একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) সংসদীয় আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসক, স্বনামধন্য সমাজসেবক, খ্যাতিমান সংগঠক, বরেণ্য রাজনীতিক, ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত সেক্রেটারি জেনারেল জননেতা ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে মনোনয়পত্র ক্রয় করা হয়েছে। আজ বেলা ২.৩০ টায় ঢাকার সেগুন বাগিচাস্থ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, এ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দীন, এ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দীন, এ্যাডভোকেট রোকন রেজা শেখ, এ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান, এ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দীন খন্দকার, এ্যাডভোকেট শাহীন আখতার, এ্যাডভোকেট মীর নূরনবী উজ্জল, এ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দীন, এ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান আজাদ, এ্যাডভোকেট জোবায়দুর রহমান বাবু, এ্যাডভোকেট আব্দুল হাই চৌধুরী, এ্যাডভোকেট কে এম জসিম উদ্দীন, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, এ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিক ও ছাত্রনেতা সালাহউদ্দীন আইয়ুবী প্রমূখ।
এ উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের আশেপাশে জমায়েত হতে থাকেন। জোহর নামাজের পর রিটার্নিং অফিস সংলগ্ন এলাকা নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। এক সময় তা উৎসব মুখর পরিবেশের রূপ নেয়। পরে ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীরা রিটানিং অফিসারের কার্যালয় ত্যাগ করেন।
জীবনালেখ্য-
জননেতা ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অনন্য নাম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নম্র, ভদ্র, সদালাপী, অমায়িক, পরোপকারী ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সকলের নিকট পরিচিত। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও পেশাগত এবং জাতীয় রাজনীতিতে তিনি সততা, যোগ্যতা, মেধা, প্রজ্ঞা ও প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। সে কারণে ১৯৮২ সালে ছাত্রাবস্থায় তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। বর্তমান অগণতান্ত্রিক ও জুলুমবাজ সরকারের আমলে তিনি বারবার হামলা-মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। জাতির এই সাহসী সন্তান ও প্রতিভাবান রাজনীতিক ১৯৫৮ সালের ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মো. আবরু মিয়া ও মাতা মরহুমা খাতিবুন নেছা। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
তিনি ১৯৭৪ সালে স্থানীয় বরামচল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৬ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৮৩ সালে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি চিকিৎসার পাশাপাশি রাজনীতিতে অংশ নিয়ে আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৮৫ সালের ৫ জানুয়ারি তিনি ডা. আমিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্ত্রী ৮ম জাতীয় সংসদের সদস্যা ছিলেন। তার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। প্রথম মেয়ে এফসিপিএস (কার্ডিওলজি) অধ্যয়নরত এবং একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেজিষ্টার হিসেবে কর্মরত। অপর মেয়ে এমবিবিএস। তিনি একটি মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকতা করছেন। একমাত্র ছেলে এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
জননেতা ডা. শফিকুর রহমান বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে জাসদের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৭৭ সালে তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে এদেশের জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। তিনি সিলেট মেডিক্যাল কলেজ সভাপতি ও সিলেট শহর শাখা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্র জীবন শেষ করে ১৯৮৪ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পন করেন এবং সিলেট শহর, জেলা ও মহানগর আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। জননেতা ডা. শফিকুর রহমান ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল, ২০১১ সালে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০১৬ সালে সেক্রেটারী জেনারেল হিসাবে নিযুক্ত হয়ে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
জননেতা ডা. শফিকুর রহমান শুধু একজন প্রখ্যাত রাজনীতিকই নন বরং তিনি একজন খ্যতিমান সমাজ সেবক বলিষ্ঠ সংগঠক ও সফল উদ্যোক্তা। তিনি একটি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ডা. শফিকুর রহমান অনেক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ম্যানিজিং কমিটি/গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। একাধিক এতিমখানা, দাতব্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন মসজিদ, ক্লাব, ছাত্রাবস্থায় স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী ক্লাব ”পাল্স” এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি হিসাবে দায়িত্বপালন করেন। এছাড়াও একাধিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে আসছেন।
তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর আজীবন সদস্য এবং সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সম্মানিত সদস্য। তিনি পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য সৌদি আরব ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা সেমিনারে যোগদানের জন্য যুক্তরাজ্য, জার্মানী, ইতালি, স্পেন, গ্রীস, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। অবসরে বই পড়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও জাতি বিষয়ে অনুসন্ধিৎসা তার অত্যন্ত প্রিয় কাজ।