২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার

চটগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের বার্ষিক রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

জামায়াতের রুকনদেরকে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যেভাবে বিনয়ের মূর্ত প্রতীক ছিলেন, সেভাবে জীবন-যাপন করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বর্তমানে আমরা সাংগঠনিক, নৈতিক, সততার দিক দিয়ে বাংলাদেশেএক নম্বর দল,ভবিষ্যতে আমরা জনসমর্থন দিয়ে এক নম্বর দলে পরিণত হব ইনশাল্লাহ,তিনি আরো বলেন জামায়াতের সদস্য হওয়ার পর সদস্যের মর্যাদা রক্ষা, সদস্য পদের মানঅবনতি রোধ করা এবং মানের ক্রমোন্নতির জন্য চেষ্টা-ফিকির করতে হবে। চরিত্রই ইসলামী আন্দোলনের আসল পুঁজি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমাজ বিনির্মাণ আন্দোলনে সাহাবা একরামের চরিত্রই প্রাণশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিল। আমরা যদি আমাদের অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, আন্তর্জাতিক ও পরিবার নীতিকে সাজাতে চাই তাহা হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেই নির্দেশনার আলোকে মধ্যমপন্থা অনুসরণ করে কাজ করে যেতে হবে। জামায়াতের রুকনদেরকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে বিনয়ের মূর্ত প্রতীক ছিলেন সেভাবে জীবন যাপন করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সকল প্রতিকূল অবস্থায় সত্য পথে অটল ও অবিচল থাকতে হবে। জনশক্তিরা যেন রুকনদের জীবন যাপনে সাহাবায়ে একরামের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায় সেভাবে নিজেদের কে গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আয়োজিত ‘বার্ষিক রুকন সম্মেলন’-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা আমীর অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারী জনাব আলাউদ্দিন শিকদারের সঞ্চালয়নে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক জনাব আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহছান উল্লাহ ভূঁইয়া । সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা অফিস ও প্রচার সেক্রেটারি জনাব অধ্যাপক ফজলুল করিমসহ জেলা নেতৃবৃন্দ।

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের পথ কণ্টকাকীর্ণ পথ। এই পথে চলতে হলে সকল প্রকার ঝুঁকি ও সম্ভাবনাকে মোকাবেলা করে চলতে হবে। পৃথিবীর সকল নবী রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম ও খোলাফায়ে রাশেদীনসহ দ্বীন কায়েমের সকল পর্যায়ের যুগের কর্মীরা ঝুঁকি ও সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে দ্বীনের পথে চলেছিলেন। আমরা যদি সত্যিকারের একটি সমৃদ্ধশালী, দুর্নীতিমুক্ত ও শোষণ মুক্ত সমাজ কায়েম করতে চাই তাহলে আমাদেরকেও পূর্বসূরীদের মত ত্যাগ-কুরবানীর মানসিকতা লালন করে পথ চলতে হবে।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক উপাধ্যক্ষ আব্দুর রব বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর রাসূল, খোলাফায়ে রাশদীনের ইতিহাস ঐতিহ্যের আলোকে সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। কোন একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সিদ্ধান্তে জামায়াতে ইসলামী পরিচালিত হয় না। জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পন্থায় সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনে বিশ্বাসী। স্বাধীনতার পর থেকে দেশ ও জনগণের সকল প্রকার দুর্যোগ এবং দুঃসময়ে জামায়াতে ইসলামি সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। তাই জামায়াতের সোনালী ইতিহাস- ঐতিহ্যকে ধারণ করে ভবিষ্যতের পথ রচনা করতে হবে। সকল প্রকার বিকৃতি, বিশৃঙ্খলা ও ভাঙ্গনের ব্যাপারে সর্বস্তরের সর্বোচ্চ স্তরের জনশক্তি হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন “দুনিয়ার সফলতা নয়, আখিরাতের সফলতাই আমাদের চূড়ান্ত সফলতা, যা অর্জনের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর অধ্যাপক নুরল আমিন চৌধুরী ইসলামী আন্দোলনের পথচলা অতীতে মসৃণ ছিল না এবং আগামী দিনেও হবে না। তাই সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্বীন বিজয়ের জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে শপথের কর্মীদের সর্বশক্তি নিয়োগ করার আহ্বান জানান।