বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেছেন, “দেশ ও জাতিকে সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার জন্য কিছু সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। জামায়াতে ইসলামী একদল সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মানুষ সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব সম্পন্ন কর্মী বাহিনী তৈরির আহ্বানে সাড়া দেয়। জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এবং জনগণের অধিকার আদায়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অতীতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে।”
৬ জুলাই শনিবার চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতেরেআয়োজনে রুকন শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ইসলাম প্রিয়। এ দেশের শতকরা ৯০ জন নাগরিক মুসলিম। এদেশ ইসলামের জন্য ঊর্বর ভূমি। তাই জামায়াতের তৈরি করা নেতৃত্ব দেশের মানুষ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনগুলোতে তাই প্রমাণিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের জনগণের ভোটাধিকার আদায়, দুর্নীতিমুক্ত এবং অসৎ নেতৃত্ব উৎখাত করে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অতীতের ন্যায় আরও বেশি ত্যাগ কোরবানি পেশ করতে হবে।”
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জান্নাত লাভের জন্য জান ও মালের কোরবানি পেশ করতে হবে। ধন-সম্পদ, জান ও মালের আসল মালিক মহান আল্লাহ তায়ালা। মানুষের নিকট তা আমানত রাখা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত্ব আমানত যথাযথ চুক্তির মাধ্যমে জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহর নিকট বিক্রি করার নামই হল বাইয়াত বা শপথ। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের জন্য জান ও মাল কোরবানির নামই হল রুকনিয়াত। এই ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যম হল জামায়াতে ইসলামী।
বাতিলের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি, একাগ্রতার সাথে নামাজ ও বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে। প্রতি রাতে আল্লাহর নিকট ধরণা দিতে হবে। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি সাহায্য চাইতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের শপথের কর্মীদের কুরআন বুঝে পড়া, আল্লাহর পথে অর্থব্যয়সহ আটটি কাজ করতে হবে। দুনিয়ার চাইতে আখেরাতকে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। আল্লাহর সাথে ওয়াদা করার পর তা ভঙ্গ করা যাবে না। ওয়াদা ও আমানত রক্ষা করতে হবে।”
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “আমাদের জীবনে পরীক্ষা, বালা-মুসিবত আসবেই। সকল সমস্যা মোকাবেলা করেই সফলকাম হতে হবে। বিপদের সময় মুনাফিকরা হারিয়ে যায়। বিজয় দেখলে এগিয়ে আসে। বিপদ মুসিবত মোকাবেলায় ধৈর্য্য ও তাওয়াককুল অবলম্বন করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উপর জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন চলবেই। আমাদেরকে ধৈর্যের সাথে সর্বোচ্চ জানমালের কোরবানি পেশ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহ তায়ালার রহমত পাওয়া যাবে।”
মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “আমাদের সর্বোত্তম সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও আনুগত্য থাকতে হবে। শত শত রক্তের বিনিময়ে আজকে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই নিয়মিত দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখা, মৌলিক বই পড়া, সর্বোপরি পরিবেশ যাতে বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আল্লাহ তায়ালা যে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা লঙ্ঘন করা যাবে না। অধিকারের উপর করা যাবে না। মেজাজের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হিংসা বিদ্বেষ পরিহার করতে হবে। আখেরাতমুখী জীবনযাপন, সর্বাবস্থায় বিনয়ী ও ভদ্র ব্যবহার, মানোন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা এবং সংগঠনের অভ্যন্তরে জান্নাতি পরিবেশ তৈরি করতে হবে। দুনিয়ার স্বার্থ ত্যাগ করে আখেরাতের কল্যাণে চিন্তা করতে হবে ।”