আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহর জানাযায় বাধা দান, দেশের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাযায় হামলা, কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশের গুলিতে ফোরকান উদ্দিনের নিহত হওয়ার ঘটনা এবং সারাদেশ থেকে দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ১৬ আগস্ট বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব আবদুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ও কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আবদুর রহমান ও মজলিসে শূরা সদস্য আশরাফুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
দেশবাসীর উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের প্রদত্ত বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ-
“প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি আপনাদের সামনে আবারো ঘোষণা করছি যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন, ইসলামী চিন্তাবিদ, কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৪ আগস্ট রাত ৮:৪০টায় ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইলাইহি রাজিন)।
বিদেশে অবস্থানরত আল্লামা সাঈদীর এক সন্তানের আসার সময়কে সামনে রেখে ঢাকায় আল্লামা সাঈদীর জানাযার সময় ১৬ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। তাঁর ইন্তিকালের সংবাদ শোনার পর হাজার হাজার তৌহিদী জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হতে থাকে। রাত যত বাড়তে থাকে জনতার উপস্থিতিও তত বৃদ্ধি পায়। এক পর্যায়ে হাসপাতাল চত্বর ও শাহবাগের আশেপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জনতার ব্যাপক ভিড় দেখে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আল্লামা সাঈদীর লাশ সরাসরি পিরোজপুর নেয়ার উদ্যোগ নেয়।
সাধারণ জনতা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সামনে শুয়ে পড়ে ঢাকায় জানাযা করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাতে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমবেত জনতার ওপর মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড, গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ হাসপাতালের অভ্যন্তরে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে হাসপাতালের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করে এবং আতঙ্কজনক পরিস্থিতির অবতারণা করে। পৃথিবীর কোনো যুদ্ধরত দেশেও হাসপাতালের অভ্যন্তরে গুলি, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের নজির নেই। পুলিশের আক্রমনে হাসপাতালে আগত রোগীদের আত্মীয়-স্বজন ও মসজিদের সাধারণ মুসল্লিগণও আহত হন। এ সময় পুলিশের হামলায় অর্ধ-শতাধিক মানুষ আহত হয়।
আল্লামা সাঈদীর নামাজে জানাযা পিরোজপুরে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় যাতে জনগণ অংশগ্রহণ করতে না পারে, সে জন্য সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আশপাশের জেলাসমূহের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। লোকজনকে আসার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত জানাযা সম্পন্নের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। প্রশাসনের বাড়াবাড়ি অগ্রাহ্য করে লক্ষ লক্ষ্য সাঈদী ভক্ত জানাযায় অংশগ্রহণ করে। প্রিয় নেতার শেষ বিদায়ে লাখো জনতা কান্নায় ভেঙে পড়ে। পৃথিবীর কোনো অমুসলিম দেশেও জানাযায় বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাযায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। বাংলাদেশর বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম মহানগরী যেখানে আল্লামা সাঈদী কয়েক যুগ ধরে কুরআনের তাফসির করে আসছেন, সেই চট্টগ্রামের ইসলাম প্রিয় জনতা ঐতিহাসিক জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদে গায়েবানা জানাযার উদ্যোগ নিলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। পুলিশের গুলিতে ২০ জনের বেশি লোক আহত হন। পুলিশ প্রায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
কক্সবাজার জেলা সদর ও চকরিয়া উপজেলায় আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাযার আয়োজন করা হলে সেখানেও পুলিশ হামলা চালায়। পুলিশের গুলিতে চকরিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফোরকান উদ্দিন নিহত হন ও বেশ কয়েক জন আহত হন।
সিলেটে স্মরণকালের ঐতিহাসিক গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। সারাদেশে বাড়িতে বাড়িতে ব্যাপকভাকে তল্লাশি চালিয়ে সাঈদী ভক্তদের হয়রানি করা হয়। গত দুই দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বগুড়া ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়। আমরা এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমরা অত্যন্ত বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি, রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দিয়ে এক ন্যক্কারজনক ঘটনার অবতারণা করেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে ১৪ আগস্টের ঘটনা যেভাবে বিকৃত করেছেন, তাতে গোটা জাতি বিস্মিত হয়েছে। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ১৬ আগস্ট জামায়াতকে গায়েবানা জানাযা করতে দেয়া হবে না। জনগণের প্রশ্ন ইসলামের বিধান জানাযা, গায়েবানা জানাযার অনুমতি দেয়ার তিনি কে? পুলিশ কমিশনারের এই রাজনৈতিক বক্তব্য জনগণ প্রত্যাখ্যান করছে।
জানাযা, গায়েবানা জানাযা, নামাজ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক ও ধর্মীয় অধিকার। এতে বাধা দেয়ার অধিকার কারো নেই এবং ইসলামের বিধান বাস্তবায়নের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। পুলিশ কমিশনার গায়েবানা জানাযার অনুমতি দেয়া হবে না মর্মে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়। পুলিশ এ বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে এবং পরোক্ষভাবে হট্টগোল তৈরি করার হুমকি দিয়েছে।
যেহেতু ১৫ আগস্ট বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের পক্ষ থেকে গায়েবানা জানাযার আয়োজন করা হয় এবং তাতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করে, তাই আজ ১৬ আগস্ট আলাদাভাবে জানাযার অনুষ্ঠান আয়োজনের কোনো প্রয়োজন নেই।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মজলুম ও নির্যাতিত। তিনি অবিচারের শিকার হয়েছেন। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সরকার দলীয় লোকদের মাধ্যমে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তাঁর বিচার একটি প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি কারাগারে থাকাবস্থায় তাঁর সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর কারাভ্যন্তরে আটক থাকাবস্থায় পরিবারের সদস্যদেরকে তাঁর সাথে যথাযথভাবে সাক্ষাত করতে দেয়া হয়নি। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর চিকিৎসার সঠিক ব্যবস্থা করা হয়নি। মাদ্রাসা ময়দানে স্থাপিত বিশেষ আদালতে মিথ্যা মামলায় হাজির করে তাঁকে হয়রানির উদ্দেশে বারবার হাজির করে হেনস্তা করা হয়েছে। অসুস্থতা সত্তে¡ও তাকে হাজিরা থেকে রেহাই দেয়া হয়নি। প্রচন্ড গরম ও শীতকালে প্রচন্ড শীতের মাঝে তিনি কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে জীবন কাটিয়েছেন।
গত ১৩ আগস্ট বুকে ব্যাথা অনুভব করলে তাঁকে গাজিপুর শহীদ তাজ উদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরিবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামার সময় তিনি হাসিমুখে উপস্থিত লোকদের সালাম দিয়ে কথা বলেছেন। সেই দৃশ্য সারা দুনিয়ার মানুষ দেখেছে। এরপর তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বড়ই পরিতাপের বিষয় তাঁর পরিবারের সদস্যগণ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বারবার কারাকর্তৃপক্ষের নিকট আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসার খবর জানতে চাইলে তাদেরকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। তারা সাক্ষাত করতে চাইলেও তাদেরকে সাক্ষাতের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসা পারিবারিক তত্ত্বাবধানে বন্দোবস্ত করার ও একজন অ্যাটেনডেন্টকে তাঁর সাথে রাখার সুযোগ দেয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা সত্তে¡ও আল্লামা সাঈদীর পরিবার কোনো সাড়া পাননি। জীবনের শেষ মুহূর্তে তাঁকে স্ত্রী এবং সন্তানদের সাথে সাক্ষাত করতে দেয়া হয়নি। এমনকি মৃত্যুর পরও তাঁর স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদেরকে তাঁর মৃত মুখ পর্যন্ত দেখতে দেয়া হয়নি। এটা শুধু মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনই নয়, অমানবিকও বটে। আমরা এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সমগ্র বিশ্বে এক নন্দিত ব্যক্তি। তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি কাবা ঘরের ভিতরে প্রবেশের সৌভাগ্য অর্জন করেন। সারা পৃথিবীতে তিনি মহাগ্রন্থ আল কুরআনের বাণী পৌঁছে দিয়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি দেশ তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত ও সম্মানিত করেছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নিজ এলাকা থেকে পরপর দুবার এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিসহ জাতীয় সংসদের বেশ কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তিনি একাধিকবার স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে তিনি কুরআনের তাফসির করেননি। বহু উপজেলায়ও তিনি কুরআনের তাফসির করেছেন। তার তাফসির শুনে হাজার হাজার যুবক আল্লাহর পথে পরিচালত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের জীবনকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করেছে। বহু অমুসলিম ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেছে। তিনি হাজার হাজার মানুষের জানাযার ইমামতি করেছেন। অথচ মৃত্যুর পর তাঁর জানাযায় জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়। পুলিশের এ ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
প্রিয় সাংবদিক বন্ধুগণ,
আমরা লক্ষ্য করছি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহ আজ তাদের পেশাদারিত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিকতার পরিবর্তে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান হলো বিচার বিভাগ। বিচারপতিগণ বিচারকের আসনে বসে অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে নিরপেক্ষ মন নিয়ে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য শপথ গ্রহণ করে থাকেন। অথচ আমরা লক্ষ্য করলাম ১৫ আগস্ট একজন বিচারপতি জামায়াতে ইসলামী ও আল্লামা সাঈদীর নাম উল্লেখ করে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সরাসরি বক্তব্য দিয়েছেন, যা তার শপথের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তিনি বিচারপতিদের জন্য প্রণীত আচরণ-বিধি লঙ্ঘন করেছেন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আল্লামা সাঈদীর ইন্তিকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণ থেকে শোক প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, হারামাইন শরিফাইনের ইমাম আবদুর রহমান সুদাইসি আল্লামা সাঈদীর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক বার্তা পাঠিয়েছেন। তুরস্কের ঐতিহাসিক ফাতিহ মসজিদে এবং আঙ্কারার প্রাণ কেন্দ্র হাজি বায়রাম ভেলি মসজিদে আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লন্ডন, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রদেশ, মক্কা-মদিনা, মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা দুনিয়ায় আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, হেফাযতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বিভিন্ন ইসলামী প্রতিষ্ঠান, ইসলামী চিন্তাবিদ, আলেম-ওলামা, দেশের বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদগণ শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। আমরা তাদের সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাযায় হামলা করে ফোরকান উদ্দিনকে শহীদ করার প্র্রতিবাদে, ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ ও সংবিধানে বর্ণিত অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতার পরিবর্তে বাধা দান, গ্রেফতার ও পুলিশের গুলিতে আহত করার প্রতিবাদে আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
১। ১৮ আগস্ট শুক্রবার দেশব্যাপী দোয়া অনুষ্ঠান
২। ২৩ আগস্ট বুধবার দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল
উপরোক্ত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের জন্য জামায়াতের সকল জনশক্তি, দেশের আপামর জনগণ ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি রেখে গিয়েছেন অসংখ্য বক্তৃতামালা, কুরআনের তাফসির, সিরাতের ওপর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা, ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে সুললিত কণ্ঠে আকর্ষণীয় উপস্থাপনা। তাঁর বক্তব্য সংরক্ষিত রয়েছে অডিও-ভিডিওসহ বিভিন্ন লেখনির মাধ্যমে। তাঁর বক্তব্যসমূহ দেশের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত, শহর, নগর, বন্দর, হাঁট-বাজার, দোকানপাট, মসজিদ-মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাঠাগার, সামাজিক প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে সর্বস্তরের মানুষকে ইসলামের সুমহান আদর্শের দিকে আকৃষ্ট করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি আল্লামা সাঈদীর ভক্ত-অনুরক্ত, শুভাকাক্সক্ষীসহ কোটি কোটি ইসলাম প্রিয় জনতার প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”