বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, দ্বীনকে বিজয়ী করতে হলে দাওয়াত তথা আল্লাহ তা’য়ালার বাণী মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.) অনুসৃত আদর্শের যথাযথ অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। তিনি দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য রুকনদেরকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।
তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল রুকন শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমীর মাওলানা মোহাম্মদ দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি এবিএম কামাল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার প্রমূখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রে এবং আমৃত্যু আল্লাহর গোলামী প্রত্যেক মু’মিনের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করে প্রয়োজনীয় সবকিছুই দিয়েছেন। আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে করা হয়েছে সুবিন্যস্ত। তাই প্রত্যেক মু’মিনের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য হলো নিজে সন্তষ্ট থেকে আল্লাহ তা’য়ালার সন্তষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ করা। সুরা আল ফজরের শেষ আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে সে নির্দেশনাই দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, হে প্রশান্ত আত্মা! তোমরা তোমাদের প্রভূর দিকে প্রত্যাবর্তন করো সন্তষ্টচিত্তে এবং তার সন্তষ্টি অর্জনের মাধ্যমে। এতএব তোমরা তার অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত হও এবং জান্নাতে প্রবেশ করো। মূলত, এটিই মু’মিন জীবনের প্রকৃত সাফল্য।
তিনি বলেন, মূলত, দুনিয়ার সাফল্য প্রকৃত সাফল্য নয় বরং আখেরাতের সাফল্যই প্রকৃত সাফল্য। রাসূল (সা.) যখন মানুষের মাঝে দ্বীনের হক্বের দাওয়াত দেয়া শুরু করেন তখন কম সংখ্যক মানুষে সে দাওয়াত গ্রহণ করেছিল। যা তাকে বেশ বিচলিত ও পেরেশান করতো। কিন্তু আল্লাহ তা’য়ালা তাকে এ বিষয়ে আশ^স্ত করতেন। তাই দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরকে কোন ভাবেই হতোদ্যম হলে চলবে না বরং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্বীনের বিজয়ের জন্য ময়দানে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সবোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহবান জানান।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আল্লাহ আমাদের ওপর দ্বীনে হক্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানোকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। তাই আমাদের ওপর অর্পিত এ দায়িত্ব কোন ভাবেই পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। মূলত, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে তার বিধানের যথাযথ অনুসরণ ও তা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠার মধ্যেই রয়েছে বিশ^মানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ। তিনি ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে আত্মগঠন করে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমান অবস্থায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ সুযোগ নেই বরং দ্বীনের হক্বের দাওয়াতে প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। নিজেকে ইসলামী আন্দোলনের যোগ্যতর করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই দ্বীনের বিজয় সহজতর হয়ে উঠবে।
মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে আবেগ নির্ভর হলে চলবে না বরং প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিজেদেরকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেদের দ্বীনী যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য বেশি বেশি কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন এবং তা আত্মগঠন এবং সমাজ পরিবর্তনে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, কোন বাধা-প্রতিবন্ধকতা ও জুলুম-নির্যাতনে হতোদ্দম হলে চলবে না বরং যেকোন প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে । গড়তে হবে মিথ্যা বিবর্জিত শান্তি, প্রগতি ও সত্যাশ্রয়ী বিশ^। তিনি সেই স্বপ্নের বিশ^ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।