ফরমায়েসি তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯ ও ২০ নভেম্বর হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করায় সংগ্রামী দেশবাসী ও জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এবং সরকারের জুলুম-নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ২০ নভেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জালিম সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন, আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানসহ সকল রাজবন্দি ও আলেম-ওলামার মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে এবং ফরমায়েসি তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯ ও ২০ নভেম্বর জামায়াতের হরতাল কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সমর্থন এবং শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করায় আমি সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগ্রামী দেশবাসী ও জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ফরমায়েসি তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে জামায়াতসহ বিরোধীদলের ডাকা হরতালে দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে ঘোষিত তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। মুক্তিকামী জনতা তথাকথিত তফসিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। বিরোধীদলের মতামত অগ্রাহ্য করে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কমিশন মূলত বিরোধীদলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে অতীতের মত শাসকদলকে জিতিয়ে আনার কৌশল নিয়েছে। সংগ্রামী জনতা তাদের মনোবাসনা কিছুতেই পূরণ হতে দিবে না। আমরা নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলতে চাই, জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে একতরফা নির্বাচনের ফরমায়েসি তফসিল বাতিল করতে হবে। নতুবা উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির জন্য জনধিকৃত কমিশনই দায়ী থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত লেভেল প্লেইং ফিল্ড এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এমতাবস্থায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির লক্ষ্যে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের সকল শীর্ষ নেতা এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদেরকে মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশ ও মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসসহ বন্ধ সকল শাখা অফিস খুলে দিতে হবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার নাগরিকদেরকে ভোট দিতে দেয়নি। একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। দেশি-বিদেশী মহল রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আহবান জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সেদিকে কোনো ভ্রæক্ষেপই করছে না। আমরা সরকারকে বলতে চাই, গণতন্ত্র নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কিছু মেনে নেয়া হবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নাটোর জেলা জামায়াতের বাগাতিপাড়া উপজেলার আমীর মাওলানা একেএম আফজাল হোসেন, একই দিন দুপুরে রাজশাহী জেলার মন্ডুমালা পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা আনিসুর রহমানসহ ২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জামায়াতের মিছিলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে দুটি মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে পুলিশ এসে ৩ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গত ৪৮ ঘন্টায় দেশব্যাপী জামায়াতে ইসলামীর ১৪৪ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি এইসব জুলুম-নির্যাতন এবং বেআইনি গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। সেই সাথে ঘোষিত তফসিল বাতিল ও কেয়ারটেকার সরকারের দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার লক্ষ্যে পরবর্তী কর্মসূচিকে সার্বিকভাবে সফল করার জন্য আমি জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”