মিজানুর রহমান, এড. আবদুর রাজ্জাক, এড. তাজুল ইসলাম, ঢাকা বারের সভাপতি লুতফে আলম, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এড. পিএম আকবার, সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সেক্রেটারী এড. সাইদুর রহমান, কবি আল মাহমুদ ও আবদুল হাই শিকদার, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক জনাব আবুল আসাদ, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক জনাব মহিউদ্দিন আলমগীর, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি জনাব রহুল আমীন গাজী, বিশিষ্ট কলামিষ্ট ড. তারেক শামসুর রহমান, জনাব সাদেক খান, জনাব রেদওয়ান সিদ্দিকী, জনাব নূরুল আমীন, বিশিষ্ট সাংবাদিক জনাব মাহফুজ উল্লাহ, জনাব শফিক রেহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জনাব সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএফইউজের সভাপতি জনাব শওকত মাহমুদ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি জনাব আবদুশ শহীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ, ড. অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, সাবেক সচিব আনম আখতার হোসাইন, জনাব এএসএম সোলায়মান চৌধুরী, জনাব এনাম আহমদ চৌধুরী, ব্যারিষ্টার হায়দার আলী, অধ্যাপক চৌধুরী মাহমুদুল হাসান, অধ্যাপক ওমর আলী, ড. অধ্যাপক কোরবান আলী, অধ্যাপক ড. মোশারফ হোসাইন, অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সেক্রেটারী অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জনাব ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দিন, সহসভাপতি ফজলুল হক, মহাসচিব মুহাম্মদ ইকবাল, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আবদুল মজিদ খান, ড্যাবের মহাসচিব ডা. জাহিদ হোসাইন, ডা. রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী প্রমুখ।
জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা এটিএম মাসুম, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এড. জসিম উদ্দিন সরকার, জনাব মোঃ আবদুর রব, কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সহকারী সেক্রেটারী জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জনাব আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী জামায়াতের আমীর এড. এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগরী জামায়াতের আমীর এড. মোয়াজ্জেম হোসাইন হেলাল, ঢাকা মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জনাব মোবারক হোসেন প্রমুখ।