জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের বলেন, বিরোধীদলের সরকার পতনের আন্দোলনে দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্ত এবং ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে একাত্মতা ঘোষণা করছে। সরকার বিরোধী এই আন্দোলন আরও বেগবান ও জোরদার করতে হবে। ভবিষ্যতে কঠিন থেকে কঠিন কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামীলীগের জালিয়াতির নির্বাচন ঠেকানো হবে এবং সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানো হবে, ইনশাআল্লাহ।
২১ নভেম্বর মঙ্গলবার যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল আয়োজিত মাওলানা আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় জেলা মজলিসে শূরা, উপজেলা/থানা আমীর ও সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন। আরও উপস্থিত ছিলেন অঞ্চল টিম সদস্য ড. আলমগীর বিশ্বাস ও অধ্যক্ষ আলী মহসিন এবং জেলা আমীরবৃন্দ।
তিনি আরও বলেন, সারা দুনিয়া ও দেশবাসী জানে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে কোনো নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয়নি, হয়েছে নির্বাচনের নামে তামাশা। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি অবশ্যম্ভাবী। তাই যে নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ ও মতের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে, আওয়ামী লীগের এমন নির্বাচন দেয়ার প্রশ্নই আসে না। ছলে-বলে-কৌশলে ভোটারবিহীন প্রহসনের একতরফা নির্বাচনই তাদের একমাত্র অবলম্বন এবং আওয়ামী লীগ সেদিকেই অগ্রসর হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এই জালিয়াতির প্রক্রিয়া থামাতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যারা আছেন, তাদের ষড়যন্ত্রকারী সরকার ও তথাকথিত নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে অবৈধ, মিথ্যা ও প্রহসনের নির্বাচন করার কোনো সুযোগ না থাকে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আল্লাহর সাহায্যে এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগ একচেটিয়া নির্বাচন করতে পারবে না, ইনশআল্লাহ। তাই আমাদেরকে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে আল্লাহর ওপর ভরসা করে মাঠে-ময়দানে দৃঢ় ভূমিকা পালন করে কাক্সিক্ষত বিজয় অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধনবিহীন কোনো রাজনৈতিক দলের স্বনামে এবং নিজস্ব কোনো প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। তবে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সাংবিধানিক ও আইনি কোনো বাধা নেই। হাইকোর্টে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খলভাবে তার সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও জামায়াত একইভাবে তার সকল কর্মকাÐ বাস্তবায়ন করবে, ইনশা-আল্লাহ।
বিশেষ অতিথি জনাব মোবারক হোসাইন বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ এবং লেভেল প্লেইং ফিল্ড বলতে কিছুই নেই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির লক্ষ্যে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের সকল শীর্ষ নেতা এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদেরকে মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশ ও মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসসহ বন্ধ সকল শাখা অফিস খুলে দিতে হবে।
বিশেষ অতিথি আরও বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোটাধিকার হরণকারী ফ্যাসিস্ট সরকার একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আছে। দেশি-বিদেশী মহল রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আহবান জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সেদিকে কান দিচ্ছে না। আমরা সরকারকে বলতে চাই, গণতন্ত্র নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। গণতন্ত্র বিকাশে বাধা এমন কিছু মেনে নেয়া হবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।