বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান দায়িত্ব হল জনগণের অধিকার রক্ষা করা। আওয়ামী সরকার সে দায়িত্ব পালনে শতভাগ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকারসহ সকল অধিকার হরণ করেছে। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। অধিকার হরণকারী বর্তমান জালিম সরকারকে মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণ একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জনগণ মনে করে আওয়ামী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনই সম্ভব নয়। অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার দরকার। এই দাবি আদায়ে দেশে আন্দোলন চলছে এবং রাজপথ ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনগণ ঘরে ফিরবে না। অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী পশ্চিম সাংগঠনিক জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা ও পৌরসভা আয়োজিত এবং উপজেলা আমীর হুমায়ুন আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে নেতা নির্বাচন করে। প্রত্যাশা পূরণ না হলে সমালোচনা করবে। নতুবা নতুন নেতা বা প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। এক সরকার যাবে, আরেক সরকার আসবে। এটাই গণতান্ত্রিক ধারা। কোনো গণতান্ত্রিক সরকার জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় না। অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী সরকারই কেবল জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। তারা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে। জনগণকে কথা বলতে দেয় না। বিরোধীদলের সমালোচনা সহ্য করতে রাজি নয়। তারা জনগণের ম্যান্ডেটকে ভয় পায়। তারা জনগণের সুবিধা-অসুবিধার ধার ধারে না। তারা জবাবদিহি করতে ভয় পায়। জনগণের কষ্টে তাদের কিছু যায় আসে না। এইসব অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী আচরণ বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের মধ্যে নগ্নভাবে দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করে ও অপশাসন চালিয়ে বিগত ১৫ বছরে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। শোনা যাচ্ছে সরকারের অত্যন্ত কাছের মানুষ কয়েক বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার করেছে। জালিম সরকার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বিনা বিচারে বন্দি করে রেখেছে। আদালত জামিন দিলেও তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমি ডা. শফিকুর রহমানসহ আটক সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব মোবারক হোসাইন বলেন, জুলুমবাজ সরকার বুঝতে পেরেছে, তাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। নির্বাচনে তারা জনগণের ম্যান্ডেট পাবে না। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা কেয়ারটেকার সরকারের দাবি মানতে রাজি নয়। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। নিজেদের ছকে সাজানো ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে তারা আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। জনগণ তাদেরকে আর সে সুযোগ দিবে না।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আমীর অধ্যাপক আবদুল খালেক, সহকারি সেক্রেটারি যথাক্রমে ড. ওবায়দুল্লাহ ও কামরুজ্জামান, উপজেলা সেক্রেটারিবৃন্দ এবং পৌরসভা জামায়াতের দায়িত্বশীলসহ প্রমুখ।